কৃষিতে বিশ্ব ব্যাংকের নীতি কৃষকের স্বার্থ বিরোধী: জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন


উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা), বেলা (বাংলাদেশ এনভারমেন্টাল লা’এয়ার্স এসোসিয়েশন), কারিতাস বাংলাদেশ, বিএএসডি (বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট) এবং বিকেএফ (বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন) এর সম্মিলিত উদ্যোগ বাংলাদেশ এগ্রোইকোলজি প্লাটফর্ম (বিএপি) এর আয়োজনে আজ ২২ অক্টোবর ২০২৪, সকাল ১১:০০টা। বিশ্ব ব্যাংক ভবনের সামনে, আগারগাঁও, ঢাকায় মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। প্রায় ১০০ লোকের অংশগ্রহনে এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন এগ্রোইকোলজি প্লাটফর্ম (বিএপি), সুশীল সমাজ ও কৃষক প্রতিনিধি। মানববন্ধনের সার্বিক সমন্বয় ও আলোচনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাহাংগীর আলম জনি, পরিচালক, উবিনীগ।

আলোচকরা ২১-২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ওয়াশিংটন ডিসি, ইউএসএ বিশ্বব্যাংকের যে বাৎসরিক মিটিং হতে চলেছে তার প্রাক্কালে কৃষিতে বিশ্বব্যাংকের প্রণীত নীতি যা কৃষককে এবং কৃষকের বীজ ব্যবস্থা সমর্থন করছে না সে ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের এই উদ্বেগের বিষগুলো বিশ্ব ব্যাংকের সভায় পৌছে দিয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

জাহাংগীল আলম জনি, পরিচালক, উবিনিীগ বলেন, ২০২৩ সালে মারোক্কোতে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংকের বাৎসরিক মিটিং এ নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষক সেলিনা বেগম কৃষকদের বীজ রক্ষা করার জন্য একটি পত্র দিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে বাংলাদেশ এবং ইউকে থেকে ৭০,০০০ মানুষ স্বাক্ষর করেছিলেন। কৃষকের বীজ রক্ষার জন্য সেলিনা বেগমের এই চিঠির প্রেক্ষিতে বিশ্ব ব্যাংক কি উদ্যোগ গ্রহন করেছে তা আমরা জানতে চাই।

কৃষকের জীবন-জীবকা, প্রানবৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা, কৃষকের অধিকার বিশেষ করে নারী কৃষকের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নারী কৃষকের নেতৃত্বে বীজ ও প্রাণবৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনায় বিশ্ব ব্যাংক কে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহন করার দাবী জানানো হয়। বিশ্ব ব্যাংককে কমিউনিটি ভিত্তিক বীজ সম্পদ, কৃষকের বীজ উৎপাদন, এবং কৃষকের অধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

বদরুল আলম, সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন বলেন, রাসায়নিক নির্ভর হাইব্রিড, জিএমও, বালাইনাশকের প্রতি সহায়তা বন্ধ করতে হবে যা প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর কৃষি ব্যবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাংক থেকে প্রাণবৈচিত্র নির্ভর ইকোলজিক্যাল কৃষি ক্ষেত্রে সহায়তা দিতে হবে।

সনজিব কুমার মন্ডল, সিনিয়র পোগ্রাম অফিসার, কারিতাস বাংলাদেশ বলেন,বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ, পুনরুৎপাদন, বিনিময় এবং বীজ বিক্রির ক্ষেত্রে কৃষকের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব ব্যাংক থেকে সহায়তা দিতে হবে।

তৌহিদুল আলম, বাংলাদেশ এনভারমেন্টাল লা’এয়ার্স এসোসিয়েশন বলেন,কৃষকের বীজ ব্যবস্থা সহায়তার জন্য বীজ সংক্রান্ত আইনগুলি সংশোধন করতে হবে।

ড. এম এ সোবহান, সভাপতি, বীজ বিস্তার ফাউনডেশান বলেন, বিশ্বব্যাংক নীতি ব্যবস্থায় ও বীজের উপর কৃষকের অধিকারের স্বীকৃতি থাকতে হবে। মাটি ব্যবস্থাপনা, বীজ ব্যবস্থাপনা ও ভূমিতে কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।

জনগণের নিম্নোক্ত উদ্বেগগুলোর বিষয়েও বিশ্বব্যাংকের সাড়া দেওয়া দরকার।বলে বক্তারা মনে করেন।

• শর্তসাপেক্ষে ঋণ বন্ধ করতে হবে।
• জীবাশ্ম ভিত্তিক কৃষির উপর অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে।
• ১০০% নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎসাহিত করতে হবে।
• প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।

মানববন্ধন ও আলোচনা শেষে বাংলাদেশ এ্গ্রোইকোলজি প্লাটফর্ম (বিএপি) এর পক্ষ থেকে স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ প্রতিনিধি, মেহরিন মাহবুব, সিনিয়র এক্টারনাল এফিয়্যারস অফিসার হাতে হস্তান্তর করা হয়। তিনি বিশ্বব্যাংকের সংশিষ্ট অফিসারদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেন।

জাহাংগীর আলম জনি, পরিচালক, উবিনীগ


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।