সরকারী হাসপাতালে ইউজার ফি


ঢাকা ২০ জুলাই, ২০১০: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার পরিচালিত রাষ্ট্রায়াত্ব জনগণের হাসপাতালগুলোতে ইউজার ফি বৃদ্ধি এবং এ সকল অর্থ চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান এবং হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা ও দারিদ্রতা ক্রমাগত বৃদ্ধি এবং জনগণের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো সরকারের অব্যাহত উদ্যোগের প্রেক্ষিতে জনগণের অর্থে পরিচালিত রাষ্ট্রীয় হাসপাতালগুলোতে ইউজার ফি বৃদ্ধি অযৌতিক এবং অসাংবিধানিক। দেশের স্বাস্থ্য অধিকার রক্ষায় কর্যরত প্রতিটি ব্যক্তি, সংগঠন আামরা অনতিবিলম্বে এ কার্যক্রম বন্ধে সরকারকে আহবান জানাই। জনগণের হাসপাতালে ইউজার ফি গ্রহণের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিকার লংঙ্ঘনসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি হবে।  

২০ জানুয়ারী, ২০১০ জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআই পি লাউঞ্জে সকাল ১০টায় চারটি সংগঠন - স্বাস্থ্য আন্দোলন, ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, বাংলাদেশ চিকিৎসক সংসদ ও ডক্টরস্ ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট যৌথভাবে এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ডা. রশিদ -ই- মাহবুব (সাবেক সভাপতি বি এম এ),  অধ্যাপক ডা. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ (স্বাস্থ্য আন্দোলন) ডা. এম মুসতাক হোসেন ( চিকিৎসক সংসদ), ফয়জুল হাকিম (ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন), ডা. শাকিল আখতার (হেলথ হোপ হাসপাতাল), ফরিদা আখতার (যুগ্ম আহবায়ক, স্বাস্থ্য আন্দোলন), ডা. ফজলুর রহমান (বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি), এড.আদিলুর রহমান খান (সেক্রেটারি জেনারেল, অধিকার),  ডা. আ ব ম ফারুক (ফার্মাসিষ্ট), সামিয়া আফরীন (নারী পক্ষ), ফিরোজা বেগম (বাঁচতে শেখ নারী), চৈতালী ত্রিপুরা (হিল উইমেন ফেডারেশন) প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন স্বাস্থ্য আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক ফরিদা আখতার।

বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য সেবা দেয়া রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি সরকার এই দায়িত্ব উপেক্ষা করে জনগণের অর্থে পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে আগত রোগীদের সেবা প্রদানের জন্য ইউজার ফি ব্যবস্থা চালু করেছে এবং ইতিমধ্যে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে রোগীদের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকা (ইউজার ফি) সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বন্টনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইউজার ফি চালু হলে বেসরকারী হাসপাতাল আরো বেশি লাভবান হবে।

সরকারের চিকিৎসা বাজেটের একটি বড় অংশ ব্যয় বেতনভাতা ও অবকাঠামো খাতে। সিমিত সম্পদ ও লোকবল এবং অধিক রোগীর চাপে রাষ্ট্রায়াত্ব হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা খুবই নাজুক। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত আমাদের দেশে কোন সরকারি বড় হাসপাতাল তৈরি হয়নি। রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা না করে সরকারি হাসপাতালে ইউজার ফি চালু করে ভাগাভাগির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বেসরকারী খাত বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিদেশী চিকিৎসকরা আমাদের দেশে ঢুকে পড়েছে। অধিকাংশ বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা একটি রমরমা বাণিজ্য হিসেবে দেখা হয়।     অবিলম্বে উপজেলা পর্যায়ের ইউজার ফি বন্ধ করার দাবি জানানো হয়। জবাব দিহিতামূলক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত এবং স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।

লাগাতার আন্দোলন হিসাবে ’জনগণের হাসপাতালে ইউজার ফি বন্ধের দাবীতে’ আগামি ২৯ জুলাই, ২০১০ ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে সকাল ১০টায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।