নিমের ওষুধি গুণ
সাধারণ মানুষের হাতের কাছে যে সকল প্রয়োজনীয় ওষুধি গাছ গাছড়া আছে আদি কাল থেকে দাই কবিরাজরা সেই গাছগাছড়া দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা দিয়ে আসছে। এদের এই জ্ঞানকে ধরে রাখার জন্যে ওষুধি গাছগাছড়া টিকিয়ে রাখা দরকার। এই ওষুধে তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। অতি সহজে সাধারণ মানুষ এই চিকিৎসা নিতে পারেন। আমরা কাজ করতে গিয়ে দেখছি বর্তমানে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবার কারণে অতি সহজে হাতের কাছে ওষুধি গাছ গাছড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তবুও এখনো পর্যন্ত দাই কবিরাজরা ওষুধি ব্যবহার করে থাকেন। তেমন একটি ওষুধি গাছ নিয়ে বলছি। গাছটির নাম হচ্ছে নিম বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে: (Azadirachta indica) কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আদি কাল থেকে এই গাছের পাতা ব্যবহার করে আসছে। কথা হয় গার্মেন্ট শ্রমিক জেসমিনের সাথে সে বলে খালা আমার মাথায় অনেক উকুন হয়েছে। আমি মাথায় ইঁদুর মারার ওষুধ দিয়েছি। ওর কথা শুনে তো আমি অবাক হয়েছি বলে কি? ওর পাশে একটি মেয়ে ছিল সে বলে বিষ দিলে তো ক্ষতি হবে। শরীরের সাথে মিশে যাবে। তার চেয়ে নিমের পাতা বেটে মাথায় দিও উকুন মরে যাবে। আমাদের দাইমারা বলে নিমের তেল মাখলে মাথা ধরা কমে যায়। এখন গরম কাল এই সময়ে বাচ্চাদের খোঁসপাচড়া বা চুলকানি বেশী হয়। পরিস্কার করে গোসল করে কাঁচা হলুদ ও নিম পাতা একত্রে বেটে শরীরে মাখিয়ে কিছুক্ষণ রোদে বসে থাকলে চুলকানি ভাল হয়ে যায়। এ ছাড়া নিম পাতা পানিতে দিয়ে সিদ্ধ করে গোসল করলে খোঁসপাচড়া বা চুলকানি ভাল হয়ে যায়। নিম পাতা খোঁসপাচড়া বা চুলকানির মহৌষুধ। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চামচ নিমের রস অল্প একটু মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে জন্ডিস ভাল হয়ে যায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পাঁচটি গোলমরিচ ও ১০ টি নিমপাতা একসাথে চিবিয়ে খেলে ডায়াবেটিস বোগীরা বেশ সুস্থ বোধ করেন। মাথায় উকুন হলে নিমের পাতা বেটে মাথায় লাগিয়ে ঘন্টা খানেক পর ধুয়ে ফেলতে হবে। তিন-চার দিন এভাবে মাথায় নিমপাতা লাগালে উকুন মরে যাবে। সর্দি কাশিতে বুকে কফ জমলে নিমের পাতা এর জন্য খুবই উপকারী একটি ওষুধ। সামান্য গরম পানিতে ৩০-৩৫ ফোঁটা নিমের রস মিশিয়ে দিনে তিন চারবার খেলে বুকের ভেতরের কফ বেরিয়ে যায়। কাশিও ভাল হয়ে যায়। (সতর্ক বানী তবে একদম ছোট বাচ্চাদের, গর্ভবতী মহিলাদের এবং একদম বৃদ্ধ লোকদের এটি খাওয়া নিষেধ)