বাল্য বিয়ে জীবনের অভিশাপ


মা ও শিশুর জীবন রক্ষা করতে হলে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করতে হবে। একথা আমরা যারা সচেতন নাগরিক তারা সবাই বলে থাকি। এই নিয়ে উন্নয়ন মূলক অনেক সংগঠন ও কাজ করছে। কিন্তু কিছুতেই বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। এর কারণ খুজতে গিয়ে যে ঘটনা জানা গেল তা হলো যে সব এলাকায় বাল্য বিয়ে হচ্ছে। সেই বিয়ে গুলির কোন রেজিট্রেশন হয় না। গোপনে মওলানা দিয়ে বিয়ের কাজ সমাধান করা হয়। যখন বিয়ের বয়স হয় তখন বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন করা হয়। এই তথ্য জানালেন নরসিংদী জেলার নজরপুর গ্রামের মহিলারা। বাল্য বিয়ের আইন সম্পর্কে তারা তেমন অবগত নন। দাইমারা একটি তথ্য দিলেন তা হলো অল্প বয়সে যাদের বিয়ে হচ্ছে তাদের অপরিণত বয়সে বাচ্চা হয়ে মারা যাচ্ছে। এটি একটি ভয়াবহ তথ্য। এই মৃত্যু রোধ করতে হলে বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে হবে। বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করার বিষয় নিয়ে কিশোরী মেয়ে এবং মায়েদের সাথে আলোচনা করে জানা যায় যে, এই গ্রামের বেশীর ভাগ লোক ব্যবসায়ী এবং বিদেশে চাকুরি রত। এই গ্রামের বড় সমস্যা হলো বাল্য বিয়ে। এখানে অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেয়া হয়। কারণ জানতে গিয়ে মহিলা এবং কিশোরী মেয়েদের সাথে কথা বলে জানা গেল এর জন্য দায়ী সমাজ এবং পরিবার।


বাল্য বিয়ে


একটি মেয়ে যখন স্কুলে যায় সমাজ তার কোন দায় দায়িত্ব নেয়না। পরিবারের উপার্জন ক্ষম পুরুষরা কর্ম ব্যস্ততার জন্য বেশির ভাগ সময় বাহিরে থাকেন। গ্রামের রাস্তায় মেয়েটিকে একা স্কুলে যাওয়া আসা করতে হয়। স্কুলে যাওয়া আসার পথে রাস্তায় বখাটে ছেলেরা তাকে নানা ভাবে উক্তত্ব করে। যখন মেয়েটির অভিবাবক সমাজের কাছে বিচার চাইতে যায়। তখন দায়ী করা হয় মেয়েটিকে। এর কারণ হলো যে সব ছেলেরা মেয়েদেরকে উক্তত্ব করে তারা হলো সমাজের উচ্চ শ্রেণীর লোকদের ছেলে। তাদের সাথে পেরে উঠা সাধারণ গরিব ঘরের বাবা মায়ের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। মেয়ের ইজ্জত এবং নিজেদের মান সম্মান রক্ষার জন্য পরিবার তখন বাধ্য হয়ে মেয়েটির লেখা পড়া বন্ধ করে দেয়। মেয়ে ঘরে থাকলেও সমাজ বলে বুড়া হয়ে যাচ্ছে বিয়ে দেয় না। যেহেতু তার পাশের বাড়ির মেয়েকে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। ঘরে থাকলেও তাকে নানা ভাবে সমাজের কাছ থেকে কথা শুনতে হয়। বাধ্য হয়ে বাবা মা মেয়েকে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিতে বাধ্য হন। এর জন্য কাকে দায়ী করবো ?


Click Here To Print


Comments Must Be Less Than 5,000 Charachter