ফলমূল ও শাকসবজিতে ফরমালিন প্রয়োগ বিষয়ে ভিভ্রান্তি দূরীকরনে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের গণবিজ্ঞপ্তি


ফলমূল ও শাকসবজি সংরক্ষনে বা টাটকা ও সতেজ রাখতে ফরমালিন ব্যবহার করা হয় মর্মে জনমনে কিছু বিভ্রান্তির সঞ্চার হয়েছে। ফলে ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহণে ভোক্তাদের মাঝে এক ধরনের ভীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ বিষয়ে সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ফলমূল ও শাকসবজি হচ্ছে তন্ত (ফাইবার জাতীয় খাবার যেখানে প্রোটিনের উপস্থিতি অত্যন্ত কম। ফরমালিন হচ্ছে ৩৭% ফরমালডিহাইডের জলীয় দ্রবণ এবং অতি উদ্বায়ী একটি রাসায়নিক যৌগ যা মূলত: প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারে সাথে বিক্রিয়া করে। তাই ফলমূল বা শাকসবজিতে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় (গড়ে ৩-৬০ মিলিগ্রাম/কেজি মাত্রায়) ফরমালডিহাইড থাকে যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।

এ বিষয়ে সম্প্রতি FAO-এর সহযোগিতায় পরিচালিত গবেষণালব্ধ ফলাফলে দেখা যায় যে, দেশের ফলমূল, শাকসবজিসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যে ফরমালডিহাইডের উপস্থিতি স্ব স্ব খাদ্যপণ্যের প্রাকৃতিক মাত্রার মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী গড়ে যে পরিমাণ ফরমালডিহাইড দৈনিক খাবার থেকে গ্রহণ করে, তা সবোর্চ্চ সহনীয় মাত্রায় চেয়ে অনেক কম।

বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফলমূলের সংরক্ষণকাল স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বাড়ানো যায়, যেমন আপেল সংরক্ষনে আপেলের গায়ে খাওয়ার যোগ্য মোমের পাতলা প্রলেপ দেওয়া হয় যা আপেলের শ্বসন প্রক্রিয়া ও জলীয় অংশ হ্রাস রোধ করে এবং অনূজীবের আক্রমন থেকে রক্ষা করে আপেলকে দীর্ঘদিন সতেজ ও চকচকে রাখে।

তথাপি ফলমূল ও শাকসবজি কাঁচা বা রান্না করার পূর্বে বাহ্যিক ও অনূজৈবিক দূষক হ্রাস করার জন্য নিরাপদ পানি দিয়ে ধুয়ে খাওয়ার বা রান্না করা পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। রোগ প্রতিরোধকারী খাবার হিসাবে ফলমূল ও শাকসবজি প্রাত্যহিক খাবার তালিকায় থাকা অপরিহার্য। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যবক্তির প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য অন্যান্য খাবারের সাথে কমপক্ষে ১০০ গ্রাম শাক, ২০০ গ্রাম অন্যান্য সবজি ও ১০০ গ্রাম ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরী।

কর্তৃপক্ষ জনসাধারণের অবগতির জন্য আরো জানাচ্ছে যে, যদি কেউ ফরমালিনসহ অন্য যে কোন অননুমোদিত রাসায়নিক দ্রব্য ফলমূল, শাকসবজিসহ অন্যান্য খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহার করে, সেক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩-এ কঠোর শাস্তির (৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ২০ লাক্ষ টাকা জরিমানা অথাবা উভয়দণ্ড) বিধান রয়েছে। এছাড়াও ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৫ অনুযায়ী ফরমালিনের যে কোন অননুমোদিত ব্যবহার শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বিজ্ঞপ্তি-টি যুগান্তর ২৯ মে ২০১৭, (পেজ ২০ ) থেকে নেওয়া হয়েছে: বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

 


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।