জাতীয় সংসদ: নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন, ফরিদা আখতার
জাতীয় সংসদ: নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন । ফরিদা আখতার; প্রথম সংস্করণ: ২০ জানুয়ারী, ২০২৩। প্রকাশক নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা, ৬/৮ স্যার সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা ১২০৭। প্রষ্ঠা: ১০১। মূল্য: ২০০/=
নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা ১৯৮৯ সালের ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবসে প্রতিষ্ঠিত হয়। নারীদের জন্য নির্দিষ্ট এই একমাত্র জায়গা যেখানে পড়াশুনা, সভা, আড্ডা এবং নারীর সামাজিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সংগঠিত হবার ক্ষেত্র। নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা বাংলাদেশে প্রথম নারীদের দ্বারা এবং নারীদের জন্যে লেখা বইয়ের প্রকাশক; একই সাথে নারী আন্দোলনের জন্যে প্রয়োজনীয় গবেষণা এবং আন্দোলনে মাঠে থাকার কাজও নিয়মিতভাবে করবার কাজ নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা করছে। সেইসব কাজের মধ্য নারীদের বিষয় ভিত্তিক বিভিন্ন নেটওয়ার্কও গড়ে উঠেছে। নারী বিষয়ক বইপত্র পড়া, লেখালিখি ও গবেষণা ছাড়াও নারীগ্রন্থ প্রবর্তনায় নারীদের জন্য নিজেদের মত করে বইপত্র, আড্ডা দেয়া, পরস্পরকে জানার জন্যে সমাজের বিভিন্ন স্তরের নারীরা আসেন। বিশেষ ভাবে শ্রমিক নারী, কৃষক নারী, পেশাজীবি-কর্মজীবি নারী এবং সংসারে গার্হস্থ্য কাজে ব্যস্ত নারীরাও সহজে ও সাবলীল ভাবে সকলের সঙ্গে মিলিত হবার পরিবেশ রাখা হয়। বাংলাদেশের নারী আন্দোলনে নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে মহিলা মুক্তি যোদ্ধা সমাবেশ, নারী লেখিকা ও বই মেলা, বাংলা শত বছর পূর্তিতে শত নারীর সংবর্ধনা, ইত্যাদি। নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা সারাদেশে দুটি গুরুত্বপুর্ণ নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছে। একটি হচ্ছে নারী ও প্রাণবৈচিত্র নেটওয়ার্ক এবং অন্যটি হচ্ছে তামাক বিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ)। ফরিদা আখতার, নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার সভানেত্রী এবং উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক।
ভূমিকা
নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা থেকে ১৯৯৯ সালে 'সংরক্ষিত আসন: সরাসরি নির্বাচন' গবেষণা গ্রন্থটি বেরোয়। তারই ধারাবাহিকতায় 'জাতীয় সংসদ: নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন' বইটি লেখা হোল।
১৯৮৯ সালে হাজির হবার পর থেকেই নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা নারীদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করছে। নব্বইয়ের শেষের দিকে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের ইস্যুটি সামনে চলে আসে। নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা সেই সময় আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিল। বিশেষ করে নারী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা সভার আয়োজন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যা সবসময় সহজ ছিল না। এই সভায় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এসে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন।
