তামাক বিরোধী নারী জোটের জাতীয় সম্মেলন, ২০১৪ অনুষ্ঠিত
“তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতি থেকে নারীকে রক্ষা কর”এই দাবীতে ‘তাবিনাজ সম্মেলন, ২০১৪’ অনুষ্ঠিত হলো ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, উবিনীগ রিদয়পুর বিদ্যাঘর, টাংগাইলের বিষ্ণুপুর গ্রামে।
তামাকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে আক্কাচ আলীর গান পরিবেশন করছেন সকলে।
তাবিনাজ (তামাক বিরোধী নারী জোট) আয়োজিত এই সম্মেলনে বাংলাদেশের ৩৭ টি জেলা থেকে তাবিনাজ নেটওয়ার্কের নারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। যে সব জেলা থেকে প্রতিনিধিরা এসেছিলেন তাদের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরছি, যেমন-দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্দা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, পাবনা, যশোর, খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা, নরসিংদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, মযমনসিংহ, নারায়নগঞ্জ, ঝিনাইদহ, কক্সবাজার ও টাংগাইল।
তাবিনাজ সম্মেলনের বক্তব্য রাখছেন জনাব মোঃ আনিসুর রহমান মিয়া, জেলা প্রশাসক, টাংগাইল।
দিন ব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভা প্রধান ছিলেন, ফরিদা আখতার, নির্বাহী পরিচালক, উবিনীগ। প্রধান অতিথি ছিলেন মোঃ আনিসুর রহমান মিয়া, জেলা প্রশাসক, টাংগাইল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ডা. সৈয়দ ইবনে সাঈদ, সিভিল সার্জেন, টাংগাইল। সেলিমা খানম, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, টাংগাইল।
বিভিন্ন জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে সিগারেট, জর্দা ও গুলের কৌটা। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন-২০১৩'র আওতায় ধৈাঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য সংজ্ঞায়িত হয়েছে। তাই ধৈাঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য খাঁচায় বন্দি হয়ে গেছে। প্রতীকি ভাবে এখানে তা দেখানো হচ্ছে। এই ধারণাটি নেওয়া হয়েছে তামাক নিয়ন্ত্রণ সংগঠন 'প্রজ্ঞার' পোষ্টার থেকে।
উপস্থিত ছিলেন আবু কায়সার খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, টাংগাইল। কাজী গোলাম আহাদ, জেলা তথ্য কর্মকর্তা, টাংগাইল। তাইফুর রহমান, কো-অরডিনেটর বাংলাদেশ, ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস। ডা. মোঃ আব্দুল্লা আল মামুন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা। নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষক শাহানাজ বেগম, জিন্নাত আলী ও আক্কাচ আলী। দাইমা মালেকা বেগম ও সালেহা বেগম।
তাবিনাজ সম্মেলনে পোস্টার ও ছবি প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠান শুরুতেই আক্কাচ আলী, নয়া কৃষি আন্দোলনের কৃষক তামাকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে স্বরচিত গান পরিবেশন করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইদা আখতার, সমন্বক, নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা ও তামাক বিরোধী নারীজোট (তাবিনাজ)।
“ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) ( সংশোধন) আইন-২০১৩ পাস হয়েছে। ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য জর্দা, গুল, সাদাপাতা, খৈণীকে এই আইনে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে তামাক বিরোধী সংগঠন এবং তাবিনাজের আন্দোলনের ফলে। ধোঁয়াযুক্ত তামাক ব্যবহারের সময় অন্য মানুষও ভুক্তভোগী হয়। আর জর্দা, গুলের ক্ষেত্রে যে খায় তার মধ্যেই থাকে। অন্যরা সেভাবে যুক্ত হয় না। জর্দার ব্যবহারটা সামাজিক একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৌটার গায়ে সতর্কবাণী লেখা থাকলে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ সহজে বুঝবে না। তাই বাংলায় লেখা এবং ছবি দিলে বোঝা যাবে। আইনে বেশ কিছু জায়গা আছে যেগুলো আমরা ধরিয়ে দিতে পারি।
তাবিনাজ সম্মেলনে প্রতিবেদন লিখছেন মরজিনা বেগম ও নাসরিন সুলতানা
বিকেল ৫ টায় তাবিনাজ সম্মেলন, ২০১৪ সমাপ্ত হয়। সভায় তামাক রোধে কি কি করণীয় ও তামাক চাষকে নিরুৎসাহিত করতে কিভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা যায় সে ব্যাপারে দিনব্যাপী আলোচনা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. আনিসুর রহমান মিয়া সম্মেলনে ঘোষণা দেন টাঙ্গাইলে যেন কোন অবস্থাতেই তামাক চাষের বিস্তার না ঘটে সে বিষয়ে তিনি পদক্ষেপ নিবেন।