তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে দিয়েই এদের রুখতে হবে


ড. তুষার চক্রবর্তী,  একজন বিখ্যাত  মলিকুলার বায়োলজিষ্ট। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ফামা (FAMA- Forum Against Monopolistic Aggression) চেয়ারম্যান। বাংলাদেশে বিটি বেগুন প্রবর্তনের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে আন্দোলন শুরু হলে তিনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। তারপর আমাদের আমন্ত্রণে তিনি শত ব্যস্ততার মধ্যে দুইদিনের জন্যে বাংলাদেশে আসেন। এর মধ্যে ১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে একটি সেমিনারে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি নিজে একজন বিজ্ঞানী হিশেবে জেনেটিক ইঞ্জিনীয়ারিংয়ের নানা দিক তুলে ধরেন। তার মধ্যে একটি অংশ ছিল নির্দিষ্টভাবে বিটি বেগুন সংক্রান্ত।

তাই এখানে তুলে দিলাম

tushar

ড। তুষার চক্রবর্তীঃ

বেগুন একটি প্রিয় সবজি, সস্তা সবজি, নানা জাতের সবজি বেগুন নানান জায়গায় তৈরি হয়, তাছাড়া মানুষ বেগুন সবজি হিসেবে খায়, রোগীর পথ্য হিসেবে খায় আবার ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার হয়। বেগুন চাষ নিয়ে কোন সংকট নেই, বেগুনে পোকা লাগে ঠিক তবে সরকারী পরিসংখানে বলা হয়েছে ৭০ শতাংশ বেগুনে পোকায় নষ্ট হয় এটা একেবারে বানানো কথা। এখনো বেগুন- ঐ ধান, গম চাষের মতো মাইলের পর মাইল নিবিড় ভাবে শুধু একটা জাত চাষ করা হয় না। যখন ঐ ভাবে বেগুন চাষ করা হবে তখন বেগুনেও পোকার উপদ্রব বাড়বে। এতো রকম জাত পাওয়া যায় বলেই বেগুনে পোকার উপদ্রব কম, বেগুন চাষে কোন সংকট নেই। বেগুনের সব জাত মিলে মিশে চাষ করা হয় বলেই বেগুনে পোকার উপদ্রব হয় না। এবং পোকার উপদ্রব সব বছর সমান থাকে না।আমরা অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, প্রতি চার বছর অন্তর একটু পোকার উপদ্রব বাড়ে। তখনও বেগুনে পোকার আক্রমণে ক্ষতি ৭০ শতাংশ হয় না। এ বিষয়টা কৃষকরা জানেন, এটা সম্পূর্ণ বানানো তথ্য। বেগুনে পোকা জনিত ক্ষতি খুব খারাপ বছরে খুব বেশী হলে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে কিন্তু অন্যান্য বছরে সেটা ১০ শতাংশের বেশী নয়। বেগুনে পোকা লাগার হিসাবটা একজন বিজ্ঞানী মার্কিন যুক্ত থেকে এসে এটা নিয়ে কাজ করে দেখিয়ে দিয়েছেন এবং ঐ বিজ্ঞানী বলেছেন বেগুনে পোকা লাগার ৭০ শতাংশ হিসাবটা সম্পূর্ণ বানানো হিসাব।

