প্রচন্ড খরায় কৃষকের বর্তমান ফসলের অবস্থা
টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার থানার লাউ হাটি ইউনিয়নের স্বল্পলাড়ু গ্রাম ও ডামখন্ড চর, এই দুইটি গ্রামের বৈশিষ্ট হচ্ছে চর এলাকা এই দুই গ্রামের মধ্য দিয়ে ধলেশ্বরী নদী বয়ে গেছে। এই নদীর দুই পাড়দিয়ে যে সমস্ত কৃষি জমি রয়েছে সেগুলোতে এখন যেসব ফসল বপন করা হয়েছে সেগুলো হলো। তিল, কাওন, আমন ধান, ধঁইঞ্চা, পাট, নদীর পার দিয়ে কিছু লেবুর বাগান রয়েছে।
খরার কারণে করল্লার গাছ মরার মতো অবস্থা হয়েছে।
এই গ্রামের কৃষকদের সাথে খরার উপর আলোচনা করা হয়। আলোচনায় অংশগ্রহণকারী কৃষকেরা বলেন, আগের মতো আবহাওয়া আর নাই। যতদিন যাচ্ছে ততই আরো খারাপ সময় আসতেছে। আগে রোদের এতো তাপ ছিল না। মাঠে কাজ করা যেতো, এখন এমন সময় যে ১০, ১১ টার পর থেকে জমিতে কাজ করা যায় না। চর এলাকার মাটি এতো গরম হয় যে পা রাখা যায় না। আর বেশিক্ষন থাকলে মাথা ব্যথা করে। মনে হয় শরীর পুরে যায়। যার কারণে কৃষকরা দুপুর বেলায় আর মাঠে কাজ করতে পারে না।
খরার কারণে লাউ গাছের ফুল ঝরে যাচ্ছে।
বর্তমানে কৃষকের মাঠে যে ফসল রয়েছে সেগুলো খুব করুন দশা। তিল, কাওন, আমন ধান, ধঁইঞ্চা, পাট, খরার কারনে এসব ফসল বেড়ে উঠছে না। যেসব কৃষকরা খড়ার আগে মাঠে, বপন/ রোপন করেছিল সেগুলা ফসলের বীজ থেকে চারা গজিয়েছিল। যেটুকু জায়গায় জো আছে সেখানে পাটের বীজ কিছু গজিয়েছে আর যেখানে মাটির রস নাই সেখানে পাট বীজ গজায় নাই। অন্যান্য ফসলের এইক অবস্থা। আবার অনেক কৃষক জমিতে বীজ বুনছেন কিন্তু গজাচ্ছে না। বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন বৃষ্টির পর পর যদি বীজ গজায় তাহলে ভাল, তানাহলে পাট বীজ আবার বপন/রোপন করবেন যে কৃষকেরা খরার আগে পাট বপন করেছেন তাদের রোদের কারনে পাট গাছের চারা মারা যাচ্ছে। যে ক্ষেতের পাট জায়গায় জায়গায় হয়েছে আবার কোথাও হয়নি সেই জমিতে আবার বীজ বপন/ রোপন করতে হবে।
পাটের বীজ বপন করার জন্য জমি তৈরী করে রাখা হয়েছে। বৃষ্টির জন্য কৃষক অপেক্ষায় রয়েছেন পাটের বীজ বপন করার জন্য।
বর্তমান প্রচন্ড খরার কারণে ফসলের গাছ হলেও গাছের বৃদ্ধি কম হচ্ছে, চর এলাকা মাটিতে রস নাই। পানির অভাবে আঠালো মাটিগুলো শক্ত হয়ে যাচ্ছে। বালু মাটির এলাকায় ধুলো বেড়ে যাচ্ছে, ধুলোয় ফসল ঢেকে যাচ্ছে। রোদের কারণে ফসল মরার মতো অবস্থা হচ্ছে। খরার মধ্যে যে কৃষকরা বীজ বপন করেছিল সেই বীজ থেকে আর চারা গজাচ্ছেনা, যেখানে রস (জো) আছে সেই খানে সামান্য চারা গজাচ্ছে। জমির অন্যান্য জায়গায় মাটিতে রস না থাকায় ফসলের বীজ গজাচ্ছে না। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে কৃষকরা এখন কোন ফসল বুনছেন না।
খরার কারণে লেবুর বাগানে মাঝে মাঝে ১ টি ২ টি করে গাছের মরা মরা ভাব দেখা যাচ্ছে।
খরার কারনে ফসলের পাশাপাশি ফল গাছেরও ক্ষতি হচ্ছে। কাঁঠাল গাছের কাঁঠাল ঝরে পড়ছে। আমের গুটি ঝরে পড়ছে। ফল গাছের ফুল ফল ঝরে পড়ছে। বাড়ির চারপাশ, রাস্তাঘাটের গাছপালার দিকে তাকালে মনে হয় সব গাছপালা ঝিম ধরে আছে কৃষকের কথায় (ঘেনা) ধরে আছে।