Link To Post :https://ubinig.org/index.php/home/printPlantDetails/2170/bangla

গন্ধভাদালী

অন্যান্য স্থানীয় নাম: গন্ধালী, পূতিগন্ধ, প্রসারণী

বৈজ্ঞানিক নাম : Paederia foetida

পরিবার : Rubiaceae

প্রধান ব্যবহার :কুড়িয়ে পাওয়া শাক

অন্যান্য ব্যবহার :খাদ্য, ওষুধি ও সৌন্দর্য বর্ধনকারী গাছ।ওষুধি গাছ, তবে গন্ধভাদালির বড়া বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত হজম ও পেটের নানাবিধ উপ্সর্গ বা পীড়ার জন্য নিয়মিত খাওয়া হয়।

আরো পড়ুন


চরক ও সুশ্রত সংহিতায় গন্ধভাদালী এর নাম প্রসারণী। এটি সংকুচিত পথকে প্রসারিত এ তার অবরোধ নিবারণ করে। যার ফলে বায়ুর স্বচ্ছন্দচারী স্বভাবে বাধা এলে তাকে সরল করে। এজন্য এর নাম প্রসারণী। গন্ধভাদালী লতানো গাছ। সাধারণত এটি অন্য গাছে বেয়ে ওঠে বা বেড়ায় দেখা যায়। এটি চেনার বিশেষ উপায় হলো এর লতা-পাতায় উৎকট গন্ধ থাকে। এজন্য এর অপর একটি নাম পূতিগন্ধ। পাতা লতার সাথে বিপরীতমূখী হয়ে গজায়। পাতা আকারে ছোট পান পাতার মতো। বর্ষাকালে এর লতা পাতা বেশী বাড়ে।

 বিস্তার: এটি বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ভুটান, কম্বোডিয়া, তাইোয়ান, চীন জাপান ও নেপালের সর্বত্র দেখা যায়। গন্ধভাদালী লতানো গাছ। বংলাদেশের সর্বত্র বনাঞ্চলে এটি প্রচুর দেখা যায়। এছাড়া বিক্ষিপ্তভাবে দেশের অন্যত্রও জন্মে।

বংশবিস্তার: সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে গাছে ফুল আসে এবং নভেম্বর – ডিসেম্বর মাসে ফল পাকে। বীজ বা লতার কাটিং এর সাহায্যে এর বংশ বিস্তার সম্ভব হলেও শিকড়সহ লতার অংশবিশেষ তুলে লাগালে চারা হয়।

গন্ধভাদালীর ওষুধি ব্যবহার:

◘ গন্ধভাদালীর প্রধান ব্যবহার আমাশয় বা পেটের অসুখে। আমাশয়ে গন্ধভাদালী পাতার রস ৩/৪ চা-চামচ একটু গরম করে ৮/১০ ফোঁটা মধু মিশিয়ে খেলে সেরে যায়। শিশুদের পেটের অসুখে, পেট ফাঁপায় গন্ধভাদালী পাতার রস দারুন কাজ দেয়।

◘ চরেক সংহিতায় উল্লেখ রয়েছে, হাত বা পায়ের শিরা সংকুচিত হলে পাতা বেটে তিল তেলের সাথে মিশিয়ে গায়ে মাখলে উপকার পাওয়া যায়।

◘ গন্ধভাদালী পাতার সসের সাথে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে খেলে ২/৪ দিনের মধ্যেই আমবাতের যন্ত্রণা লাঘব হয়। পক্ষাঘাতেও এটি ব্যবহারের বিধান আছে।

◘ শুক্রতারল্যে বা কমে গেলে দুই চা-চামচ পাতার রসের সাথে ঘন গরম দুধ মিশিয়ে খাওয়ার উপদেশ দিয়েছেন প্রাচীন বৈদ্যগোষ্ঠী।

◘ কোষ্ঠকাঠিন্যে গন্ধভাদালী পাতার রস সকালে লবনের সাথে মিশিয়ে খেলে অচিরেই সেরে যায়।

◘ ৩ গ্রাম কাঁচা হলুদ বাটার সাথে দুই চা-চামচ গন্ধভাদালী পাতার রস মিশিয়ে খেলে ২/১ দিনের মধ্যে অর্শের বলি মিলিয়ে যায়।

◘ দাঁতের ব্যথায় গন্ধভাদালি ফল খুবই উপকারী। এর ফল খেলে দাঁত কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করে এবং দাঁতের ব্যথায় হিতকর।

◘ সর্দি জ্বর হলে গন্ধভাদালির পাতার রস করে খাওয়ালে সর্দি জ্বর কমে যায়।

◘ পাতলা পায়খানা হলে গন্ধভাদালির পাতা বেটে রস করে বড়দের আধ কাপ খাওয়ানো হয় এবং ছোটদের ২ চা, চামুচ দিনে দুইবার খাওয়াত হয়।

◘ বাত হলে গন্ধভাদালি পাতার রস করে এরেন্ডা তেল মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে বাতের ব্যথা কমে যায়।

◘ পাতার জলীয় নির্যাস পাথর গলিয়ে দেয় এবং মূত্র বর্ধক হিশেবে কাজ করে।

ব্যবহার্য অংশ: পাতা

গন্ধভাদালীর রাসায়নিক উপাদান: 1. Essential oil, 2. Alkaloids, 3. Straighty chain fatty alcohol, 4. Sterols

 

সূত্র:

১। ভারতীয় বনৌষধি,----- ড.কালিদাস বিশ্বাস

২। উবিনীগ মাঠ গবেষণার তথ্য

৩। ইউজফুল প্ল্যান্ট অব বাংলাদেশ, প্রকাশনা: দি এড কমিউনিকেশন, আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম।