দেলদুয়ার নিরাপদ খাদ্য উপজেলা: উপজেলা পরিষদের উদ্যোগ ও কার্যক্রম


নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবায়নে উপজেলা পরিষদের কার্য়ক্রম ও ভুমিকাঃ উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ও উবিনীগের সহযোগিতায় ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে দেলদুযার নিরাপদ খাদ্য উপজেলা ঘোষনা হওয়ার পর থেকেই উপজেলা পরিষদের আহব্বানে এর সহযোগী ১৭ টি সরকারী বিভাগ নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবায়নের জন্য স্ব-স্ব ক্ষেত্রে তাদের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রচার প্রচারনা ও কর্মসূচী পালন করছে।পাশাপাশি উবিনীগ ও নয়াকৃষি আন্দোলন দেলদুয়ার নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবায়নে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে।

নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবায়নে দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদের নিয়মিত কার্যক্রম:

সরকারী ও বে-সরকারী বিভিন্ন সভা সমাবেশে, উপজেলা প্রসাশন ও উপজেলা পরিষদ আয়োজিত মেলা ও বিভিন্ন দিবসে দেলদুয়ার নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবায়নের জন্য জনমত তৈরী ও এর গুরুত্ব তুলে ধরছেন উপজেলা পরিষদ। উপজেলা পরিষদের আওতাধীন হাট-বাজারের হোটেল ও পথ খাবার বিক্রেতারা নিরাপদ খাদ্য বিক্রি করছে কিনা বাজারের বনিক সমিতির মাধ্যমে তা তদারকি করছেন। উপজেলার আটটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ হাট বাজারে ঢোল পিটিয়ে ভেজাল খাদ্য বিক্রি ও উৎপাদনে সবাইকে নিরুৎসাহিত করছেন এবং নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবায়নের জন্য আহব্বান করছেন।

উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলার সংশিলিষ্ট বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ ও এন জি ও প্রতিনিধিরা নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে অগ্রগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করছেন। এ ছাড়াও উপজেলা খাদ্য পরিদর্শকগণ উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন হোটেল, খাবারের দোকান, পথ খাবার, মাছ, মাংস, সব্জী দোকানে ভেজাল বিরোধী বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা ও পর্যবেক্ষন করছেন। মৌসুম ভিত্তিক অনেক ফলমুল বাইরে থেকে এ উপজেলায় প্রবেশ করে যেমন আম, কলা, আনারস, কমলা, আপেল সহ নানা রকম ফলমূলে ক্ষতিকর কোন রাসায়নিক দ্রব্য আছে কিনা নিয়মিত তা মনিটরিং করা হচ্ছে।

উপজেলা পরিষদের সাথে সমন্বয় রেখে মাঠ পর্যায়ে বিষমুক্ত সব্জী ও ফসল উৎপাদনে বিশেষভাবে কাজ করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। উপজেলায় কৃষকদের ৩৫ টি আই পি এম ক্লাবের মাধ্যমে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে যা নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবায়নে সহায়ক ভুমিকা রাখছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস তাদের প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে এ্যসেম্বলীতে নিরাপদ খাদ্য ও ব্যাক্তিগত পরিস্কার পরিছন্নতা সম্পকে ধারনা দিচ্ছেন। বিদ্যালয়ের আশে পাশে পথখাবার বিক্রির উপরে বিশেষ নজর রাখছেন। বিদ্যালয় গুলোর বাথরুমে সাবান ও পরিস্কার পরিছন্নতা রাখা হচ্ছে। মাসিক মায়েদের সভায় নিরাপদ খাদ্য নিয়ে আলোচনা ও তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় নিরাপদ সব্জী উৎপাদন এবং পরিবারের সদস্যদের খাবার কিভাবে নিরাপদ রাখা যায় এ বিষয়ে আলোচনা করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মী দ্বারা প্রত্যেক গ্রামে মায়েদের সাথে নিরাপদ খাদ্য নিযে আলোচনা করে যাচ্ছেন। গর্ভবতী মায়েদের পুষ্ঠির চাহিদা পুরনের জন্য বাড়ির পালানে ফলমূল ও শাকসব্জী উৎপাদনে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে তাদের বিশেষ ধারনা দেওযা হচ্ছে এবং নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবায়নে তারার বিশেষ ভুমিকা রাখছেন। উপজেলা মৎস্য ও পশু সম্পদ অধিদপ্তর থেকে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগী ও মৎস্য চাষীদের নিয়ে নিয়মিত সভা করছেন। মাছ ও মাংসের অধিকাংশ চাহিদা এই উপজেলার চাষীদের কাছ থেকে যোগান দেওয়া হয়। গরু মোটাতাজা করনের জন্য হরমোন জাতীয় ইনজেকশন না দেওয়া, মুরগী উৎপাদনে এন্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার না করা ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা এবং নিরাপদ মাংস উৎপাদনে সর্বাত্বক সহযোগিতা করা হচ্ছে। একই ভাবে মাছ চাষীদের নিয়ে মাছ চাষে পুকুরে মাছের দ্রত বৃদ্ধির জন্য হরমোন ও ভিটামিন জাতীয় খাবার ও ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা এবং নিরাপদ মাছ চাষে মৎস্য অধিদপ্তর নিযমিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

উবিনীগ ও নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষকরা নযাকৃষি ১০ নীতি অুনুশীলনে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করছেন। নয়াকৃষি চাষীদের উৎপাদিত নিরাপদ খাদ্য সামগ্রী বিক্রির জন্য হাট বাজারে আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য বিক্রির জন্য দুইটি বিক্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।


দেলদুয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান


উপজেলা চেযারম্যান জনাব এস এম ফেরদৌস আহম্মেদ বলেন - উপজেলার সব গুলো বিভাগ যাদের মাঠ পর্যায়ে জনবল রযেছে তারা সরাসরি এ কাজে অংশ গ্রহন করছেন আর যাদের জনবল কম তারা অফিস আদালতে ও বিভিন্ন ফোরামে নিরাপদ খাদ্য নিয়ে আলাপ আলোচনা করছেন। সবাই খুব আন্তরিকতার সাথে এই উপজেলাকে নিরাপদ খাদ্য উপজেলা বাস্তবাযনের জন্য কাজ করছে। আমরা অনেক দুর এগিয়েছি এ বিষয়ে আরো অনেক কাজ করতে হবে। এটা কারো একার বিষয় না এখানে সবার স্বার্থ জড়িত। সারা দেশে যে ভাবে ভেজাল খাদ্য উৎপাদন শুরু হযেছে তা মহামারী আকারে ধারন করেছে, এখনই আমাদের এর লাগাম টানতে হবে নইলে আমাদের পরবর্তী জেনারেশন মারাত্বক হুমকির মধ্যে পড়বে।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।