নাম তার কাঁঠাল
আমরা গর্ভবতী মায়েদের সব সময় পুষ্টিকর খাবারের কথা বলি। তার অনাগত শিশু ও তার নিজের জন্য। মা যদি পুষ্টিকর খাবার খায় তা হলে একটি সুস্থ শিশু জন্ম নেবে। আমরা বলেই খালাস। কিন্তু আমরা চিন্তা করিনা কোন সময়ে বা কোন মৌসুমে কি ধরণের মৌসুমী ফল পাওয়া যায়। তবে শুধু মৌসুমী হলেই হবেনা সেটা হতে হবে দেশীয় মৌসুমি ফল। আমাদের দেশে ৬টি ঋৃতুতে মৌসুমী ফল পাওয়া যায়। এই সব মৌসুমি ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এমন একটি মৌসুমী ফলের পুষ্টি গুণের কথা বলবো যে ফলটি গরিব ধনী সবাই খেতে পারে। গ্রামে গঞ্জে অনেকে অন্যের বাড়ি থেকে চেয়ে নিয়ে ও খেতে পারেন। এই ফলটি হচ্ছে আমাদের দেশে একটি অতি পরিচিত ফল। নাম তার কাঁঠাল। জাতীয় ফল নামে সবাই জানে। এটি গ্রীস্ম মৌসুমের একটি জনপ্রিয় ফল। অন্যান্য ফলের চেয়ে কাঁঠালের দাম একটু কম বলে অনেকে গরিবের ফল ও বলে থাকে। যাই বলুক না কেন কাঁঠাল কিন্তু তেমন ফেলনা কোন ফল নয় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল হলো কাঁঠাল। কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা দু’ ভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল বা এচোড় তরকারি হিসেবে উপাদেয়। এত প্রচুর শর্করা ও ক্যালশিয়াম থাকে। কাঁঠালের বীজিও আমাদের খাবারের অন্তর্ভুক্ত। পাকা কাঁঠালে ক্যারোটিন রয়েছে। কাঁঠাল শক্তিবর্ধক। আপেল, কমলার চাইতে কাঁঠালের খাদ্য মান অনেক বেশী। কাঁঠালে আশঁ, ভিটামিন ‘এ’ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-সি ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি-৬, ভিটামিন-ই, ক্যালসিয়াম, ফলিক এসিড রয়েছে। টাটকা ফলে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, এবং লোহার (আয়রনের) একটি ভাল উৎস। পটাশিয়াম হার্টের গতি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কাঁঠালের বীজ প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং পুষ্টিকর খাবার। শুধু গর্ভবতী নয় মৌসুম ভিত্তিক ফল এই ফল সবাই খেতে পারেন। তবে পরামর্শ থাকবে গর্ভবস্থায় গর্ভবতী মায়ের যেহেতু আয়রন ও ক্যালসিয়াম, ভিটামিন‘এ, ভিটামিন-বি, ঘাটতি দেখা দেয়। সেই কারণে এই সময়ে মায়েরা বেশি পরিমানে কাঁচা কাঁঠালের তরকারি খেয়ে আয়রনে ঘাটতি পূরণ করতে পারেন অতি সহজেই। এ ছাড়াও গ্রামের মেয়েরা কচি কাঁঠালের(মুচি) অপুক্ত কাঁঠাল খোঁসা ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে কেটে সাথে তেঁতুল দিয়ে ভর্তা করে খায়। দিয়ে পাকা কাঁঠালে প্রচুর আঁশ রয়েছে ফলে পাকা কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারেন। কাঁঠালের পাতা ছাগলের প্রিয় খাবার। কাঁঠাল কাঠ দিয়ে নানা ধরণের ফার্ণিচার তৈরি করা হয়। যেমন খাট, ওয়াটড্রপ, আলনা, সোফা, ঘরের দরজা,ইত্যাদী।
সবশেষে ছোট একটি গল্প দিয়ে শেষ করছি। এক শাশুড়ি তার ছেলের বউকে কাঁঠাল খেতে বলেছে বউ রাগ হয়ে কাঁঠাল খায়নি। অবশেষে কাঁঠাল খাওয়া শেষ হয়ে গেলে শাশুড়ি বউকে কাঁঠালের খোসা ফেলে দিতে বলেন। ছেলের বউ খোসা ফেলতে গিয়ে রান্না ঘরের পেছনে কাঁঠালের বোতনা খাচ্ছে। এটা শাশুড়ি দেখতে পেয়ে বলছে সাধতে কাঁঠাল খায়না বউ পেছনে গিয়ে বোতনা চাটে।