স্বাস্থ্যসেবার অবহেলায় রোগীর মৃত্যু: রোগীর সুরক্ষা আইনের পর্যালোচনা
ফরিদা আখতার || Sunday 15 March 2015 ||খুব বেশী দিন আগের কথা নয়। দেশে যখন সহিংসতার শিকার নানা ধরণের ‘রোগী’ নিয়ে হাসপাতালগুলো ব্যস্ত ঠিক সে সময় সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতক ও ১০ শিশু সহ ৩২ জনের মৃত্যুর ঘটনা সকলকে চমকে দিয়েছে। নয় ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে চব্বিশ ঘন্টায় এতোগুলো মৃত্যু একসাথে ঘটেছে এটা কোনমতেই স্বাভাবিক নয় বলেই বিবেচিত হয়েছে। স্বজনরা অভিযোগ করেছেন ভুল চিকিৎসা বা অবহেলায় এই মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে কোন প্রকার খোঁজ খবর ছাড়াই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন,ঠান্ডা জনিত রোগে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। সে সময় শীত কাল ছিল, ঠান্ডা তো লাগতেই পারে। কিন্তু এই মৃত্যু তো বাড়িতে বসে ঘটেনি। ঠান্ডা লাগলেও যেখানে এসে চিকিৎসা পাওয়া যাবে তেমন জায়গাতেই এই রোগীরা ছিল। তাহলে এই মৃত্যু কেন ঘটলো? তদন্ত অবশ্যই হওয়া জরুরী ছিল।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই শুরুতে অবশ্য এতো সংখ্যক মৃত্যু এক সাথে ঘটার বিষয়টি স্বাভাবিক মনে করেন নি। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় ছিল শিশুদের মৃত্যু, বিশেষ করে নবজাতকের মৃত্যু। মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে পাঁচজন নবজাতক ছিল। আগের দিন তাদের জন্ম হয়েছিল। বাকি পাঁচ শিশুর মধ্যে সর্বোচ্চ দেড় বছর বয়সী শিশু ছিল। এদের মধ্যে দুই শিশু আগে থেকেই এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। অন্য তিন শিশুকে তার আগের দিন হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালের উপ-পরিচালক জানান, ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২১ নম্বর ওয়ার্ডে দুই,২২ নম্বরে পাঁচ এবং গাইনি ওয়ার্ডে বাকি তিন শিশু মারা গেছে। এদের ছয়জন জন্ম জটিলতায়,দুই জন অপুষ্টিজনিত সংক্রমণে,একজন নিউমোনিয়ায় ও অন্য একজন ঠাণ্ডাজনিত রোগে মারা গেছে। [মানব জমিন, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫] দেশে শিশু মৃত্যু রোধের জন্যে সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা দেশে বিদেশে হচ্ছে, কিন্তু এই ধরণের ঘটনা সেই অর্জনকে ম্লান করে দেবে এতে কোন সন্দেহ নাই।
স্বজনেরা অসহায়। তারা কান্নাকাটি করেছেন। শিশুরা যদি সত্যি চিকিৎসা যা পাওয়ার তা পেয়ে মারা যেতো নিশ্চয় করো সেটা নিয়ে বলার থাকতো না। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁরা কোন না কোনভাবে অবহেলার দিক বুঝতে পেরেছেন এবং তাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগের পক্ষে যুক্তিও ছিল। তারা বলেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাতের বেলা কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পাওয়া যায় না। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রফেসর সহ সিনিয়র ডাক্তাররা উপস্থিত থাকেন। আর বাকি সময় ইন্টার্নি চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালানো হয়। একটি নবজাতক কন্যা শিশু মারা যাওয়ার পর তার মা যখন জানতে চায় কি হয়েছিল, নার্সের উত্তর ছিল “হায়াত ফুরাই গেছে’। আসলে রাতে কোন চিকিৎসক পাওয়া যায় না, তাই তারা জানবে কি করে কেন মারা গেছে। স্বজনরা অভিযোগ করেছেন দিনে চিকিৎসক ও সেবিকাদের পাওয়া গেলেও রাত আটটার পর কাউকে পাওয়া যায় না। এ সময় চিকিৎসকের খোঁজ করলেও সেবিকারা ধমক দিয়ে থামিয়ে রাখেন।
