অনাকাঙ্কিত মৃত্যু


ইউনিসেফ এবং ইঐওঝ এর এক তথ্য থেকে জানা যায় বছরে ১৭,০০০ শিশু পানিতে পড়ে। কত মৃত্যু হয় তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। পানিতে ডুবে যাদের মৃত্যু হয় তাদের বয়স ১৬ মাস থেকে ১১ বছরের মধ্যে। এই মৃত্যুর খবর পত্রিকায় তেমন প্রকাশিত হয় না। পানিতে ডুবে যে সব শিশুদের মৃত্যু হয় তারা বেশির ভাগ বাড়ির আশে পাশের ডোবা, পুকুর, খাল, নদী, ড্রেনে, পানি রাখার পাত্রে, যেমন বালতি, ড্রাম, ইত্যাদী পড়ে মৃত্যুবরণ করে। বাড়ি থেকে এর দুরত্ব ২০ মিটার এর মধ্যে। অনেকে একা বা অন্য খেলার সাথীর সাথে খেলতে খেলতে পানিতে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়। শোনা যায় দু’জনে একত্রে পানিতে ডুবে মারা গেছে। এর অর্থ হচ্ছে যে সাথী তার সঙ্গে থাকে সেও অনেক ছোট হওয়ার কারণে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেও ডুবে মারা যায়। বেশির ভাগ মৃত্যু হয় অতি বৃষ্টি এবং বন্যার সময়ে। জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসে পানিতে ডুবে মৃত্যুর খবর বেশী পাওয়া যায়।

এ বছরে ২০১৪ সালে মে থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কয়েকটি দৈনিক পত্রিকার তথ্য নিয়ে দেখা গেছে ৫ মাসে পানিতে ডুবে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১ বছর থেকে ১৫ বছর বয়সের ছেলে মেয়ে ছিল বেশি। গোসল করতে গিয়ে মারা গেছে ২২ জন। এর মধ্যে একটি মেয়ে ছিল যে গোসল করতে গিয়ে মৃগি রোগ উঠে মারা গেছে। খেলা করতে করতে পানিতে পড়ে মারা গেছে ৮ জন। ২ জন বয়স্ক মহিলা মারা গেছে তারা পা পিছলে পানিতে পড়ে ডুবে মারা গেছে। অবিভাবক একটু সতর্ক হলে এই মৃত্যু রোধ করা সম্ভব। যে সব মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না তা হলো লঞ্চ ডুবিতে যে সব মৃত্যু হচ্ছে। খুবই দুঃখ জনক বিষয় হলো প্রতি বছর এ ধরনের ঘটনা ঘটছে যারা এর জন্য দায়ী তাদের কোন বিচার হচ্ছে না। এর জন্য দায়ী নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ।

যে সব জেলায় পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে, সেই জেলা গুলি হলো: রংপুর, বরগুনা, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, রাজবাড়ী, নেত্রকোনা, শিবগঞ্জ, দাউদকান্দি, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, বাগেরহাট, শেরপুর ও রৌমারী।

বিস্তারিত তথ্য: রংপুর : আমাশু কুকরুল পাড়ার সেলিম মিয়ার মেয়ে সৃষ্টি (৭) সামসুল হকের মেয়ে লাম্বি (৬) ৩১ মে, ২০১৪ বিকেলে একসঙ্গে বিলে পাশে খেলা করছিল। খেলতে খেলতে তারা দুজনেই বিলে পানিতে তলিয়ে যায়। বিলের ধারে খেলতে গিয়ে পানিতে ডুবে এই দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বরগুনা: আমতলী উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে এক শিশু ও এক কিশোরীর মুত্যু হয়েছে। বরগুনা আমতলী উপজেলার নীলগঞ্জের মনি সিকদারের দেড় বছরের ছেলে রুহান বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে গিয়ে মারা যায়। লোদা গ্রামের দুলাল মিয়ার ১৫ বছরের মেয়ে রিমা পুকুরে গোসল করতে গিয়ে মৃগি রোগে আক্রান্ত হয়ে ডুবে মারা যায়। কুকুয়া গ্রামের আল আমিনের শিশু কন্যা মহিমা পা পিছলে পুকুরে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাজধানী ঢাকা: ধানমন্ডি লেকে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে গিয়ে ৪ জুন, ২০১৪ তারিখে রাজিব হাওলাদার নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সাঁতার না জানায় সে লেকের পানিতে তলিয়ে যায়। বন্ধুদের চিৎকারে আশে পাশের লোকজন খোঁজাখুজি করতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ আধা ঘন্টা পর এসে তার সন্ধান পায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।

মুন্সিগঞ্জের: লৌহজং উপজেলার মাওয়ায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মুন্নী নামে (৭) বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে মাওয়া দক্ষিণ মেদিনী মন্ডল গ্রামের রাজা মিয়ার মেয়ে।

কুড়িগ্রাম: নাগেরশ্বরী কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদা গ্রামের আবদুল আলীমের ছেলে সোহাগ (৮) কচাকাটা টেকনিক্যাল কলেজের পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়।

