ন্যায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত কৃষি খাতে নারী শ্রমিক


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নারীদের অংশগ্রহণ দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও দেশের সকল এলাকাতেই নারী শ্রমিকেরা তাদের কাজের মজুরী পাওয়ার ক্ষেত্রে এখনও বঞ্চিত। দেশের প্রায় সকল ফরমাল এবং ইনফরমাল খাত- তৈরী পোশাক শিল্প, কৃষি, গৃহ নির্মান কাজ, ইট ভাংগা, জুতা তৈরী কারখানা, রাইস মিল, সুতা তৈরী কারখানা, ওষুধ তৈরী কারখানা সহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে নারী শ্রমিকেরা। কিন্তু বাংলাদেশের পরিসংখানে তাদের অবদানের স্বীকৃতি নাই। আজ তুলো ধরছি কৃষিখাতকে শক্ত বা মজবুত করছে যে নারী শ্রমিকেরা তাদের ভূমিকার কথা-

দেশের প্রায় ৭০ভাগ ভূমিহীন নারী কৃষি কাজের সাথে জড়িত। জীবন-জীবিকার তাগিদে তারা ঘর থেকে বেড় হয়ে অংশ নিচ্ছে কৃষি কাজে। সারা বছরই তারা মৌসুম ভিত্তিক কৃষি কাজ করে উপার্জন করে টাকা। মজুরীর ক্ষেত্রে পায় পুরুষ শ্রমিকের অর্ধেক টাকা। এখনও দেখা যায় পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় নারী শ্রমিকের মজুরী প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম। পুরুষ শ্রমিক ৮ ঘন্টা কাজ করে পায় ৩০০ টাকা। সেক্ষেত্রে নারী শ্রমিক পায় ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। কোথাও কোথাও এর মূল্য সামান্যই বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ ১৫০ টাকা।

কৃষি কাজে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ার ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন জেলায় বৈষম্য দেখা যায়। এখনও দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম। তবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে এর চিত্র ভিন্ন। বিশেষ করে- রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নিলফামারী ও লালমনিরহাট।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, ২০১০ সালে কৃজিকাজে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৫৬ লক্ষ। এর মধ্যে নারী শ্রমিক ছিল প্রায় ১ কোটি ৫ লক্ষ। দশ বছরের ব্যবধানে কৃষি কাজে যুক্ত হয়েছে ৬৭ লক্ষ নারী। কৃষি কাজে নারী শ্রমিক বাড়ার প্রধান কারণ হলো পারিবারিক ভাঙ্গন, বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি।

নারীরা কৃষি শ্রমিক হিসাবে তাদের অবদান রাখছে। পুরুষের পাশাপাশি কৃষিতে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। কিন্তু মজুরীর ক্ষেত্রে রয়ে যাচ্ছে বৈষম্য। অবিলম্বে এই বৈষম্য দূর করা জরুরী।

 


Click Here To Print


Comments Must Be Less Than 5,000 Charachter