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য নারী আন্দোলনের দাবীর মধ্যে যুক্তি ছিল। ফলে সেই যুক্তি জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে কারো পক্ষেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। সেই সব আলোচনা বিস্তারিত বর্ণনাসহ 'সংরক্ষিত আসন: সরাসরি নির্বাচন' বইটিতে ছাপা হয়েছিল। বইটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃতও হয়েছে, কিন্তু আজ পুস্তিকাটির আর কোন কপি নাই।
কিন্তু দুঃখ ও ক্ষোভের বিষয় হচ্ছে এই ২০২৩ সালে এসেও সরাসরি নির্বাচনের দাবী তুলতে হচ্ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ পর্যন্ত এসে দেখা যাচ্ছে আসন সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু সংরক্ষিত আসন এখনো সরাসরি নির্বাচনের মুখ দেখে নি। তার প্রধান কারণ সংসদে আসন দখলকারী বড় দুটি রাজনৈতিক দলের স্বার্থের সঙ্গে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন নিশ্চিত করবার দাবি সাংঘর্ষিক। ফলে বড় দলগুলোর এই ক্ষেত্রে ইচ্ছার তীব্র অভাব রয়েছে। অন্যান্য দলের রয়েছে রহস্যজনক নীরবতা। একই সাথে বলতে হয় বড় রাজনৈতিক দলের নারী সদস্যরাও দলের পুরুষ বা নেতৃস্থানীয় সদস্যদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারছেন না। তাই সহজে পাওয়া যায় এমন আসনে গিয়ে বসার চেষ্টা বা প্রতিযোগিতায় তাঁরা নিজেদের শ্রম ও মেধা খরচ করছেন।
এই একটি বিষয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ। তাদের পুরুষতান্ত্রিক আচরণ এই জায়গায় নগ্নভাবে ধরা পড়ে যায়। সংবিধান সংশোধনের অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, দ্রুততম সময়ে সংশোধনের ঘটনাও ঘটেছে, কিন্তু নারীদের আসনের বেলায় যেন মনে হয় তাঁরা তাঁদের সম্পত্তি ভাগ বাঁটোয়ারা করছেন। তাদের কলিজা ফেটে যাচ্ছে। তাই তাঁরা কোন মতেই নারী আসনের বিষয় নারীদের ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেবেন না। এই আসনগুলো দলের অধিকাংশ সদস্য বা পুরুষদের দ্বারা বা দলের প্রধান দ্বারা মনোনীত হতেই হবে। নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রশ্ন'র জাতীয় রাজনীতি পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা প্রদর্শনের নির্লজ্জ খেলা হয়ে রয়েছে।
আমরা এখনো আশা ছাড়ছি না,তাই আবারও সরাসরি নির্বাচনের দাবী তুলে ধরতে চাই। এখন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট একটু পরিবর্তন হচ্ছে। বড় দুটি দলের আধিপত্য থাকলেও তরুণ প্রজন্মের অনেক জোট ও দল গঠিত হয়েছে। এই বছর ২০২৩ সাল বাংলাদেশের রাজনীতির জন্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ বছর, কারণ ২০২৪ সালের শুরুতে দ্বাদশ সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আওয়ামী সরকারের জন্য এই নির্বাচন হতেই হবে। তারা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ক্ষমতায় থাকার জন্য একটি লোক দেখানো নির্বাচন করবে। অন্যদিকে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসার প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে গেলে পর পর তিন মেয়াদে এক নাগাড়ে ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। বিগত দুটি নির্বাচন (নবম এবং দশম সংসদ) যে প্রক্রিয়ায় হয়েছে তাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই সরকারের অধীনে যৌক্তিক কারণেই আর কোন নির্বাচন করতে ভরসা পাচ্ছে না। জনগণও ভোট দিতে পারে নি, তাই জনগণও বিশ্বাস করতে পারছে না। সবার দাবী নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের। কিন্তু এই সময় রাজনৈতিক যে ভয়ানক সংকট দাঁড়িয়েছে তাতে শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। তাই রাষ্ট্র সংস্কার, সংবিধান সংস্কার এমনকি একেবারেই নতুন করে সংবিধান রচনার প্রশ্নও সঙ্গত কারণেই উঠছে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশকে নতুন ভাবে 'গঠন' করতে হবে এটা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে মূলধারা বিরোধী দল এবং প্রগতিশীল দল এবং জোট কেউই সংবিধানে নারী আসন সংক্রান্ত পুরুষতান্ত্রিক ও অগণতান্ত্রিকপদ্ধতির বিরুদ্ধে কোন টু শব্দটি করছেন না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূখায় সংরক্ষিত আসণ সম্পর্কে কিছু বলেনি, তবে জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে নারীদের প্রাধান্য দেয়ার কথা বলেছে। এর জন্যে সাধুবাদ জানাই। এটাই আমাদের লক্ষ্য। কিন্তু সংরক্ষিত আসনের বিষয়ে কোন কথা না বলে নারী আন্দোলনের দাবীকে অগ্রাহ্য করা হয়। এমন অবস্থায় নারী সংগঠন হিশেবে আমরা আগেও ভূমিকা রেখেছি এখনও তা অব্যাহত রাখছি। তারই একটি প্রয়াস এই গ্রন্থ।
এখানে সংরক্ষিত নারী আসন সম্পর্কে বাংলাদেশের সংবিধানে কি বিধান দেয়া আছে তা তুলে ধরা হয়েছে। নারী সংগঠনের সরাসরি নির্বাচনের দাবীর ইতিহাস এবং তা নিয়ে আন্দোলন সম্পর্কে তথ্য দেবার চেষ্টা করেছি। শুরু থেকে সরাসরি নির্বাচন নিয়ে যেসব দাবী দাওয়া উঠে এসেছে তার একটি খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ও জোট সরকার এই আসন গুলো নিয়ে যা যা হয়েছে তার কাহিনী নানান লেখায় তুলে ধরা হয়েছে। তাছাড়া নারী সংগঠনগুলোর দাবী দাওয়া বিশেষ করে সম্মিলিত নারী সমাজের সংগ্রামের কথা আছে।
গণতন্ত্র ও নির্বাচন
ভোটাভুটি ও প্রতিনিধি নির্বাচনের সঙ্গে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সম্পর্ক বিতর্কিত একটি বিষয়। এই বিতর্ক আমরা বাংলাদেশে যতো তীব্রভাবে করতে পারব ততোই গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনার বিকাশ ঘটবে এবং রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে সেই তর্কবিতর্কের প্রতিফলন পড়বে। শুধু কথায় নয়, কাজেও। সেই বিতর্কে আমাদের অবস্থান পরিস্কার করছি। আমরা শুধু ভোটাভুটি বা নির্বাচনকে গণতন্ত্র বলে গণ্য করি না। কিন্তু গণতন্ত্র চর্চার জন্যে ভোট ও নির্বাচন একটি অপরিহার্য ব্যাপার। গণতন্ত্র তখনই চর্চা হয়, যখন রাষ্ট্রের ধরণ বা রূপ হিশাবে গণতন্ত্র বাস্তবে বিরাজ করে। চর্চাটা কিসের?
