'চার কেজি আলু দিয়ে এক কাপ চা' -উবিনীগ পাঠশালায় আলোচনা


প্রতিমাসের শেষ শুক্রবার উবিনীগের নিয়মিত পাঠশালা অনুষ্ঠিত হয়। পাঠশালা শুনলে মনে হয় ছোট বেলায় যে পাঠশালায় পড়া লেখা করেছি সেই পাঠশালা। অ, আ, ক, খ শেখার পাঠশালা । না এটা সে ধরনের পাঠশালা নয়। না হলেও এটি একটি শিক্ষনীয় পাঠশালা। এই পাঠশালায় উবিনীগ কর্মীরা অনেক গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে দিনব্যাপী আলোচনা করেন। দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক বিষয় ও থাকে। এমাসে পাঠশালার বিষয় ছিল সমসাময়িক ঘটনা ও উবিনীগের ওয়েব সাইটের ফোরামে কি ভাবে যেতে হয়।

সমসাময়িক বিষয়

১. আলুর বাজার মন্দা

২. উপজেলা নির্বাচন

৩. একুশে বই মেলা

তিনটি বিষয়ের মধ্যে প্রধান্য পেয়েছে আলুর বাজার মন্দা । আলুর বাজার মন্দা নিয়ে বক্তব্য রাখেন ড. এম এ সোবহান কৃষিবিদ উবিনীগ। আলু আমাদের একটা খাদ্য শস্য। আমরা সাধারণত আলু সবজি হিসেবে ব্যবহার করি। আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকা এসব দেশে আলু হচ্ছে মূল খাদ্য। ঐতিহাসিক ভাবে আলুর একটা সম্পর্কে ছিল। ১৮৬০ সালে আয়ার ল্যান্ডে একটা ছত্রাক রোগে আলু নষ্ট হয়। তখন তিন ভাগের এক ভাগ লোক অনাহারে ক্ষুধার যন্ত্রণায় মুত্যুবরণ করে। অন্য যারা ছিলেন তারা অন্য দেশে স্থনান্তর হয়ে যায়। আলুতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেড রয়েছে। যদি খাদ্য হিসেবে আলুর পরিমাণ বাড়াই তা হলে আমাদের অভাব কম হবে। সরকারের দায়িত্ব হলো কৃষক কত পরিমাণ আলু উৎপাদন করবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয় তা হলে আলু এভাবে নষ্ট হবে না। এবং কৃষক নায্য মূল্র পাবে। ১৯৪০ সালে একটি এ্যাক্ট হয়েছিল। সেটা ছিল পাট চাষ নিয়ন্ত্রণ আইন। আইনে বলা হয়েছিল যত পরিমাণ জমিতে পাট চাষ করতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এর চেয়ে বেশি উৎপাদন করলে তা তুলে ফেলে দেয়া হবে। আলু উৎপাদনেও যদি সে রকম আইিন করে দেয়া হয় তা হলে হয়তো কৃষক এধরনের সমস্যায় পড়বে না।

গতবছরও চাহিদার তুলনায় আলুর উৎপাদন বেশী হয়েছিল। গতবারের আলু এখনো কোল্ড ষ্টোরে রয়েছে। ফলে এবারেররআলুর দাম কম। রংপুর ও মুন্সিগঞ্জের কৃষকরা আলু বিক্রি করতে না পেরে আলু রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। মিরপুর বাজারে ১ কেজি আলুর দাম ৫-৬ টাকা । তাহলে গ্রামের অবস্থা অবস্থা কি হতে পারে। কৃষক আলু তোলার জন্য শ্রমিক পাচ্ছে না। কারণ আলু যারা তোলে তাদেরকে টাকা না দিয়ে আলু দেয়া হয়। কিন্তু শ্রমিক আলু নিয়ে কি করবে। বাজারে আলুর দাম কম। অন্য জায়গায় শ্রম দিয়ে দৈনিক ৩০০শত টাকা পায়। ফলে আলু তোলার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

পলাশ বড়াল বড়াল জানান রংপুর জেলার চিলমারি উপজেলায় এক কৃষক ৪ কেজি আলু দিয়ে ১ কাপ চা খেয়েছেন। আলুর দাম এতই কম যে ৪ কেজি আলু বিক্রি করলেও ১ কাপ চায়ের দাম হয় না। যে সব এলাকায় আলু চাষ করা হয় না সে সব এলাকায় যদি সম বন্টন হতো তা হলে আলুর চাহিদা পূরণ হতো। এবং আরু নষ্ট হতো না।

শাহীনুর বেগম জানান টাংগাইলে মেয়েদের এক সম্মেলনে টাংগাইলের সিভিল সার্জন ও উপজেলা কর্মকর্তা এসেছিলেন। সিভিল সার্জন সাহেব উপজেলা কর্মকর্তাকে বলতে ছিলেন রেশন হিসেবে যদি আলু দেয়া হত তা হলে ভাল হতো। সংসদ অধিবেশনে এ প্রস্তাব দেয়া যেতে পারে । শাহীনুর বেগম আরো বলেন রংপুরে অনেক জাতের আলু আছে সে ধরণের আলু চাষ করলে কৃষক ঠিকই দাম পাবে।

জাকির হোসেন বনপাড়া চলন বিল এলাকায় অনেক পেঁয়াজ ও রসুনের আবাদ করা হয়। গতবারের পেঁয়াজের দাম বেশি দেখে এবার প্রচুর রসুন ও পেঁয়াজের চাষ করা হয়েছে। মনে হয় এবার কৃষক বেশি দাম পাবেনা। বাহির থেকে আমদানি করা হয় পেঁয়াজ ও রসুন । ফলে দেশীয় পেঁয়াজ ও রসুর বাজারে মার কায়। এটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলে কৃষকের উপকার হবে।

প্রস্তাব:

১. সরকার আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করুক।

২. বিশ্ব বাজারে আলু রপ্তানি করার ব্যবস্থা করা ।

বই মেলা: আব্দুল জব্বার এবারের একুশে বই মেলা দুই জায়গায় ভাগ করে দেয়া হয়েছে। এবার বই মেলা তেমন প্রাণ পায়নি। পুরো মেলা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বই কেনার জন্য ক্রেতারা স্টল খুঁজে পায়নি। ইন্ডিয়ান বই রিপ্রেন্ট করে বিক্রি করা হয়েছে এটা ভাল লাগেনি। বইয়ের দাম বেশি ছিল। ভাল লেখকদের কোন বই মেলায় ছিল না।

সীমা দাস সীমু: একুশে বই মেয়াল ভিড় কম থাকায় হাটা চলা করা গেছে। এটা আমার ভাল লেগেছে। তবে ইন্ডিয়ান বই বেশি ছিল। এটা ভাল লাগেনি।

উপজেলা নির্বাচন: রোকেয়া বেগম উপজেলা নির্বাচনে জেলা পার্যায়ে অনেক সমস্যা হয়েছে। লোক মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এবং লোকজনের উপস্থিতি কম ছিল।

 


Click Here To Print


Comments Must Be Less Than 5,000 Charachter