ভারতে বিটি বেগুনের বিরুদ্ধে আন্দোলন কৃষক পর্যায় থেকে এসেছিলো। তাদের সঙ্গে বিজ্ঞানী, সমাজকর্মী এবং সমাজের অন্যান্যরা যোগ দিয়েছেন। এর বিপদটা এখন কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে? দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ খরা, বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ এসব বর্তমান সময়ে বায়োটেকনোলজি এর সবচেয়ে সফল ব্যবসায়িক ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো এখন শুধু রাজনৈতিকদের কাছেই নয়; একেবারে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছেও দেশে খরা, বন্যা হলে তাদের লাভটা আরো বেড়ে যায়। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী বন্দনা শিবা তিনি এগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখিয়েছেন। এই সৃষ্টি করা তৈরী করা সংকটের চক্রটা কেমন করে চলছে; তিনি সেটা খুবই সুন্দর করে দেখান। দুর্যোগ তৈরী করাটা এখন ব্যবসার সাথে অঙ্গীভূত হয়ে গেছে। সংকট সৃষ্টি হলেই যে যা কিছু ইচ্ছা চালিয়ে দেবে, এটা রুখতে হবে এবং এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সংকট মূহুর্তে যা কিছু দেয়া হবে, তা যেন মেনে না নেয়া হয়, তাহলেই সংকট উত্তীর্ণ হওয়া যাবে। নচেৎ সংকট আরো ঘণিভূত হবে। উত্তপ্ত কড়াই থেকে যেন জলন্ত উনুনে যেন লাফ না দেই। সত্যি কথা বলতে বিটি বেগুনের ঘটনার পরই বায়োটেকনোলজি এর নামে কি হচ্ছে এটা সারা ভারতবাসীর সামনে চলে আসে। ইতিমধ্যে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমস্যগুলো সারা পৃথিবীব্যাপী প্রকাশিত হতে লাগলো। ফলে ভারতের এক্সপার্ট ওপিনিয়ন কি জানতে চাইলো; এক্সপার্টরাও তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তারা তাদের রিপোর্টে বলেছেন- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং সংক্রান্ত সকল ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সকল ধরণের কার্যক্রম অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হোক। কেননা, ঐ সব জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই দূর্ঘটনাগুলো ঘটছে। যে ভাবে পরীক্ষা করার কথা বলা হয়, যে সব সাবধানতার কথা বলা হয়Ñ তারা কোন সাবধানতাই তো মানেই না; এমন কি যে পরীক্ষার কথা বলে তার আশপাশেও যায় না। কাজেই ঐ সব পরীক্ষা একেবারে লোক দেখানো। কোম্পানিগুলো আগে থেকেই ঠিক করে রাখে-তারা বাজারে ছাড়বে, আর সেজন্য লোক দেখানো পরীক্ষার মাধ্যমে নাটক করে। এ সব ব্যাপারে বিজ্ঞানীদের, সমাজকর্মদের সচেতন হতে হবে, শুধু বায়োটেকনোলজি এর বিজ্ঞানীদের ওপর ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না। কোম্পানিদের এই ভয়াবহ পরীক্ষাগুলো ধরা এখন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের একটা বড় কাজ। এ কাজ ভারতীয়দের কাজ বেড়িয়ে দিয়েছে।

এছাড়া বিটি বেগুন নিয়ে আরো বিতর্ক রয়েছে। বেগুন হচ্ছে খাদ্য, সবজি, ওষুধ-কমপক্ষে এ তিনটি ব্যবহার রয়েছে। সেই বেগুনের পোকা মারার জন্য ‘বিষটা’ ঐ বেগুনের ভেতরে ১টি ব্যাকটেরিয়াকে ঢুকিয়ে দেবেন। আপনি নিজে খাবার সময় ঐ ব্যাকটেরিয়াকে খাবেন। এ ঘটনা, এর আগে আর কখনো ঘটেনি। বিটি বেগুনের অনুমোদন ছাড় যদি ভারত সরকার দিতো, তাহলে আজ গোটা ভারতবাসী গিণিপিগে পরিণত হতো। মাহিকো, মনসান্টোকে দিয়ে বিটি বেগুনের কাজটা করিয়েছিলো, সেখানে একটি সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলো, সেখানে দেখা যায়, মনসান্টোই ঐ পরীক্ষা করেছিলো। তখন মাহিকো কোম্পানিকে বলা হলো, মনসান্টো বিদেশী কোম্পানি, তার পরীক্ষা গ্রহণযোগ্য হবে না, তোমাকে দেশে পরীক্ষা করতে হবে, সম্ভব হলে সরকারী জায়গায়, আর তা সম্ভব না হলে দেশেই তোমার পছন্দের স্থানে পরীক্ষা করতে হবে। মাহিকো তার পরীক্ষার ফলাফল জমা দিল, তারা মাত্র ২০টি ইঁদুর নিয়ে পরীক্ষা করেছে। ১০টি পুরুষ ইঁদুর এবং ১০টি মহিলা ইঁদুর। ২০টি ইঁদুরের উপর ৯০ দিনের মাহিকোর ঐ পরীক্ষা, আর ১২০ কোটি জনসংখ্যার দেশে সেটা প্রয়োগ করা তখনি কোর্ট থেকে বলা হলো এটা একেবারে ছেলে খেলা। এটা মোটেও পরীক্ষা নয়, বরং পরীক্ষার নামে ছেলে খেলা। মাহিকো কোম্পানি তারা নিজেরা তাদের নিজেদের জালে ধরা পড়ে গেল। আসল কথা হচ্ছে, জিন খাদ্য নিরাপদ কিনা, এটা নিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে বিতর্ক চলছে। এই বিতর্ক যবে থেকে প্ল্যান্ট জেনেটিক (Plant Genetic) ইঞ্জিনিয়ারিং শুরু হয়েছে তখন থেকে এই বিতর্ক। তখন থেকেই বিজ্ঞানীরা আশংকার প্রকাশ করে গেছেন। জিন খাদ্য নিরাপদ কিনা প্রশ্নে সর্বপ্রথম বিজ্ঞানীরাই সতর্ক করেছিলেন। তবে পরে এই বিজ্ঞানীদের একটা অংশকে, কোম্পানি যত তাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো, তত বিজ্ঞানীদের একটা অংশকে তাদের সাথে যুক্ত করতে লাগলেন। তাদের অনুদান যোগাতে লাগলেন। নানান ভাবে তারা বিজ্ঞানীদের একটা অংশকে প্রভাবিত করতে লাগলেন। ফলে এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীদের যে সতর্কটা ছিলো সেটা আর থাকলো না। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে পশ্চিম দেশে, জনসাধারণের মধ্যে ইউরোপে বিশেষ করে বিতর্কটা ও সচেতনতাটা ছড়িয়ে গেল। অথচ এই ইউরোপেই জিন প্রযুক্তির জন্ম। কিন্তু ইউরোপেই সর্বপ্রথম এই প্রযুক্তিকে একেবারে আটকিয়ে দেয়া হয়েছে। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, তারাই তো প্রথম প্রযুক্তিটা বানিয়েছিলো; লাভই যদি হতো তাহলে তারা সেটাকে আটকিয়ে দিলো কেন? এখন তারাই যদি সে প্রযুক্তি ব্যবহার না করে, তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ভাবতে হবে। এটাই তো প্রথম কথা।