শুধু সংবিধানের কথাই ধরা যাক, রাষ্ট্র যার ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। সংবিধান যদি গণতান্ত্রিক না হয়, যদি কিছু গণতান্ত্রিক নীতি সংবিধান কাগজে কলমে ধারণ করে কিন্তু রাষ্ট্রের মর্মে ও কাঠামোর মধ্যে যদি তার কোন উপস্থিতি বা প্রতিফলন না ঘটে, তাহলে নির্বাচনের কোন ফায়দা নাই। সেটা গণতন্ত্রহীনতাকে ন্যায্যতা দেওয়া ও বৈধ করা। সংবিধান যদি গণতান্ত্রিক দিক থেকে স্ববিরোধী, অসম্পূর্ণ কিংবা গণতন্ত্র বিরোধী হয়- তাহলে সেই রাষ্ট্রে ভোটাভুটি বা নির্বাচন মাত্রই গণতন্ত্র এই আখ্যা দেওয়ার অর্থ জনগণকে বিভ্রান্ত করা। সংবিধান সংস্কার করে গণতন্ত্র কায়েম করা যায় না। সমাজে যারা গণতন্ত্র বিরোধী ও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের স্বার্থের দুষমন তারা একদিকে তাদের শাসন শোষণকে বৈধ করবার জন্যে এবং অন্যদিকে নিজেদের কলহ ও কোন্দলের মীমাংসা করবার তাগিদে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ক্ষমতা বৈধকরণের প্রক্রিয়া গণতন্ত্র নয়। এর সঙ্গে জনগণের গণতান্ত্রিক আকাংক্ষা ও সংগ্রামকে গুলিয়ে ফেলা যাবে না।
অন্যদিকে যাঁরা নির্বাচন মানেই মন্দ ও সাধারণ মানুষের স্বার্থের দিক থেকে অর্থহীন, অতএব তা সদাই পরিহারযোগ্য মনে করেন, আমরা তাঁদের এই তুমুল নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকেও সমর্থন করি না। ভোট দেওয়া ও নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের নিয়ম, আচার, সংস্কৃতি বা অভ্যাস গড়ে তোলাকে আমরা দরকারি কাজ বলে গণ্য করি। নির্বাচন ও প্রতিনিধি প্রেরণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েমের আন্দোলন-সংগ্রামের বিকল্প হতে পারে না। অন্যদিকে একটি প্রধান রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে অকেজো থাকা বা দূরে থাকাও কোনো কাণ্ডজ্ঞান সম্পন্ন কাজ হতে পারে না।
এই দিকগুলো শুরুতে বলে রাখছি যাতে যে কাজ আমরা হাতে নিয়েছি তার মূল্যায়নটা সঠিকভাবে হতে পারে। সংসদে জনগণের প্রতিনিধি হিশাবে আমরা নারীকে কিভাবে দেখতে চাই সেই বিষয়েই এখানে আলোচনা।
জাতীয় সংসদে নারী-পুরুষ উভয়ে যেতে পারেন জনপ্রতিনিধি হয়ে। তার জন্যে তাঁদের নির্বাচন করে জনগণের ভোট নিয়ে যেতে হয়। জনগণের ভোট নিতে হলে সরাসরি তাদের কাছে যেতে হয়, সুখ-দুঃখের সাথী হতে হয়। তাদের নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থাকে, সেই জনগোষ্ঠির ভোট নিয়ে তাঁরা সংসদে বসেন। তবেই না জনপ্রতিনিধি! এ নিয়ে কোন বাধা নাই। তবে রাজনৈতিক দলগুলোতে নারী কর্মীদের অবস্থান এতোই দূর্বল যে দল যদি কোন নারীকে সাধারণ আসনে মনোনয়ন না দেয়, তাহলে জীবনেও কোন নারী নির্বাচন করতে পারবে না। এমনটি ঘটছে দীর্ঘদিন ধরে, তাই সংবিধানে বিশেষ ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে নারী অধিকার কর্মীরা স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু নারী আন্দোলন যখন দেখলো এই আসনগুলো নারীদের জাতীয় সংসদে আসার সুবিধা করে দিচ্ছে বটে, কিন্তু তাঁর নিজের ক্ষমতা বলে কিছু থাকছে না – ফলে জনগণের প্রতিনিধি হবার সুবিধা থেকে নারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা সংসদে কেবল দলের টোকেন প্রতিনিধি হতে পারছেন আর কিছু হওয়া তাদের পক্ষে কঠিন কাজ। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের বাড়তি বোনাস হচ্ছেন। যা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের অন্তরায়।
