বিটি বেগুন 

বিটি বেগুন (বিকৃত বেগুন) পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ভয়াবহ ঝুঁকি, নয়াকৃষি আন্দোলন ও জিএমও বিরোধী গণমোর্চা; প্রথম সংস্করণ: ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, নারীগ্রন্থ প্রকাশক।

বিটিবেগুন একটি জিএমও বা জেনেটিকালী মডিফাইড অর্গানিজম। অর্থাৎ প্রাণের গঠন-সংকেতে (Gene) বিকৃতি ঘটাতে সক্ষম এমন জেনেটিক ইঞ্জনিয়ারিং প্রযুক্তি (Genetic Engineering) ব্যবহার করে বেগুন গাছকে একটি বিষাক্ত উদ্ভিদে পরিণত করা হয়েছে। বেগুন আমাদের অতি পরিচিত সাধারণ মানুষের সব্জি। ব্যাসিলাস থুরিনজেনসিস (bacillus thuringenesis সংক্ষেপে বিটি) ব্যাকটেরিয়া থেকে ক্রিসটাল জিন বেগুনে সংযোজন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য হিশেবে বলা হয়েছে বেগুনের ফল ও কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এই বেগুনের গবেষণার কাজ আমাদের দেশের প্রয়োজনে শুরু হয় নি। ভারতের মহারাষ্ট্র হাইব্রিড বীজ কোম্পানি বহুজাতিক বীজ কোম্পানি মনসান্টোর সহায়তায় বেগুনের জিন পরিবর্তনের এ কাজটি ২০০৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি-র আর্থিক সহায়তায় বহুজাতিক বীজ কোম্পানি মনসান্টো এর ভারতীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠান মহারাষ্ট্র হাইব্রিড সিড কোম্পানির (মাহিকো) সহায়তায়। ২০০৫ সালে ভারত, বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনে এই গবেষণা পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই দেশের প্রতিষ্ঠান। তাদের বাংলাদেশের বীজ সম্পদ রক্ষা করার কথা। মূল কাজ দেশের প্রয়োজনে গবেষণায় নিয়োজিত থাকা। বিদেশের বা বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থ দেখা নয়। বিটিবেগুনের গবেষণা এই প্রতিষ্ঠানের জন্য মোটেও প্রয়োজন ছিল না। বিটি বেগুন নিয়ে গবেষকদের লেখা থেকে জানা গেছে ইতোমধ্যে বারির কেন্দ্রীয় গবেষণা খামার গাজীপুর ছাড়াও ৬টি আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র এই বিপজ্জনক গবেষণায় জড়িত (Meherunnahar and D.N.R. Paul, 2009 Introducing Genetically Modified Brinjal (Eggplant/aubergine) in Bangladesh, Bangladesh Development Research Working Paper Series, BDRWPS, No. 9, BDRC, p.13)। বিটিবেগুন প্রকল্পের অংশীদার বেশীর ভাগ বিদেশী সংস্থা যেমন ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস ফর দি একুইজিশান অব এগ্রবায়োটেক এপ্লিকেশান (ISAAA), ইউনিভার্সিটি অব ফিলিপাইন্স, লসবেনোস (UPLB), সাউথ ইস্ট এশিয়ান রিজিওনাল সেন্টার ফর গ্রাজুয়েট স্টাডি এন্ড রিসার্চ ইন এগ্রকালচার (SEARCA) এবং কয়েকটি বীজ কোম্পানী, যেমন ভারতের MAHYCO, যার সাথে বহুজাতিক কোম্পানী মনসান্তোর ২৭% অংশীদারিত্ব রয়েছে। কাজেই এই গবেষণা বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের, এই দাবি ঠিক নয় [ওয়েবসাইট দেখুন www.absp2.net]। বাংলাদেশে গাজীপুরে অবস্থিত কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ইঅজও) এই গবেষণা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএইডের বিশেষ কর্মসুচী অইঝচ ওও এর অধীনে। বিটিবেগুনের বীজ বারির গবেষকরা নিজেদের গবেষণাগারে তৈরী করেন নি। ভারতের মাহিকো কোম্পানি থেকে এনেছেন। তাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষকদের দিয়ে এর পরীক্ষা করা। অর্থাৎ বাংলাদেশের কৃষিকে ক্ষতিকর পদার্থের গবেষণার ক্ষেত্রে রূপান্তর করা এবং কৃষক ও গ্রামীণ মানুষকে গিনিপিগ হিসাবে ব্যবহার করে। এগুলো কোন বিজ্ঞানির কাজ নয়।

সূচি

 

  • জেনেটিকালী মডিফাইড অর্গানিজম কি? কেন বিরোধিতা?
  • বাংলাদেশে জেনেটিকালি মডিফাইড খাদ্য।
  • বিটিবেগুন।
  • ভারত ও ফিলিপাইনে বিটিবেগুন অনুমোদন পায় নি।
  • বিটি বেগুন চাষের অুনমোদন ও কিছু প্রশ্ন।
  • বিটিবেগুন নিয়ে নানা উকৎণ্ঠা।
  • ১. আদি উৎপত্তিস্থলে জিএমও ফসল প্রবর্তন করা যায় না।
  • ২. ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমন করতে গিয়ে গাটিকেই বিষাক্ত করে দেয় হচ্ছে।
  • ৩. স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভবনা।
  • ৪. জৈব নিরাপত্তা করে গবেষণা হয়েছে কিনা নিশ্চিত নয়।
  • ৫. অনুমোদন প্রকিয়া স্বচ্ছ নয়, তবুও কৃষক পর্যায়ে চাষের জন্য চারা বিতরণ হয়েছে
  • ৬. পরিবেশের ঝুঁকির সম্ভবনা।
  • বিটিবেগুনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।

পুরো বইটি দেখুন: বিটিবেগুন (বিকৃত বেগুন) পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ভয়াবহ ঝুঁকি

 

Back to album