রাজবাড়ী: শহরের নারায়ণ বাবু সড়কের শফিকুল আজমের অষ্টম শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে উম্মে নুরে আজম মেধা (১৫) ৩ জুলাই, ২০১৪ পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। এসময়ে প্রত্যক্ষদর্শী একজনের চিৎকারে লোকজন তাকে পুকুর থেকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নেত্রকোনা: জেলা শহরের নাগড়া বাড়ইপাড়া এলাকায় ৫ জুলাই, ২০১৪ তারিখে বিকেলে মগড়া নদীতে গোসল করতে গিয়ে সঞ্জয় নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সে তার ভগ্নিপতির বাসায় শুক্রবার বেড়াতে এসেছিল। শনিবার সে বাড়ির পাশে মগড়া নদীতে গোসল করতে যায়। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ায় বাড়ির লোকজন তাকে খুঁজতে বের হয়। নদীর পাড়ে তার কাপড় দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয় এবং দমকল বাহিনীকে খবর দেয়। নেত্রকোনায় ডুবুরি না থাকায় ময়মনসিংহ থেকে আসা দমকল বাহিনীর ডুবুরিরা সন্ধ্যা ৬ টায় তার লাশ উদ্ধার করে।

শিবগঞ্জের: ছত্রাজিতপুর গ্রামের ফুলতলা এলাকায় মাকসুদের ১৩ বছরের মেয়ে মুন্নী ও একই গ্রামের মেহেদির মেয়ে সাবিনা (৯) ১২ জুলাই, ২০১৪ বাড়ির পাশে নিজেদের পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়। মুন্নী ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। সাবিনা চন্ডিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী।

দাউদকান্দি: কচুয়া উপজেলার তুরপাই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ২ বছরের মেয়ে তাসলিমা ১০ জুলাই, ২০১৪ দুপুরে খেলা করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে।

ময়মনসিংহের: ফুলপুর উপজেলার সিংহেরশ্বর ইউনিয়নের দক্ষিণ রামনগর গ্রামের ছুলেমন নেছা (৬৫) পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে।

ফরিদপুর: জেলার সালথা উপজেলার জয়ঝাপ গ্রামের বিল্লাল খাঁর শিশু কন্যা মদিনা আক্তার (৩) বাড়ির পাশে রাস্তায় খেলাধুলার সময় এক পর্যায়ে রাস্তার পাশে পুকুরে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

বরগুনা: বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের পশ্চিম ধুপতি গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে রাজু মিয়া ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যায় পাশের বাড়ির পুকুরে হাত-পা ধুতে গিয়ে পানিতে পড়ে মারা যায়।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের সদর ও সলঙ্গা থানা এলাকায় পানিতে ডুবে এক শিশু ও ৬০ বছরের এক নারী মারা গেছে। ৬০ বছর বয়সের একজ নারী নাম জমিলা খাতুন। বাড়ির পেছনে একটি ডোবায় পা পিছলে পড়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা উপজেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার তালুকবরা গ্রামে দুই বছরের শিশু আইভর ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকালে তাকে পাওয়া না গেলে অনেক খোঁজাখুজির পর বাড়ির পাশের এক পুকুর থেকে দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

বাগেরহাট: বাগেরহাটের কচুয়া সদরের সুকদেব সাহার নিজ বাড়ির পুকুরে ডুবে ৩ বছরের মেয়ে অংকিতা সাহার মুত্যু হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বেলা ১১ টায় পুকুর থেকে তার লাশ তোলা হয়।

শেরপুর: শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার জড়াকুড়া বড়বাড়ি গ্রামে ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুরে পুকুর পাড়ে খেলার সময় পুকুরের পানিতে ডুবে ছামিয়া (৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটি জড়াকুড়া বড়বাড়ি গ্রামের কৃষক শফিউদ্দিনের মেয়ে।

রৌমারীতে: রৌমারী উপজেলার মাদারটিলা গ্রামের সোনা মিয়ার একমাত্র (২) ??? বছরের মেয়ে সাদিয়া বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।

গাজীপুর: সদর উপজেলার সুকুন্দি এলাকায় ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুরে পানিতে ডুবে মারা যায়। ঐদিন দুপুরে ঐ এলাকায় বৃষ্টি হয়। বেলা দেড়টার দিকে দুই শিশু বাড়ির পাশে বিলে কলা গাছের ভেলা তৈরি করে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে বাড়ির লোকজন খোঁজাখুজি করে বেলা তিনটার দিকে বিল থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

সুকুন্দি এলাকায় সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে আবু তায়েব (৬) মোহাম্মদ শহীদের মেয়ে রিয়া (৯)

