গাইনি ডাক্তার না থাকায় অটোরিক্সায় সন্তান প্রসব
গতকাল ৩ মার্চে, ২০১৫ প্রথম আলোর একটি খবর পড়ে চিন্তিত হলাম। সারা বিশ্বে মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যু রোধ করার জন্য সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠাগুলি কাজ করে যাচ্ছে। এসময়ে যদি এধরণের ঘটনা চোখে পড়ে তখন ভিত না হয়ে পারি না। নার্গিস আক্তার নামে যে গর্ভবতী মায়ের সন্তান প্রসব হলো রাস্তায় এটা কি আমাদের লজ্জার বিষয় নয়। মাতৃমৃত্যুর জন্য যে বিষয়গুলি দায়ী তার মধ্যে বাড়ি থেকে হাসপাতালের দুরত্ব একটি বিষয়। অর্থাৎ রোগীকে বাড়ি থেকে হাসপাতারে নেয়ার পথে মায়ের মৃত্যু ঘটে।
৩ জুলাই, ২০১৪ সমকাল পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল। খবরটি হলো ২ জুলাই ,২০১৪ তারিখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান দরিদ্র মানুষ অর্থাভাবে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে পারেন না। তাদের কথা বিবেচনা করে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা হয়েছে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান। গুরুত্ব বিবেচনা করে অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার কথা ছিল। তাহলে কি এখনো অ্যাম্বুলেন্স সদও হাসপাতালে পৌঁছায় নি? আমাদের কথা হচ্ছে তা হলো নার্গিস আক্তার নামে যে গর্ভবতী মাকে প্রসব জটিলতার কারণে ১ মার্চ, ২০১৫ তারিখে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় সেখানো কোন গাইনি বিশেষজ্ঞ নেই। নার্স ও অন্যান্য কর্তব্যরত ডাক্তারা প্রায় তিন ঘন্টায়ও সন্তান প্রসব করাতে না পেরে তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আরশাদ উল্লাহ। সদরে নেওয়ার পথে ঘিওর উপজেলার সাতবাড়িয়া এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিক্সাতেই কন্যা সন্তান প্রসব করেন নার্গিস আক্তার। আশপাশের লোকজনের সহায়তায় মা এবং নবজাতক শিশু বেঁচে আছেন। আল্লার রহমত যে নার্গিস ও তার নবজাতক সন্তান সুস্থ রয়েছে। সেখান থেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ধন্যবাদ জানাই এলাকাবাসিকে। নার্গিসের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা গ্রামে। দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কাছাকাছি হওয়ায় সেখানেই প্রসূতিকে নেওয়া হয়। কথায় কথায় বলা হয় বাড়িতে প্রসব না করিয়ে হাসপাতালে প্রসব করাবেন। তা হলে এই মা হাসপাতালে গিয়ে কি উপকার পেল?