খাদ্য নিরাপদতা উন্নয়নে কোডেক্স এলিমেন্টারিয়াস কমিশনের ভূমিকা
কোডেক্স (Codex) একটি ল্যাটিন শব্দ। বাংলা অর্থ হাতে লেখা পুঁথি। এলিমেন্টারিয়াস শব্দের অর্থ খাদ্য সংক্রান্ত। জাতিসংঘ ১৯৬৩ সালে এর দুটি অঙ্গ সংগঠন তথা আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি (FAO) এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য (WHO) সংস্থার মাধ্যামে কোডেক্স এলিমেন্টারিয়াস কমিশন গঠন করে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহণ যোগ্য খাদ্য মান (Food Code) তৈরী করা। যার প্রধান দুটি লক্ষ্য হচ্ছে :
(১) ভোক্তাদের স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং
(২) খাদ্য ব্যবসার ক্ষেত্রে ন্যায় নীতি প্রতিষ্ঠা করা।
মোট ১৮৬ টি দেশ কোডেক্স এলিমেন্টারিয়াস কমিশনের সদস্য। যার জন সংখ্যা পৃথিবীর মোট জন সংখ্যার ৯৯%। এ সংস্থা খাদ্য নিরাপদতা এবং পুষ্টিমান নির্ধারণ ছাড়াও ভোক্তা সাধারনের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং খাদ্য বেচা কেনার ক্ষেত্রে ন্যায় নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য রাতি নীতি প্রণয়ন করে। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে কোডেক্স মান শুধু ব্যবসা বাণিজ্যের মান নিয়ন্ত্রন করে। কিন্ত বাস্তবে কোডেক্স জন সাধারনের খাদ্য নিারাপদতা ও পুষ্টিমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশ ১৯৭৫ সাল থেকে কোডেক্স এলিমেন্টারিয়াস কমিশন (Codex Alinentarius Conmission, CAC) এর সদস্য। বাংলাদেশ ষ্ট্যান্ডার্স এন্ড টেষ্টিং ইনস্টিটিউশন কোডেক্স এর বাংলাদেশের জাতীয় ফোকাল পায়েন্ট। কোডেক্স কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশ গ্রহণ বৃদ্ধি এবং ফলপ্রসু করার জন্য ন্যাশনাল কোডেক্স কমিটি রয়েছে। ন্যাশনাল কোডেক্স কমিটি নিম্ন উল্লেখিত দায়িত্ব পালন করে:
১. কোডেক্স এলিমেন্টারিয়াস কমিশন গৃহীত কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের খাদ্যমান প্রণয়ন, খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করণ এবং খাদ্য নিরাপদতা সাংক্রান্ত বিষয় সরকারকে পরামর্শ প্রদান করে।
২. রপ্তানিকৃত খাদ্য দ্রব্যের বাতিল রোধ করা এবং আমাদানিকৃত খাদ্য দ্রব্যের গুণগত মান ও নিরাপদতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে খাদ্য শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকারকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।
৩. জাতীয় মান সংস্থা তথা বিএসটিআইকে খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্যের মান প্রণয়নে সাঠিক সহযোগিতা/ পরামর্শ প্রদান করে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ খাদ্য সুরক্ষা, পুষ্টি নিরাপদতা ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে কোডেক্স এলিমেন্টরিয়াস কমিশনের কার্যকারিতা আরো বেশি জোড়াদার ও জনমুখি করা প্রয়োজন।