অসংক্রামক রোগ টেকসই উন্নয়নের অন্তরায়
অসংক্রামক রোগ টেকসই উন্নয়নের পথে সব চেয়ে বড় বাঁধা। উন্নয়নের পথে অংক্রামক রোগ মস্ত বড় মৃত্যুঝুঁকি। পৃথিবীব্যাপী প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক রোগ। অসংক্রামক রোগ কেবল মাত্র মৃত্যুঝুঁকির প্রধান কারণই নয় দীর্ঘস্থায়ী অক্ষমতা ও পঙ্গুত্বের প্রধান কারণ। অথচ যথাসময় ব্যবস্থা নিলে এবং ঝুঁকির কারণগুলি কমাতে পারলে এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন-তামাক সেবন থেকে বিরত হলে, মাদকের ব্যবহার বন্ধ করলে, অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন করলে এবং শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রা পরিমিত হলে। টেকসই উন্নয়নের তিনটি স্তম্ভ যেমন অর্থনৈতিক অগ্রগতি, সামাজিক সাম্য এবং পরিবেশ অভিযোজন।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রধানত চারটি উল্লেখযোগ্য অসংক্রামক রোগ যেমন-ক্যান্সার, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোগ, এবং ডায়াবেটিস মৃত্যুর প্রধান কারণ। অন্যান্য অসংক্রামক রোগের মধ্যে রয়েছে স্নায়ুবিক ব্যাধি, যেমন- ডেমেনশিয়া এবং আলঝাইমার, ক্ষয় প্রতিরোধ ক্ষমতাহীনতা জনিত সমস্যা যেমন পাঁচড়া জাতীয় চর্মরোগ (সোরাইসিস), অস্টিওপরোসিস এবং আর্থরাইটিস, কিডনি, মুখ, চোখ এবং কানের রোগ।
অসংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ কমাতে এবং টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সামাজিক ন্যায় বিচার অবশ্যই প্রয়োজন। তবে টেকসই উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক এবং পরিবেশের বিষয়গুলি যত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয় সেভাবে টেকই উন্নয়নের সামাজিক মাত্রা বিবেচনায় রাখা হয় না। অথচ সমতা, সামাজিক, অর্থনেতিক এবং পরিবেশগত উন্নয়নের ভর কেন্দ্র। সামাজিক বৈষম্য অসংক্রামক ব্যাধি মহামারী আকারে প্রাদূর্ভাবের প্রধান কারণ। সামাজিক বিভাজন যেমন-শিক্ষা এবং আয় অসংক্রামক ব্যাধির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কম শিক্ষিত এবং স্বল্প আয়ের মানুষ ক্রমাগত ভাবে অসংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। অসংক্রামক রোগের প্রাদূর্ভাব কমাতে হলে জাতীয় পরিকল্পনায় সাধারণ শিক্ষা বিস্তার এবং অর্থনেতিক বৈষম্য দূরীকরণের কোন বিকল্প নাই। অসংক্রামক রোগের প্রাদূর্ভাব কমাতে পারলে স্থিতিশীল টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। সর্বোপরি সুষম খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে জন সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
খাদ্যের মূল উপাদান ৬টি। যেমন-দানা শস্য, প্রোটিন, চর্বি, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও আঁশ। একজন পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক কম বেশী ১১৫০ গ্রাম খাদ্যের প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে দানা শস্য ৪০০ গ্রাম, শাক-সবজি ৩০০ গ্রাম, ডাল ৫০ গ্রাম, গোল আলু ১০০ গ্রাম, মাছ ৬০ গ্রাম, মাংস ৪০ গ্রাম। দুধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য ১৩০ গ্রাম, চর্বি ৩০ গ্রাম, চিনি অথবা গুড় ২০ গ্রাম। মসলা ২০ গ্রাম।