তাই নারী আন্দোলনের দাবী আসন সংরক্ষিত যদি থাকে তা হতে হবে সরাসরি নির্বাচিত যেখানে রাজনৈতিক দলের নারী সদস্য, সমাজ কর্মী, নারী আন্দোলন কর্মী সকলেই নারীদের কথা বলার জন্যে এবং সার্বিকভাবে দেশের জন্যে কাজ করার সুযোগ পাবেন। একই সাথে এটাও বলা দরকার যে আজীবন নারী সংরক্ষিত আসনে থাকবে এটাও কাম্য নয়। নারীরা পুরুষের মতোই সাধারণ আসনে নির্বাচন করবে এটাই হচ্ছে লক্ষ্য। তাই সাধারণ আসনে নারীদের মনোনয়ন বাড়ানো কোন বিকল্প নাই।
এই বইয়ের বিভিন্ন অধ্যায়ে বিভিন্ন লেখায় সেই দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। তারপরও আরো অনেক আলোচনা বাকি থেকে যাবে জানি।
যারা এই বইটি লিখতে আমাকে সাহায্য করেছেন তাদের নাম বলতেই হয়। সীমা দাস সীমু, সাইদা আখতার কুমকুম, রোকেয়া বেগম সব সময় পাশে থেকেছেন এবং ফরহাদ মজহার অনুপ্রেরণা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। সবকিছুর পরও ভুল বিস্তর থাকতে পারে, তাই আগে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ফরিদা আখতার ১৫ জানুয়ারি ২০২৩
সূচী
ভূমিকা ৭
অধ্যায় ১: সংবিধান ও সংরক্ষিত নারী আসন ১৩
অধ্যায় দুই: নারী আন্দোলনের দাবী ১৭
সংরক্ষিত আসনে সরসরি নির্বাচনের প্রশ্নে নারী সংগঠনের দাবী ১৭
ঐক্যবদ্ধ নারী সমাজের ১৭ দফা ১৭
ঐক্যবদ্ধ নারী সমাজ ১৭
পায়রাবন্দ ঘোষণা: রোকেয়া দিবসে নারী সংগঠনের দাবী ২১
সম্মিলিত নারী সমাজের দাবী ২২ নারী সংগঠনসমূহের দাবী: ২৩
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ নারী সংগঠনগুলোর দাবী: ২৪
জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ ২৪
নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার আলোচনা সভা ২৫
তিন সভার আলোচনা থেকে কয়েকটি প্রস্তাব: ২৬
অধ্যায় তিন: পত্রপত্রিকায় যা লিখেছি ৩১
হয় সরাসরি নির্বাচন দিন, নইলে সংসদে মহিলাদের সংরক্ষিত আসন বিলোপ করুন ৩১
সংরক্ষিত আসন নিয়ে তাহলে এ কিসের খেলা চলছে? ৩৩
আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বহীনতা ৩৫
সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি জটিল হয়ে উঠছে ৩৬
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কি সংরক্ষিত আসনের গার্জেনের ভূমিকায় নেমেছে? ৩৭
সংরক্ষিত আসন নিয়ে কানাঘুষা ও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার দায়িত্ব ৪৩
সংসদ থেকে সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত হতে চলেছে ৪৮
প্রসঙ্গ সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন: এবার একটি সমাধান আসা যাক ৫২
সংসদের ফুটবল ময়দানে আইনমন্ত্রীর কালো গোল ৫৬
সংরক্ষিত আসন বিল পাস নাকি জোট সরকারের বিদায় ঘন্টা? ৫৯
সংরক্ষিত আসন নিয়ে খালেদা হাসিনার বক্তব্য ৬৪
নয়টি সংরক্ষিত আসন পেয়ে আওয়ামী লীগ চিৎপটাং ৬৬
সংরক্ষিত আসনের 'বিশেষ সুবিধা' আসলে কার? ৭০
নারীর অবমাননা ও জাতীয় সংসদে নারী সদস্যদের 'নীরবতা' ৭৪
অধ্যায় চার: নারী আসন ও মামলা ৭৯
সংসদে নারী আসন বিল ও নারী সংগঠনের মামলা ৭৯
মামলা: সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন ৮৩
মামলার রায় ৮৫
সংসদে নারী আসন নাকি বিএনপির নারী নেত্রীদের স্পোর্টস !! ৮৬
সংরক্ষিত আসন বিল: ঠেলাঠেলির ঘর, খোদায় রক্ষা কর ৯১
অস্টম সংসদে সংরক্ষিত আসনে আনুপাতিক হারে মনোনয়নের বিধান ৯৬
Back to album