এখন দেখা যাক জিন শস্য নিয়ে যেসব আইন-কানুন আছে সেসব। জিন প্রযুক্তি নিয়ে খুব সতর্কতা নিয়ে কাজ করতে হবে যাতে কোন ক্ষতি না হয়। বাস্তবে দেখা গেল, এ ব্যাপারে তেমন কোন আইন কানুনই নেই; যা দিয়ে এ প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ ব্যাপারে প্রথম যে সব দেশ ইতিবাচক দৃষ্টি দেখিয়েছিলো, তারা দেখলেন, এটাকে যদি ব্যবহার করতে হয়, তাহলে অবশ্যই এর সতর্কতা থাকতে হবে, নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। কিন্তু দেখা গেল কোনটায় আসছে না; মাঠ পর্যায়ে যেমন এটা ঠিক ভাবে করা হয় না, আবার যখন এ প্রযুক্তির পণ্য বাজারে আসছে, তখন ধাপে ধাপে ঠিক ঠিক পরীক্ষাগুলো করা হয় না। তার ফলে এ প্রযুক্তির ব্যাপারে যাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো, ঐ সব তথ্য প্রকাশ হয়ে যাবার ফলে, উন্নত দেশগুলোর মানুষ এ প্রযুক্তির বিরোধী হয়ে গেলেন। শুধু মাত্র ঐ ৪টি দেশ বাদে। ৪টি দেশ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। এই প্রযুক্তি যদি জনমুখি প্রযুক্তি হতো, মানুষের উপকার হতো তাহলে তো এ প্রযুক্তি আটকে থাকতো না। পৃথিবীতে ২৯০টি দেশ রয়েছে। এই ২৯০টি দেশের মধ্যে মাত্র ৪টি দেশে ৮০% এ প্রযুক্তির ফসল চাষ হয়। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে- এ প্রযুক্তি মাত্র ৪টি দেশে আটকে থাকলো কেন? অন্যান্য দেশে ছড়ালো না নে? উত্তরটা ঐখানে এ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের জন্য যে পরিকাঠামো তৈরী করা উচিত; ঐ পরিকাঠামো কোন জায়গাতেই তৈরী করা হয় নি। প্রশ্ন কেন হয়নি? পরিকাঠামো না হবার ক্ষেত্রে, শক্ত মতো বাধা দেয়া হয়েছে। সেজন্য যে সব স্থানে এ প্রযুক্তি চালাবার চেষ্ট করা হচ্ছে যে সব দেশে ঐ পরিকাঠামো ছাড়াই চালানো যায় সেখানে চালানোর চেষ্ট চলছে। ফলে সেই দেশগুলো এই প্রযুক্তির টার্গেট হয়ে গেলো। সে দেশগুলো আবার কৃষি প্রধান দেশ। কাজেই ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া হয়েছে তাদের প্রধান লক্ষ্য। এখানে প্রশ্ন হতে পারে, বিটি কোম্পানিগুলো প্রযুক্তির শুরু থেকে প্রথমে এই সব দূর্বল জায়গাগুলো থেকে শুরু করেনি কেন? এই কারণেই তারা দূর্বল জায়গা থেকে শুরু করেনি, এখানে সেটা আরো মারাত্মক। পৃথিবীর বেশীর ভাগ ফল সবজি এবং তাদের প্রাণবৈচিত্র্য (Biodiversity) এর জায়গা এবং অরিজিন (Origin ) (মূল উৎস) হচ্ছে এ সমস্ত দেশ। এ তথ্যটি একেবারে সঠিক। সে দিক থেকে বেগুনের আদি জন্মস্থানই (ড়ৎরমরহ) হচ্ছে বাংলাদেশ। ফিলিপাইনের কোর্ট, ভারতের কোর্ট আমাদের কথা শুনেছিলো সকল সবজির অরিজিন অব বায়োডাইভারসিটি (Origin of Biodiversity) এ সমস্ত দেশ। এ সব স্থান থেকেই বেশীর ভাগ দানা শস্য এসেছে। ধান এবং সবজি এসেছে এ সমস্ত অঞ্চল থেকে। সবজির এই অরিজিনে (Origin) কোম্পানিগুলো ঝুঁকিটা নেয় নি। এখন অন্য সব স্থানে ঠোক্কর খেয়ে শেষ পর্যন্ত এ সমস্ত অঞ্চল বেছে নিয়েছে। এটাই হচ্ছে কারণ কোম্পানিগুলো প্রথমে এখানে না আসার। আর সে কারণেই এটা (বিটিপ্রযুক্তি) আরো মারাত্মক। ঐ যে আমরা বলি লজিক অব প্রফিট (Logic of Profit) অর্থাৎ মুনাফার কাছে সকল যুক্তি ও নৈতিকতা বাতিল হয়ে যায়। সেটাই আরেক বার প্রমানিত হচ্ছে। এটা হবার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে-এখন গোটা পৃথিবী চালাচ্ছে ২০০টি বহুজাতিক কোম্পানি অর্থাৎ Global Network of Corporations। অর্থাৎ পৃথিবীর কিছু মেগা কর্পোরেশ, তারা গোটা পৃথিবীটাকে চালাচ্ছে। এটাও বৈজ্ঞানিক ভাবে দেখানো হয়েছে কি ভাবে তাদের নেটওয়ার্ক কাজ করছে। এই মেগা কর্পোরেশনের নেটওয়ার্ক পৃথিবীর সমস্ত কাজ কারবার, সেটা শক্তি উৎপাদন বলুন, খাদ্য উৎপাদন বলুন, ওষুধ, রাসায়নিক, শিল্পসহ সব কিছুই তারা করছে। এই ২০০টি মেগা কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৪০% সম্পদ। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় তারা পরস্পর প্রতিযোগিতা করে না। ফলে তারা চাইলে যেকোন সরকারকে টলিয়ে দিতে পারে। এটাই হচ্ছে তাদের ক্ষমতা। আজকে বিশ্বায়নের বিপদ রাষ্ট্রগুলো বুঝতে পারতো কিন্তু রাষ্ট্রের কিছু করার নেই। এটা রাষ্ট্রের বাইরে চলে গেছে। এই যে গ্লোবাল নেটোয়ার্ক অব কর্পোরেশনস এতে আমেরিকার স্বার্থ কোথায়? আমেরিকার অর্থনীতি একেবারে ধসে গেছে, দ্বিতীয়ত হচ্ছে ৭টি কর্পোরেশন আমেরিকাকে চালায়। তারমধ্যে রয়েছে মনসান্টো। এটাই হচ্ছে গোটা পৃথিবীর চেহারা। এই কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে ৪০টি ইউরোপে, ২০টি জাপানে, চীনে রয়েছে ১২টি কর্পোরেশন। এ কর্পোরেশনগুলো ২০০টির ক্লাবে উঠে গেছে। তারা দুনিয়াটা চালাচ্ছে। লজিক অব প্রফিট (Logic of Profit) তাদের হাতে। বর্তমানে অর্থনৈতিক দুর্দশা দেখছেন কিন্তু তাদের লাভের অংকটা বেড়েই চলেছে অপরদিকে রাষ্ট্রগুলো দেউলিয়া হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। রাষ্ট্রের রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কিছু করার নেই। আজকের বিশ্ব চিত্রটা এ রকমই। এটাকে রুখতে পারে একমাত্র তৃণমূল পর্যয়ের মানুষ। রাষ্ট্রগুলোর গদিতে যেই বসুক না কেন, তারা কর্পোরেট শক্তির কাছে আটকা। ফলে তাদের রুখতে পারার শক্তি তাদের নেই। এমনকি নিউক্লিয়ার পাওয়ারকে যদি রুখতে হয়, তাহলে সেটাও করতে পারে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ এবং তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে নিয়েই এদের রুখতে হবে।


Click Here To Print


Comments Must Be Less Than 5,000 Charachter