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মোজাঘোটা গ্রামের অনিমেশ মন্ডলের ছেলে অনিক (৩) ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে পানিতে ডুবে মৃত্যু বরণ করে। রুদাঘড়া গ্রামের ওহিদ মোল্লার মেয়ে সামিয়া (২) ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে পানিতে ডুবে মৃত্যু বরণ করে। ৬ সেপ্টেম্বর,২০১৪ তারিখে শোভনা গ্রামের খোকন সরদারের মেয়ে ফারজানা (৩) ও চেঁচড়ি গ্রামের ইয়াহিয়া খান বাবুলের মেয়ে পাখি (১) পানিতে ডুবে মারা যায়।

রাজশাহী: চারঘাটার ডাকরা এলাকার ইসলামের (১০) বছরের ছেলে মোস্তফা এবং শহিদুলের ছেলে খোকন (১১) আনুমানিক সকাল ৮ টায় পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে। দুজনেই পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।

ঠাকুরগায়ের: বুড়িচন্দ্র এলাকার নইমুদ্দিনের ছেলে হিমু (১৫) বন্ধুদের সাথে শুক্রবার বিকেলে

টাংগন নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে। হিমু ইসলামনগর হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।

সিলেট: দাসপাড়া এলাকার সিরাজ মিয়ার ছেলে ইব্রাহীম (৫) শুক্রবার ২ টার দিকে নিখোঁজ হয়। বিকেল তিনটার দিকে এক প্রতিবেশী তার লাশ পানিতে ভাসতে দেখে খবর দেয়। লোকজন এসে পানি থেকে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করে। তথ্যসুত্র: নিউএইজ ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ফরিদপুর: মধুখালী ইউনিয়নের নাওরাপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জইন (২) ১৬ সেপ্টেম্বর, সকালে বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবে মারা গেছে। তথ্যসুত্র: যুগান্তর ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

গাজিপুরে: পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু।

গাজীপুরের কোনাবাড়ি দেওলিয়া বাড়ি এলাকায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

একজন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার সোলকুরা গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে আবু ইউসুফ (৮) ও টাঙ্গাইল গোপালপুর থানার সুখী গ্রামের হালিম মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (৯)। নিহত শিশু দুটি কোনাবাড়ি দেওলিয়া বাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। তারা এই এলাকায় ভাড়া থাকে। ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বেলা ১ টার দিকে খলিল মিয়ার পুকুরে গোসল করতে নামে। এক সময় ইউসুফ পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় মনির তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেও পানিতে ডুবে যায়। এছাড়া প্রতি বছর লঞ্চ ডুবিতে অনেক লোকের মৃত্যু হয় এর মধ্যে নারী, শিশু ও বয়স্ক পুরুষ লোক ও রয়েছে। এ বছর ৪ আগস্ট, ২০১৪ মাদারীপুরের কাওরাকান্দি ঘাট থেকে মুন্সগঞ্জের মাওয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এমএল ‘পিনাক-৬’ লঞ্চটি দুইশতাধিক যাত্রী নিয়ে পদ্মা নদীর মাওয়া ঘাটের কাছে ডুবে যায়। শতাধিক যাত্রী সাঁতরে তীরে আসতে সক্ষম হয়। সর্বশেষ ৪৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলেও লঞ্চটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সরকারি হিসাব মতে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৬১ জন যাত্রী। দুর্ঘটনার পর নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নুর-উর-রহমানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১৮ আগষ্টে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলে ও তদন্ত কমিটি সময় বাড়িয়ে একমাস পর ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত কমিটি ইনল্যান্ড শিপিং অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ -এর ৪৫(৩) ধারায় গঠিত এই তদন্ত কমিটি লঞ্চ দুর্ঘটনার সঠিক কারণ ও দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছে। প্রতিবেদনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, নকশায় ক্রটি এবং লঞ্চটির কাগজপত্রেও নানা রকম অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এধরণের দুর্ঘটনা রোধে নৌ-প্রশাসন পূর্ণগঠন, নৌ-নিরাপত্তা, আইন সংশোধন ও জরিপ পদ্ধতি পরিবর্তনসহ ২৫ টি সুপারিশ করেছে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু আমরা সবসময় লক্ষ করছি কোন দুর্ঘটনা ঘটলে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর তা আর কার্যকর হয় না। এর আগে গত মে মাসে মুন্সিগঞ্জে এমডি মিরাজ-৪ নামে একটি লঞ্চ ডুবে ৫৬ জন মারা যায়। নৌবাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপ কারক এ এফ এম সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ২৪ জুন তাদের তদন্ত রিপোর্টে দুর্ঘটনার জন্য সাইফুর রহমানকে দায়ী করে প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু আজও পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। স্বজন হারা মানুষরা তাদের স্বজনদের জন্য সারা জীবন কষ্ট বুকে চেপে জীবন কাটায়।

যে সব পত্রিকার তথ্য নেয়া হয়েছে সেই পত্রিকা গুলি হলো: যুগান্তর, দেশতথ্য, নয়াদিগন্ত, এবং নিউএইজ।

 


Click Here To Print


Comments Must Be Less Than 5,000 Charachter