কৃষকদের তামাক চাষে লাভ নাই
“কৃষকদের পাতা ক্ষেতিতে (তামাক চাষে) লাভ নাই” বললেন তামাক চাষী আজগর আলী।
এক কানি জমিতে তামাক চাষ করার জন্য ২০ হাজার টাকা ১ বছরের জন্য লাগিয়ত (নগদ টাকা বা চুক্তি ভিত্তিক) দিতে হয়। কিন্তু কোম্পানি আড়াই কানি জমিতে তামাক চাষ না করলে কোন লোন দিবে না। তাহলে আড়াই কানি জমির লাগিয়তেই টাকা লাগবে ৫০ হাজার।
তামাক চাষ করতে হলে সার লাগবে ৩ বস্তা। লাগবে বিষ। আবার তামাকের আগা ভাঙ্গার জন্য লাগবে পৃথক পৃথক মেডিসিন (বিষ)। বীজতলা ঢাকার জন্য লাগবে পলিথিন। পাতা স্টিকে ভরা এবং পাতা পুড়াতে লাগবে ২০ হাজার টাকা। তামাক পাতা পুড়ানোর পরে বাছাই এর জন্য টাকা লাগবে ৩ হাজার। সার, বিষ এবং লেবারের জন্য খরচ হবে ১৮ হাজর টাকার থেকে বেশী।
এত টাকা খরচ হবে কিন্তু তামাক চাষের জন্য কৃষক কেবলমাত্র লোন পাবে ৬০০০ (ছয় হাজার) টাকা। সার, বিষ, পলিথিন সব কিছুর জন্য তামাক কোম্পানী কৃষককে টাকা দেবে তামাক চাষের আগে। তামাক চাষীর নামে এই টাকা কোম্পানীর কাছে লোন হিসাবে থাকবে। লোনের টাকা কাটা হবে পাতা বিক্রির পরে।
তামাক পাতা ক্রয়ের জন্য কোম্পানির গ্রেড বা ধাপ আছে ৮টি। গতবার তামাক পাতা বিক্রয়ের রেট নির্ধারণ ছিল:-
প্রথম গ্রেড ১৫৫.০০ টাকা।
দ্বিতীয় গ্রেড ১২০-১৩০.০০ টাকা।
তৃতীয় গ্রেড ৮৪.০০ টাকা। সর্বনিম্ন গ্রেড ছিল ৭৪.০০ টাকা
আর একজন তামাক চাষী তামাক পাতা বিক্রি করে পাবে ৯০ হাজার টাকা। সব হিসাব করলে তামাক চাষে কোন লাভ নাই।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় প্রায় ৩০ বছর ধরে তামাক চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে তামাক চাষের আওতায় জমির পরিমাণ প্রায় ৫০০০ হাজার একর। ১৯৮৪ সালে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নে প্রথম তামাক চাষ শুরু হয়। কাকারায় বর্তমানে ৩টি ইউনিয়ন-কাকারা, সুরাজপুর মানিকপুর ও বমুবিলছড়ি। ১৯৯০ সালের পর থেকে তামাক চাষ সুরাজপুর মানিকপুর ও বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটে।