মনস্যান্টো কোম্পানির আগ্রাসনের বিরুদ্বে প্রতিবাদ সমাবেশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউটের সামনে ২৩ মে, ২০১৫ সকাল ৯:৩০ থেকে ১১:০০ ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’ এবং ‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর আহবানে বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক সমাজ, পরিবেশ ও কৃষি অধিকার বিষয়ক সংগঠনসমূহ একত্র হয়ে মনসান্টোর কৃষি আগ্রাসনের বিরুদ্বে সমাবেশ ও র্যালীর মাধ্যমে সমন্বিত প্রতিবাদ জানায়। পবার চেযারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, বাপার সাধারন সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, বিসেফ ফাউন্ডেশনের মহিদুল হক খান, বারসিকের গবেষক পাভেল পার্থ, ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, পবার সহ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম, বন বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা ড. এসপি পাল, শিশুউকের পরিচালক মো: জিল্লুর রহমান, কৃষক ইউসুফ মোল্লা, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক সারাহ জ্যানে স্যালটমারশ, ফ্রান্সের ভ্যালরি জাডট, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সুভাস হেম্ভ্রম, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষক আক্কাছ আলী প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, ‘এজেন্ট অরেঞ্জ’ নামের এক বিষাক্ত রাসায়নিকের মাধ্যমে ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের হত্যার কারণে বহুজাতিক কৃষিবাণিজ্য কোম্পানি মনস্যান্টো বিশ্বব্যাপি নিন্দিত। আজ এই কোম্পানি দুনিয়ার তাবত বীজসম্পদ, প্রাণবৈচিত্র্য, কৃষি, খাদ্য ও পরিবেশব্যবস্থা দখলের চেষ্টায় উন্মত্ত। বাংলাদেশের চাবাগান গুলোতে এই কোম্পানির ‘রাউন্ডআপ’ নামের এক বিপদজনক ‘আগাছানাশক’ ব্যবহৃতহয়। পাশাপাশি বাংলাদেশের হাইব্রিড ভূট্টা বীজের বাজারও এই কোম্পানির দখলে। জিন প্রযুক্তিগত গবেষণার নামে ‘বিটিবেগুন’ প্রকল্পের ভেতরদিয়ে এই কোম্পানি বাংলাদেশের নয়টি স্থানীয় বেগুন জাতের মালিকানা দখলও নিচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রাণবৈচিত্র্যে সমৃদ্ব দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। ৩০টি কৃষি প্রতিবেশঅঞ্চল, ১৭টি হাইড্রলজিক্যাল অঞ্চল, ২৩০টি নদ-নদী, দুনিয়ার বৃহত্তম ম্যানগ্রোভঅরণ্য, দীর্ঘতমসমুদ্র সৈকত আর প্রাণবৈচিত্র্যের বৈশিষ্ট্যময় ভান্ডার নিয়ে বাংলাদেশ এখনও দুনিয়ার বুকে গর্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দেশেরবীজসম্পদ, প্রাণবৈচিত্র্য, বাস্তুসংস্থান, পরিবেশপদ্ধতি ও স্থানীয় জ্ঞানের মালিক দেশের জনগণ। মনস্যান্টোবা কোনোবহুজাতিক কোম্পানি বা একতরফা বাণিজ্যিক আগ্রাসনের কাছে এজেন্সির কাছে কোনোভাবেই দেশের প্রাণসম্পদকে আমরা জিম্মি হতে দিতে পারিনা। তাই মনস্যান্টোসহ সকল বহুজাতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার বক্তারা আহবান জানান।
বক্তারা বলেন, বাংলাদশেে মনসান্ত সরাসরি তার ব্যবসার ফাঁদ তৈরি করছে, এবং আমাদরে দশেরে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ফসল বগেুনরে নয়টি জাতরে ওপর পটেন্টে করে সরকাররে মাধ্যমে দশেব্যাপী চাষ করাবার ব্যবস্থা করছে। যদিও এই চাষ র্ব্যথ হয়েছে এবং কৃষকদের অনেক লোকসান হয়েছে তবুও তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে এর সফলতা প্রমান করার চেষ্টা করছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছ। এই বিটি বেগুন মানুষের স্বাস্থ্য ও পরবিশেরে জন্য হুমকি তবুও মনসান্তো র্কণলে বশ্বিবদ্যিালয়, বাংলাদেশ কৃষি গবষেণা প্রতষ্ঠিানের মাধ্যমে ছদ্ধবেশে এই বাজার দখল করে নিচ্ছে। চাষরে অনুমতি দেয়ার সময় বলা হয়েছিল বিটি বেগুন বাজারে বিক্রি করতে হলে লেবেল লাগাতে হবে। কিন্তু তারা সেটা করে নি। কারণ তারা জানে এই বেগুনে ক্ষতিকর। এখন বাজারে উত্তরা, কাজলা, নয়নতারা, শিংনাথ, ঈশ্বরদী-৬, ইসালামপুরি দোহাজারীসহ যে জাতগুলো বিটি করা হয়েছে তাতে অবলিম্বে লেবলে দিতে হবে যেন ক্রেতারা তা দেখে কিনতে পারে। নইলে কোন প্রকার স্বাস্থ্য ক্ষতি হলে তা জানা যাবে না। আমাদরে দেশে শত শত জাতের বেগুন বভিন্নি জেলায় উৎপাদিত হয়। আমাদের কোন বিটি বেগুনের প্রয়োজন নেই। খাদ্য নিরাপত্তার মিথ্যে অজুহাত দেখিয়ে মনসান্তো বাংলাদেশ বিটি বেগুন উৎপাদন করে সারা বিশ্বে লক্ষ কোটি ডলাররে বাজার দখল করতে চাচ্ছে। দেশীয় বেগুনের এই ডাকাতি আমাদের রুখতইে হবে।
মনসান্তোর তৈরি রাউন্ড আপ রেডী একটি আগাছা নাশক বিষ। এই বিষ ব্যবহার করলে মূল গাছটি ছাড়া সকল প্রকার সবুজ ঘাস, অনাবাদী শাক সহ কিছুই থাকে না। মরে যায়। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় রাউন্ড আপ রেডী ক্যান্সার সৃষ্টিকারি বিষের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হয়েছে। অথচ মনসান্তো জেনেশুনে ১৯৯০ সাল থেকে র্বতমান সময় র্পযন্ত ১৬ গুন বেশী ব্যাবহার করছে। বাংলাদেশে চা বাগানে এই বিষ দির্ঘদিন ধরে ব্যবহার করছে, অথচ জনগণ এই তথ্য আনে।
নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষক আক্কাছ আলী মনসান্তোর বিরুদ্বে প্রতিবাদ ও স্থানীয় বীজ কৃষক পর্যায়ে রক্ষার সংবাদ সমন্বিত একটি গান পরিবেশন করেন।
সমাবেশ শেষে চারুকলা ইনষ্টিউট থেকে বিভিন্ন শ্লেগানসহ মনসান্তো বিরোধী একটি র্যালী টিএসসি মোড় ঘুরে চারুকলার সামনে এসে শেষ হয়।