সংবাদ মাধ্যমে ব্রেকিং নিউজ হয়ে যাবার কারণে সরকার দ্রুত যা করলে সবাইকে ঠান্ডা করা যায় তাই করেছিলেন। এ ব্যাপারে তদন্তের জন্য মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ইসমাইল পাটোয়ারীকে প্রধান করে শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মনজ্জির আলী এবং আবাসিক চিকিৎসক রঞ্জন কুমার রায়কে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিলেন। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হোল। অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেয়ার কথা ছিল। যদিও সে প্রতিবেদন সংবাদ পত্রে আসতে লেগেছে ২৫শে ফেব্রুয়ারি। আরও আটদিন। রাজনৈতিক ঘটনা এতো বেশী ঘটছে যে সাধারণ ভাবে যারা এ বিষয়ে উৎকন্ঠিত ছিলেন তাঁরা প্রায় ভুলতে বসেছিলেন। কিন্তু আমরা যারা স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে কাজ করি, স্বাস্থ্য আন্দোলনের সাথে আছি, তারা অপেক্ষায় ছিলাম তদন্ত প্রতিবেদনে কী আসে। তদন্ত প্রতিবেদন এসেছে এবং শেষ পর্যন্ত যা আশংকা করা হয়েছিল তাই হয়েছে।
সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গঠন করা তদন্ত কমিটির রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলায় একদিনে ১০ জন শিশুসহ ৩২ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. আব্দুস সবুর মিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। রিপোর্টে ডাক্তার,নার্স ও সংশ্লিষ্টদের অবহেলা,হরতাল-অবরোধে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি, অব্যবস্থাপনা,রোগীদের স্থান সংকুলান না হওয়া,জনবল সঙ্কটসহ বেশকিছু কারণকে মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়েছে। তবুও ধন্যবাদ দেই যে তদন্ত প্রতিবেদনে সত্য কথাটুকু উঠে এসেছে। এটা ঠিক যে কোন ঘটনার পেছনে কারণ একাধিক থাকে, এখানেও তাই হয়েছে।
স্বজনদের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখলে বেশ কিছু সাধারণ চিত্র পাওয়া যায় যা শুধু সিলেটের ওসমানী মেডিকেলের ক্ষেত্রেই নয় অন্যান্য অনেক সরকারী বেসরকারি হাসপাতালে ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই অভিযোগ নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা দরকার এই কারণে যে ইতিমধ্যে সরকার জাতীয় স্বাস্থ্য সেবাদানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা আইন, ২০১৪ এবং রোগী সুরক্ষা আইন, ২০১৪ খসড়া অনুমোদন করেছেন এবং সংশ্লিষ্টদের মতামতও চেয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে মতামতের জন্যে দেয়া আছে। এই দুটি আইন এমনই যে একই ঘটনায় দুই ধরণের বিবেচনায় বিচার হবে।
এই আইনের আলোকে ওসমানী মেডিকেলের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে ভাল বোঝা যাবে। মারা যাওয়া ১০ শিশুর বেশির ভাগই সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেছিল।এর মধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলার মারা যাওয়া এক শিশুর স্বজন অভিযোগ করেছিলেন, রাত ১০টার পর তাঁর বোনের মেয়ে ছটফট শুরু করলে তাঁরা ওয়ার্ডে চিকিৎসক খুঁজে পান নি। শিশুটিকে দেখে যাওয়ার জন্য সেবিকাদেরও বলেছেন, কিন্তু সাড়া পাননি। ভোরে শিশুটি মারা যায়।এই ঘটনা সুস্পষ্ট অবহেলা। রোগীরা হাসপাতালে আসে রোগীর অবস্থা যখন খারাপ থাকে তখন যেন তাৎক্ষণিক সেবা পায়।