বিষ মুক্তির খাদ্য


আজ কাল সব কিছুতেই বিষ। খাদ্যেও বিষ। তাই দিনে দিনে বিষ মুক্তির বিষয় বিবেচনায় আসছে। তবে বিষের উৎস এবং মানব দেহে বিষের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ভাল ধারণা ছাড়া ওষুধ অথবা পাথ্যের দ্বারা বিষ মুক্ত হওয়া সম্ভব নয়।

অনেকেরই ধারণা অসুখ বিসুখ না থাকা মানেই ভাল স্বাস্থ্য। স্বাস্থ্য ভাল থাকা সম্পর্কে এ ধারণা ঠিক নয়। খারাপ স্বাস্থ্য অভ্যাস এবং স্বাস্থ্যজ্ঞান বর্জিত জীবন আচার নিরবে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। আমরা অনেকেই আজকাল ব্যক্তিগত ও সামাজিক ব্যস্ততার কারণে চর্বিযুক্ত,কলেষ্ট্রোল সমৃদ্ধ, ঘন সোডিয়াম পূর্ণ ও কম আশঁ যুক্ত খাবার খাচ্ছি। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। দীর্ঘস্থায়ী রোগের আক্রমণ বাড়ছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে মানুষের ওষুধ নির্ভরতা বাড়ছে। ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও বাড়ছে । অন্যদিকে খাদ্য ও পাথ্যের মাধ্যমে রোগের প্রাদুর্ভাব কমানোর প্রবনতা কমছে। তথা কথিত আধুনিক কৃষির প্রবল ধারায় সব রকম খাদ্যের মধ্যেই বালাই নাশকের অনুপ্রবেশ ঘটছে। এ বিষ মানব দেহের জন্য কত ব্যাপক তা ক্রম বর্ধমান হাসপাতাল আর ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যা থেকেই অনুমান করা য়ায়। সুস্থ জীবন যাপনের জন্য তিলে তিলে জমানো বিষ শরীর থেকে বের করে দিতে হবে। প্রচলিত অনেক খাদ্যর মধ্যেই শরীর থেকে বিষ নিঃম্বরণ ক্ষমতা সম্পন্ন খাদ্য আছে। যেমন আধিক আশঁ, কম চর্বি, কম চিনি এবং কম লবন যুক্ত খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ নি:সারক। উল্লেখ যোগ্য বিষ নি:সারক খাদ্যের মধ্যে রয়েছে ঃ ১. মিষ্টি আলু ,২. ফুল কপি,৩. মিষ্টি কুমড়া,৪. আপেল,৫. বরবটি,৬. ধনিয়া শাক ও ৭. পিয়াজ।

১.মিষ্টি আলুঃ মিষ্টি আলুর মধ্যে সহজে হজম হয় এমন আশঁ থাকে যা বাওয়েল পরিস্কার করতে সহায়ক হয়। মিষ্টি আলুর কোলাজেন এবং পলিস্যাকারাইড রক্ত সঞ্চালন শিরা শক্ত হত্তয়া (আরটেরিয়াল স্কেলেরোসি) সমস্যা থেকে রক্ষা করে। রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া সবল রাখে। শিরা উপশিরার সম্প্রসারণ ও সংকোচন (ইলাসটিসিটি) বজায় রাখে এবং অতিরিক্ত কোলেস্ট্রোল শরীর থেকে বের করে দেয়। মৃদু তাপে সেকা মিষ্টি আলু ছালসহ খেলে সর্বাধিক কার্যকারিতা পাওয়া যায়।

২. ফুল কপি: ফুল কপিতে বিটাক্যারোটিন, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, ইত্যাদি উপাদান রয়েছে। এ সব খাদ্যপ্রাণ ও অণু খাদ্য শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ নি:সারন করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৩. মিষ্টি কুমড়া : মিষ্টি কুমড়ার মধ্যে আছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন-ই। মিষ্টি কুমড়া শিশার মত ভারী পদার্থ শুসে নিয়ে শরীর থেকে বের করে দেয়। আলসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৪. আপেল : আপেলে ভিটামিন বি-১, বি-৫, বিটাক্যারোটিন, প্রটিন, ক্যালশিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, আয়রন ও আশঁ আছে। এ সব খাদ্য প্রাণ ও অণুখাদ্য শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। যেমন জিঙ্ক শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মেধা শক্তি বাড়ায়, আপেলের ছালে ক্যান্সার প্রতিরোধী উপদান রয়েছে। নিয়মিত আপেল খেলে কোষ্ঠ্যবদ্ধতা হয় না।

৫. বরবটি : বরবটি খাদ্য প্রাণ ও আনুখাদ্য সমৃদ্ধ সবজি। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় বরবটি থাকলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ সহজেই নি:সারিত হয়।

৬. ধনে শাক : ধনে শাকে ভিটামিন-সি, বিটাক্যারোটিন, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২, ক্যালশিয়াম, আয়রন ও ফসফসরাস রয়েছে। এ সব অণুখাদ্য ও খাদ্য প্রাণ শরীরে, বিপাক প্রক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি করে এবং দূষিত পদার্থ শরীর থেকে নিঃসারণে সহায়তা করে।

৭. পিঁয়াজ ঃ পিঁয়াজ হজম শক্তি বাড়ায়। পিয়াজে বিধ্যমান সালফার বালাই নাশকের বিষ শরীর থেকে নিঃসারনে সহায়তা করে।

 


Click Here To Print


Comments Must Be Less Than 5,000 Charachter