বিটি বেগুন
কেউ এড়িয়ে যাবেন না,
বিটি বেগুন কীটনাশক ব্যবহার কমাবার জন্যে নয়, কোম্পানির ব্যবসার জন্যে করা হচ্ছে!
ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের নামে এই বিতর্কিত জেনেটিকালী মডিফাইড খাদ্য ফসল ভারতের বীজ কোম্পানি মাহিকো এবং বহুজাতিক বীজ কোম্পানি মনসান্টো ভারত ও ফিলিপাইনের মতো দেশে প্রবর্তন করতে না পেরে বাংলাদেশের মতো কৃষি নির্ভর দেশে প্রবর্তন করে কৃষক, ভোক্তা এবং বাংলাদেশের কৃষির জন্য হুমকি তৈরি করছে। জেনেটিক ই্ঞ্জিনিয়ারিং করার কারন হিসাবে দেখানো হচ্ছে বেগুনের ফল ও ডগা ছিদ্রকারী পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং বলা হচ্ছে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে না। কিন্তু বিটি বেগুনে বিষাক্ত ব্যাকটেরিয়া বা বিটি জিন থাকার ফলে গাছকেই বিষাক্ত করে ফেলবে এবং বেগুনে আরও যেসব পোকা ও রোগের আক্রমন হয় তার জন্য বিষ ব্যবহার তো করতেই হবে। অথচ যে সকল বেগুনের জাতের উপর বিটি করা হচ্ছে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, বেগুনে পোকার আক্রমন তেমন হয়না তাই কীটনাশকও দিতে হয়না। কাজেই কীটনাশক ব্যবহার কমাবার যুক্তি নিছক লোক দেখানোর জন্য তা সুস্পষ্ট। একটু পিছনে ফিরে তাকালে দেখা যায়, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সরকারি সহযোগীতায় কৃষিতে কীটনাশক ছাড়া ফলন হবে না বলে, কৃষকদের কীটনাশক দিতে বাধ্য করেছিল। আজ তারাই এখন কীটনাশকের ক্ষতির কথা বলে তার চেয়ে ভয়ানক ক্ষতিকর জেনেটিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমাদের প্রাণবৈচিত্র্যপূর্ন কৃষিকে বিশাল হুমকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। মূলত এই অজুহাত ব্যবহার করে বাংলাদেশের স্থানীয় জাতের বেগুন বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান দেশীও বীজ রক্ষা করার নিয়োজিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাদের হাতে সংরক্ষন করা আছে কৃষকের হাজার বছরের লালিত বেগুনের বিভিন্ন জাত। কৃষকের পছন্দ ও চাহিদার কথা না ভেবেই সেই জাতগুলো কোন অনুমতি ছাড়াই বহুজাতিক কোম্পানিদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে পাশাপাশি বাধ্য করা হচ্ছে "নেরিকার মতো বিটি বেগুনের চাষ করতে, যা কৃষকের জন্য সর্বনাশ"।
তাই আসুন দেশ-কৃষক এবং প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় স্থানীয় বেগুনের জাত রক্ষা করি।