আইনের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে ‘চিকিৎসা অবহেলা’ বলিতে বুঝাইবে কোন প্রকার কারণ ব্যাতিরেকে রোগীর প্রাপ্য চিকিৎসা প্রদান হইতে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যাক্তি নিজেকে বিরত রাখা যাহার দ্বারা রোগীর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সাধনের সম্ভাবনা থাকে।” আইনে আরও একটি সংজ্ঞা হচ্ছে ‘আপরাধসম অবহেলা’ বলিতে বুঝাইবে রোগীর প্রতি ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলা যাহার দ্বারা রোগীর স্থায়ী ক্ষতি সাধন বা মৃত্যু সংঘটিত হিতে পারে’ । এর বিরুদ্ধে দন্ড নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ স্বাস্থ্য সেবা দাঙ্কারী ব্যাক্তির পেশগত ও চিকিৎসা অবহেকা দ্বারা স্বাস্থ্য সেবা বা চিকিৎসা গ্রহণকারী ব্যাক্তির জীবন যদি ঝুঁকিপুর্ণ হয়, তবে তাহার বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে অনধিক তিন বৎসর কারাদন্ড বা দুই লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি আরোপ করা যাইবে”। অপরাধসম অবহেলার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে “রোগীর মৃত্যু হইলে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সেবাদানকারী ব্যাক্তি বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষথান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ড বিধির ধারা ৩০৪-ক প্রয়োগ করা যাইবে” ।
আইনটিতে রোগীর পক্ষে প্রমানের সুযোগ কোথায়? রোগীর সুরক্ষা কতখানি হোল আর অপরাধী হয়েও সাজা হওয়ার সম্ভাবনা আইনে নাই, কারণ সংজ্ঞায় ফাঁক তো আছেই, দন্ডের ফোকর অনেক বড়। অবহেলা বা অপরাধসম প্রমানের জন্য যা দরকার একজন সাধারণ রোগীর বা তাঁর স্বজনের তা থাকার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা আইন, ২০১৪ একটি ভিন্নভাবে তাদের ‘সুরক্ষা’ দিচ্ছে। এখানে সংজ্ঞায় অবহেলার একটি মাত্র ধরণ রাখা হয়েছে। বলা বয়েছে “অবহেলা” বলিতে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সেবা গ্রহণকারীর প্রতি ইচ্ছাকৃতভাবে যথাযথ দক্ষতার সহিত সেবা প্রদানে ব্যর্থতা, যাহার দ্বারা সেবা গ্রহণকারীর শারীরিক, মানসিক ক্ষতি, জীবন ঝুঁকিপুর্ণ হওয়া বা মৃত্যুর কারণ হওয়া। এই আইনের ধারা-৫ অনুযায়ী “অপরাধ” হবে “স্বাস্থ্য সেবাদান কারী ব্যক্তির প্রতি কোন সহিংস কাজ বা স্বাস্থ্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পত্তির ক্ষতিসাধন, বিনষ্ট, ধ্বংস বা উক্তরূপ সম্পত্তি অপরাধী কর্তৃক নিজ দখলে নেয়া অপরাধ বলে গন্য হইবে” এবং এই অপরাধের ধরণ ধারা – ৫ এর অধীন সংঘটিত অপরাধ ও জামিন অযোগ্য হইবে”। এখানে লক্ষণীয় হচ্ছে স্বজনদের ক্ষেত্রে অপরাধকে ফৌজদারী বানিয়ে ফেলা হয়েছে এবং জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। এই আইন অনেক চিকিৎসার অবহেলার শিকার রোগীর স্বজনকে তার ক্ষোভ প্রকাশের জন্যে জেল খাটাবে, যা কোন মতেই কাম্য নয়। দন্ড হচ্ছে ধারা-৫ এর অধীন কোন আপরাধ সংঘটিত করিয়াছে বলিয়া পরিগণিত হইলে অপরাধ করার কারণে অপরাধী অনুর্ধ তিন বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা সর্ব্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে। দেখার বিষয় হচ্ছে সেবা প্রদানকারীর অপরাধ প্রমান করতে হবে আর সেবা গ্রহণকারী বা তার স্বজনদের ক্ষেত্রে তা শুধু পরিগণিত হলেই সাজা দেয়া যাবে। এই পর্যন্ত সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতালে যতোগুলো ঘটনা ঘটেছে তার প্রত্যকটাতেই রোগীর মৃত্যু ঘটেছে, নবজাতক মারা গেছে, প্রসুতি মা মারা গেছে। এই রোগীর স্বজনেরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সময় বাড়াবাড়িও করেছেন এটাও ঠিক। কিন্তু এখন যেভাবে আইন করা হয়েছে তাতে যারা অবহেলা করছে, যাদের কারণে রোগীর মৃত্যু ঘটছে তাদের বেলায় অপরাধ প্রমাণ করতে হবে এবং জামিনযোগ্য সাজা দেয়া হচ্ছে। সেবা প্রদানকারীর ব্যাপারে যে উদারতা দেখানো হয়েছে, রোগীর ক্ষেত্রে সে উদারতা নাই। তাহলে এই আইন কি শুধু সেবা প্রদানকারীদের রক্ষার জন্যে?
