বনলতা সাহিত্য পরিষদের সাথে নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার আলোচনা সভা


নারীগ্রন্থ প্রবর্তনায় আজ ১৪-১১-২০১৭ বনলতা সাহিত্য পরিষদের সদস্যদের সংগে নারীগন্থের নির্বাহী পরিষদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার পক্ষ থেকে সাইদা আখতার কুমকুম সবাইকে স্বাগত জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বনলতা সহ সভাপতি ও নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার নির্বাহী সদস্য সুফিয়া রহমান স্বাগত বক্তব্যে বনলতা সাহিত্য পরিষদের আত্মপ্রকাশ, বনলতা ত্রৈমাসিক পত্রিকার প্রকাশনা পরিষদের কার্যক্রমের বিবরণী তুলে ধরেন। তিনি বলেন বনলতা পরিষদ ১৯৯১ সালে রাজশাহীতে নাসরিন রহমানের প্রচেষ্টায় তার বাড়িতে শুরু হয়।

বনলতা পরিষদের বর্তমান সভাপতি মাসুমা আলম বলেন, নারী লেখকদের লেখা পুরুষ পত্রিকার সম্পাদকগণ উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখেন। এই দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন হওয়া দরকার। বইমেলায় নারী লেখকদের জন্য আরো ভাল স্থানে ষ্টল বরাদ্দের ব্যবস্থাা করা প্রয়োজন।

সেতারা প্রধান বই প্রকাশের ক্ষেত্রে নারী লেখকদের জন্য আরো সুযোগ প্রদানের আশা ব্যক্ত করেন।

নারীগ্রন্থের নির্বাহী সদস্য তাহমিনা হাবীব তাদের লেখার ক্ষেত্রে নারীগ্রন্থের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

লেখিকা শিরিন রহমান বইমেলায় নারী লেখকদের জন্য আরো সুযোগ চান। বনলতার সদস্য শাহিদা মসলিস বেগম রোকেয়ার প্রদশিত পথে এগিয়ে নারী লেখকরা এগিয়ে যাবেন ও আলোকিত হবেন এ আশা ব্যক্ত করেন।

বনলতার সদস্য দিলারা আখতার নি¤œবিত্ত পরিবারের সদস্যদের অবক্ষয় থেকে রক্ষা করার জন্য লেখিকাদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

সাইদা আখতার কুমকুম নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা তামাকের ক্ষতিকর দিক বিষয়ে প্রচারনায় নারীগ্রন্থের কার্যক্রমে লেখিকাদের শরীক হওয়ার আহ্বান জানান।

ফরিদা আখতার, নির্বাহী পরিচালক উবিনীগ সকলের মতামত শুনে মনে হচ্ছে আমাদের সর্বাগ্রে পাঠক তৈরি করা প্রয়োজন। নারীবাদী না হয়েও নারী বিষয়ে লেখা যায়। বেগম রোকেয়ার নারী মুক্তির কথা বললেও কিন্তু কৌশলের মাধ্যমে বলেছেন। নারী উন্নয়নের জন্য লেখালেখির মাধ্যমে সমাজ উন্নয়নের চেষ্টা চালাতে হবে। নারীর লেখা পত্রিকায় প্রকাশের জন্য নারীদের সমালোচনা সহ্য করে এগিয়ে যেতে হবে। ফরিদা আখতার রুশ বিপ্লবের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন রাশিয়ায় জারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে রুশ নারীরা সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহন করেন এবং সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনেক রুশ লেখিকা তাদের লেখনীর মাধ্যমে সমাজের কাছে বিপ্লবের মর্মবানী তুলে ধরেন। প্রসঙ্গ ক্রমে বাংলাদেশের নারী লেখিকাদের বেগম সম্পাদিকা নূরজাহান বেগমের অবদান তাদের লেখায় তুলে ধরতে অনুরোধ জানান। তিনি আক্ষেপ করে বলেন নূরজাহান বেগমের জন্ম ও মৃত্যু দিবস অতিক্রান্ত হয়ে গেল কিন্তু নারী সংগঠন গুলোর তৎপরতা দেখা গেল না।

বনলতা সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত বনলতা ত্রৈমাসিক পত্রিকাটি ২৬ বছর যাবৎ প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে এ জন্য তিনি সংগঠনের সদস্যদের সাধুবাদ জানান। এটি নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসার কাজ বলে উল্লেখ করেন। পরিশেষে সভায় নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার পক্ষ থেকে বনলতা সাহিত্য পরিষদেকে আগামি ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়ার জন্ম দিবসে বেগম রোকেয়া ও নূরজাহান বেগম স্মরণে যৌথভাবে স্মরণসভা ও আলোচনা সভার আয়োজনের প্রস্তাব করেন।

বনলতা সাহিত্য পরিষদ

সভায় অংশগ্রহনকারী সদস্যবৃন্দ এ প্রস্তাব সানন্দে গহণ করেন। অনুষ্ঠানে বনলতা সহিত্য পরিষদ ও প্রবর্তনার নির্বাহী সদস্যগন বাংলাদেশের নারী সমাজের এগিয়ে যাওয়ার পথে বিভিন্ন অন্তরায় সম্বন্ধে আলোকপাত করেন এবং নারী লেখকরা সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে লেখার মাধ্যমে সমাজকে সচেতন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বনলতার পক্ষ থেকে সুফিয়া রহমান সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সভা সমাপ্তি ঘোষণা করেন। চা চক্রের মাধ্যমে আজকের অনুষ্ঠান সমাপ্তি হয়।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।