নিরাপদ খাদ্য পাওয়া আমাদের অধিকার


টাঙ্গাইল জেলার দেলদয়ার উপজেলাকে নিরাপদ খাদ্য উপজেলা হিসাবে গড়ে তোলার জন্য উপজেলা পরিষদ ও উবিনীগ নয়াকৃষি আন্দোলনের পক্ষ থেকে “নিরাপদ খাদ্য পাওয়া আমাদের অধিকার” এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জাঙ্গালিয়া, দুল্লা, রুপসী, পাথরাইল সহ বিভিন্ন গ্রামে সার বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করণের উপর প্রচার শেষে রুপসী হাটে গানের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্যের প্রচার করেন। গানের কথা-

প্রথম গানঃ

শোন ওরে ভাই আর বোন
নিরাপদ খাদ্য খাইয়া বাঁচাও এ জীবন

দ্বিতীয় গানঃ

দেলদুয়ারে শুরু হবে নিরাপদ খাদ্যের মেলা
খাদ্যের মেলা মন উজালা
থাকবে নারে মনভোলা

এরপর এলাকার নয়াকৃষির বিভিন্ন কৃষক বক্তব্য প্রদান করেন। নিরাপদ খাদ্যের উপর ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেন উবিনীগের সমন্বক রবিউল ইসলাম চুন্নু। সহযোগিতায় ছিলেন উবিনীগের কর্মী মোঃ রজব আলী। নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে নয়াকৃষির কৃষক মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, আমরা কৃষকরা সার-বিষ ছাড়া ফসল ফলাই। আপনারা নিজেরা সবজী তৈরী করে খাবেন। হাট-বাজারে খোলা খাবারে অনেক ভেজাল থাকে। দোকানের প্যাকেট খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আমরা নিজে সচেতন না হলে নিরাপদ থাকতে পারব না। নয়াকৃষির কৃষক মাইনউদ্দিন বলেন, আমি নয়াকৃষি আন্দোলনের একজন কৃষক। আমি বিষমুক্ত খাদ্য নিজে উৎপাদন করি এবং অন্য কৃষকদেরও পরামর্শ দেই। বিষমুক্ত খাদ্য মানে নিরাপদ খাদ্য, সার-বিষ ছাড়া চাষাবাদ করা, খোলা খাবার না খাওয়া, হাইব্রীড বীজ ব্যবহার না করা, ফর্মালিন ব্যবহার না করা। সার-বিষ ছাড়া যে কোন ফসল উৎপাদন করা আমাদের উদ্দেশ্য। জাঙ্গালিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ ফরহাদ আলী খান বলেন, আমি ধানসহ বিভিন্ন জাতের সবজী আবাদ করি। এসব ফসলে আমি গরুর গোবর, ছাই, খৈল ব্যবহার করি। আগের মত বিলে, ডোবায় মাছ পাওয়া যায় না। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য আমাদের সবাইকে সজাগ হওয়া অত্যন্ত জরুরী। কারণ আমরা ভাল থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভাল থাকবে। হাটের মধ্যে একজন ভোক্তা বলেন, বাজারের খোলা খাবার অনেকে কেনে। দেখাদেখি মাঝে মাঝে আমিও কিনি। কিন্তু এই খাদ্যের ক্ষতিকর বিষয় আমি কখনো চিন্তা করি নাই। এখন থেকে সচেতন হবো। গান পরিবেশনের পরে কৃষক নবকুমার বলেন, নিরাপদ খাদ্য আমাদের সবার অধিকার। শরীর সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ খাদ্য পয়োজন। আমরা নয়াকৃষির কৃষকরা সার-বিষ ছাড়া ফসল ফলাই আপনারাও সার-বিষ ব্যবহার থেকে দুরে থাকেন। কারণ সার-বিষে ফসলে সব গুণ নষ্ট করে খাদ্যকে অনিরাপদ করে। তাই বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করুন। বাজারের খোলা খাবার থেকে বিরত থাকুন। নিরাপদ খাদ্য খেলে আমরা সকলে সুস্থ থাকব। কৃষক আফছার আলী বলেন, আমি আফছার আলী আমার বয়স ৭০ বছরের বেশি। আমি এখনও খালি চোখে সবকিছু দেখতে পাই। একমাত্র নিরাপদ খাদ্য খেলেই বেশিদিন সুস্থভাবে বাঁচা সম্ভব। তাই আপনারা সকলে ভেজালম্ক্তু নিরাপদ ফসল উৎপাদন করেন সুস্থ থাকেন। বাজারের খোলা খাবার খাবেন না। আমাদের দেলদুয়ার উপজেলাকে আমরা বিষমুক্ত করতে চাই।


safe food


কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, পরিবার থেকে সচেতনতা শুরু করতে হবে। যারা সমাজে নেতৃস্থানীয় তাদের এগিয়ে আসতে হবে। গ্রামের চেয়ারম্যান মাতব্বর সবাইকে এই ব্যাপারে কাজ করতে হবে। ভেজাল ব্যবসায়ীরা সচেতন না হলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে।

কৃষক কবির মিয়া বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে সচেতনতা তৈরী করতে হবে। উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত সকলকে সচেতন হতে হবে। নিজেদের সুস্থ থাকার সাথে সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ খাদ্য তৈরী করতে হবে।

কৃষক আলম খান বলেন, দেলদুয়ার নিরাপদ খাদ্য উপজেলা ঘোষনার সাথে নিয়মিত কাজ করতে হবে। আমাদের সকলকে মিলে করতে হবে। এখন মানুষ এখন ৩ বেলা খেতে পারছে কিন্তু নিরাপদ খাদ্যে খাদ্য খাচ্ছে কিনা তার বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। নিরাপদ খাদ্য কিভাবে করতে হবে জেনে করতে হবে।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।