স্বাস্থ্য আন্দোলন এই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে মতামত দিয়েছে যে হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা একটাই। কাজেই এখানে দোষ অনুযায়ী দুই রকম সাজা হতে পারে না। যে পক্ষই দোষী প্রমানিত হবে সাজা একই হতে হবে।
এই ধরণের আইন করা হচ্ছে এমন ঘোষনা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো পত্র-পত্রিকায় দেয়া হয় নি। ওয়েবসাইট সাধারণ নাগরিকরা দেখবেন এমন আশা করা যায় না। তাহলে মানুষ জানবে কি করে যে তাদের স্বজনদের মৃত্যু ঘটলে তারা যদি ক্ষুব্ধ্ব হয় তাহলে তাদের জেল-জরিমানা হতে পারে? অথচ স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের এই আইন সম্পর্কে জানতে পারার সুযোগ বেশী এবং তাদের ক্ষেত্রে আইনটি যথেষ্ট উদার। এমনিতেই চিকিৎসার অবহেলা, বাণিজ্যিক কারণে নানা রকম পরীক্ষা করিয়ে ডায়াগস্টিক সেন্টারের রমরমা ব্যবসা করা হচ্ছেই। সিলেটের ঘটনা ঘটেছে ওসমানী মেডিকেলে, অর্থাৎ একটি সরকারী হাসপাতালে। কিন্তু প্রাইভেট ক্লিনিক ও বড় বড় নামকরা হাসপাতালে, যেখানে অবস্থাপন্ন রোগীরাই যাচ্ছেন তাদের সঠিক চিকিৎসা পাওয়া খুব দুস্কর হয়ে পড়েছে। এখানে বড় প্রাইভেটে ক্লিনিকে যে ভুল চিকিৎসা বা ভুল ডায়গনসিস হয়েছে তা তাঁরা জানতে পারেন ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর বা ভারতের হাসপাতালে গিয়ে। এক্ষেত্রে আইনের মধ্যে কোন ইঙ্গিত নেই। ভুল ডায়াগনসিস করিয়ে হার্টের রোগ নেই অথচ রিং পরিয়ে দেয়া, ক্যান্সার হয়নি তবুও কেমো-থেরাপি শুরু করার মতো ঘটনা ঘটছে। অবস্থাপন্ন মানুষেরা রেগে গিয়ে ভাংচুর করেন না, তারা নীরবে বিদেশ গিয়ে আরো অর্থ ব্যয় করে নিজের জীবন রক্ষা করেন। এই মধ্যে যে অনেক মধ্যবিত্তরাও নিজের জমানো টাকা সব খরচ কিংবা জায়গা জমি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যান না, তা নয়। তাদের সুরক্ষার কোন আইন নেই, নেই কোন ব্যবস্থা।
ওসমানীর উদাহরণ টেনেছি কারণ তদন্ত করে অবহেলা প্রমানিত হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় ইতিমধ্যে অনেক অভিযোগ লিপিবদ্ধ্ব হয়ে গেছে। কিন্তু প্রাইভেট ক্লিনিকের অবহেলায় কোন তদন্ত হয় না, প্রমান করা তো দুরের কথা।
স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া নাগরিকের মৌলিক অধিকার, কিন্তু এই সেবা এখন বাণিজ্যিক কারণে বাণিজ্য রক্ষার জন্যে আইন দ্বারা রক্ষিত হচ্ছে, অথচ সাধারণ মানুষের সেবা পাওয়ার গ্যারান্টি দিতে কেউ এগিয়ে আসছে না।