তামাকের বিস্তার বন্ধ করতেই হবে


তামাকের মূল উপাদান নিকোটিন। নিকোটিন মানব স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তামাকে সাত হাজারের অধিক রাসায়নিক উপাদন রয়েছে। এর মধ্যে একশ এর অধিক হচ্ছে মারাত্মক। যা মানব দেহের উপর ক্ষতিকর প্রতিক্রিরা সৃষ্টি করে। কম পক্ষে ৬৯ টি উপাদান আছে যা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টি করে। তদুপরি তামাক সেবন হৃদ রোগের প্রবনতা ২.৫ গুণ এবং ফুসফুসের পীড়া ২০ গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

তামাক গর্ভবতী মা ও তার সন্তানের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য প্রতিক্রিয়াগুলো হচ্ছে:

১ গর্ভপাত্র বা প্লাসেন্টা যা গর্ভের সন্তানের খাদ্য ও অক্সিজেনের উৎস তা মারাত্মকভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হয়। অক্সিজেনের সরবরাহ কমিয়ে দেয়।
২ গর্ভস্থ সন্তানের হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়।
৩ পূর্ণতা প্রাপ্তির আগেই সন্তানের জন্ম হয়।
৪ নব জাতকের ওজন কম হয়।
৫ শ্বাসকষ্ট নিয়েই সন্তানের জন্ম হয়।
৬ জন্ম গত ক্রটি যেমন ঠোট ফাঁটা সমস্যা নিয়ে সন্তানেরর জন্ম হয়।
৭ জন্মগত ভাবে অস্থির ও অমনোযোগী শিশুর (এডি এইচডি) জন্ম হতে পারে।
৮ শিশু শ্রবন প্রতিবন্ধকতা হতে পারে।
৯ জন্মগত ভাবেই তামাকের প্রতি নেশাগ্রস্ত হতে পারে।
১০ জন্মগত ভাবেই দুর্বল ফুঁসফুস নিয়ে শিশু জন্মতে পারে।।
১১ জন্মগত ভাবেই এজমা রোগী হতে পারে।
১২ হঠাৎ নবজাতকের মৃত্যু হতে পারে।
১৩ মৃত সন্তান প্রসব হয়।

শিশুকে তামাকের অভিশাপ থেকে রক্ষা করতে হলে মা’কে তামাকের প্রভাব থেকে দুরে রাখতে হবে। শুধু মাকে তামাক সেবন থেকে বিরত থাকলেই চলবে না গর্ভবতী মায়ের কাছাকাছি বসে কাউকে তামাক সেবন করতে দেয়া যাবে না।

নব জাতক’কে তামাকের পরিবেশ থেকে দূরে রাখতে হবে। বাড়ীতে অথবা গাড়ীতে সকলকে তামাক সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। তামাক সেবন কারিদের ছোঁয়া থেকে সন্তানকে দুরে রাখতে হবে। ধুম পনের আশংকা যুক্ত কোন স্থানে শিশুকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।

তামাকে আছে মারাত্মক বিষ নিকোটিন। নিকোটিনের ভয়াবহ ছোঁবলে শিশুর দেহের দ্রত বর্ধনশীল কোষগুলি মারাত্মক বিকৃতির শিকার হয়। বাড়ন্ত শরীরে নিকোটিনের প্রভাব খুব দ্রুত ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। বিশেষ করে ফুসফুসের কমর্ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পায়। দির্ঘস্থায়ী কাশি ও হাঁচির শিকার হয়। তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব জীবনভর চলতে থাকে।

তামাকে আসক্ত মেয়েদের মুখ মন্ডলে দাড়িগোফ গজায়। প্রতিনিয়ত সর্দি কাঁশিতে আক্রান্ত হয়। তামাক সেবনকারি ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতি তিন জনের মধ্যে এক জনের তামাক সংক্রান্ত রোগে মৃত্যু হয়।

তামাক সেবিদের বেশী ভাগেরই তামাকে হাতে খড়ি হয় স্কুল জীবনেই। তাই স্কুল জীবনে ধুমপান মুক্ত থাকতে পারলে সারা জীবনই এ অভিশাপ থেকে মুক্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পরোক্ষ ধুম পানের শিকার হয়েও মানুষ ক্যান্সার, শ্বাস জনিতে সমস্যা এবং হৃদ রোগের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়।


jardda


ধোঁয়াবিহীন তামাক দ্রব্য যেমন জর্দ্দা, গুল, সাদাপাতা ইত্যাদি সেবনের ফলে মুখ অভ্যন্ডরে, গলনালিতে,অগ্নাশয় এবং অন্যান্য অঙ্গে ক্যান্সার হতে পারে।

তামাক সেবন যেমন স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে তেমনি তামাক উৎপাদন ও নানা রকম ঝুঁকি যেমন গ্রীণ টবাকো সিকনেশ, শ্বাসকষ্ঠ ও পরিবেশের উপর ঋণাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করে, দারিদ্র্যতা বাড়িয়ে দেয়, খাদ্যাভাব সৃষ্টি করে, পরিবেশ ধ্বংস করে, অর্থনৈতিক আগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করে এবং শ্রম শক্তির আপচয়ে ঘটায়।


tobacco


মানব সভ্যভাকে তামাকের সর্বগ্রাসী আগ্রাসন থেকে রাক্ষা করতে হলে অবিলম্বে তামাকের ব্যবহার ও উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। সেই সাথে তামাক বীজের বিস্তার ও বন্ধ করতে হবে।


Click Here To Print


Comments Must Be Less Than 5,000 Charachter