বন্যা ও ফসলী জমির ক্ষতি
বাংলাদেশের অনেক জেলাতেই এবার বন্যা হয়েছে, তার মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে এ বছর বন্যার রূপ নেয়। এবারের বন্যা হবে বলে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করত না। সাধারণত আমরা বর্ষার মৌসুমে বর্ষা পানি দেখতে পাই। এবার কিন্তু তা হয় নাই এবার হয়েছে বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে।
চিলমারীর এই অঞ্চলে প্রচণ্ড গরম ও খরা হলেও বৃষ্টির দেখা মেলে নাই ফলে কৃষক তো আর হাত পা গুটিয়ে বসে থাকে নি, তারা সেচ দিয়ে জমি চাষ করতে লাগলো। জমি কাঁদা করার পর কৃষক তার জমিতে চারা রোপন করার কাজ শুরু করে। রোপা আমন চাষাবাদ করতে বৃষ্টির পানি বেশি জরুরী। কিন্তু ঠিক সময় বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষক কোনো উপায় না পেয়ে জমিতে সেচ দেয়। রোপা আমন রোপন করার এক সপ্তাহের ভিতর দুই তিনদিন হালকা পাতলা বৃষ্টির দেখা মেলে।
যেভাবে বৃষ্টি হয়েছে তা দিয়ে কোনোদিন বন্যার রূপ নিবে বলে কৃষকরা ভাবেত পারেনি। ধীর গতিতে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পানি নিয়ে বন্যা বড় আকার ধারণ করে। কৃষকরা কেউ জানতেন না এভাবে বন্যা আসবে! এটা তাদের কল্পনার বাইরে ছিল। তারা আগে যদি কোনা আভাস পেত তাহলে এতো ক্ষতি হত না। আর জমিতে ফসল লাগাতেন না। এখন তো সব শেষ।
বর্তমান বন্যায় কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে তা বলাবাহল্য। চিলমারী অঞ্চলে বন্যার পানি দুইবার বৃদ্ধি পায়। প্রথমে যে এলাকাগুলোতে পানি বন্দি হয়েছে, সেখানে দুইদিন পানি খাড়া ছিল। সাধারণত পানি খাড়া হবার পড় নেমে যায়। এখানে উল্টোটা হলো। পানি আবারো বৃদ্ধি পেলো। কোনো বড় ধরণের বৃষ্টিপাত হয় নাই এখানে স্বাভাবিকটাই হয়েছে। কারণ উজান থেকে নেমে আসা পানি সেই পানি বর্ষার পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৃদ্ধি হয়েছে।
বর্তমান চিলমারীর বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে হাহাকার চলছে। তারা কি করবে। নাই তাদের কাজ। নাই তাদের খাবার। নাই তাদের হাতে নগদ টাকা। যা কিছু ছিল সব বন্যায় শেষ করে দিয়েছে। তাদের ফসলের জমিতে যা কিছু লাগিয়েছে তা সব পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। বাড়ি ঘর সব বিনষ্ট হয়ে গেছে। চিলমারী এলাকায় সাধারণত কৃষকরা জমি চাষাবাদ করার জন্য মৌসুমী লোন নিয়ে চাষাবাদ করে থাকেন। এই টাকা পরিশোধ করার জন্য তিন-চার মাস সময় দেওয়া হয়। কৃষক যে কারণে টাকা নিয়েছিল সেটা তো হলো না। বন্যা এসে সব নষ্ট করে দিয়েছে কৃষক এখন বড় অসহায়।