কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াতে ফকির লালন সাঁইজীর দোল উৎসব চলছে


ফকির লালন সাঁইজীর দোল উৎসব চলছে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াতে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ বাসে চড়ে, ট্রেনে, গাড়িতে, ভ্যান গাড়ীতে এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ পায়ে হেঁটে সাঁইজীর ধামের দর্শন করতে আসেন। তারা বছরে দুবার, দোল উৎসব চৈত্র মাসের পুর্ণিমায় এবং সাঁইজীর তিরোধান (১ লা কার্তিক) উপলক্ষে, আসতে না পারলেও অন্তত একবার আসার চেষ্টা করেন। তবে এবার লক্ষ করলাম আগত ভক্তদের সংখ্যা অন্যবারের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তার একটি কারণ হতে আশে পাশের ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ার জন্যে হয়তো অনেকে আসতে পারে নি। তাঁদের অধিকাংশ একেবারে সাধারণ মানুষ, ৯০ ভাগই কৃষক, দিন মজুর, ছোট ব্যবসায়ী, ছোট চাকুরি করেন এমন মানুষ। তাদের থাকার ও খায়া দাওয়ারও কোন ব্যবস্থা সব সময় ঠিক থাকে না। ইদানীং মধ্যবিত্তদের মধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সেটা কতটা ভক্তি থেকে আর কতটা কৌতুহলের বশে এখানে হাজির হন তা প্রমাণ করতে সময় লাগবে। নবপ্রাণ আখড়াবাড়ীতে এই বিষয়টি মনে রেখে তিন বেলা সেবার সামান্য ব্যবস্থা করা হয় যাতে অন্তত প্রতি বেলায় ১৫০ থেকে ২০০ মানুষ, বিশেষ করে সাধুগুরুরা সেবা নিতে পারেন। সাধারণ খাদ্য কিন্তু নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষকদের উৎপাদিত চাল, ডাল, সব্জি, মসলা ও সরিষার তেলের বিশেষ স্বাদ এখানে পাওয়া যায়।

সাধারণ ভক্তরা ফকির লালন সাঁইয়ের গান যা জানেন তা দর্শকের সারিতে বসেও গাইতে থাকেন। নবপ্রাণ আখড়াবাড়িতে বছরের এই দুটি সময়ে বিশেষ আয়োজন করে। জাম তলার মঞ্চে সকাল ছয়টা থেকে আটটা পর্যন্ত চলে গোষ্ট গান। রাত জেগে যারা একাডেমী আয়োজিত মঞ্চের গান শুনেছেন তারাও চলে আসেন সকালে নবপ্রাণের গোষ্ট গানের আসরে। হাজার খানেক মানুষের একটা সমাগম ঘটে এই সময়ে। দেখতে খুব ভাল লাগে। তারা এই সময়ে গোষ্ট গানের ব্যাখ্যা ও নদীয়ার ভাব নিয়ে নবপ্রাণের প্রধান সংগঠক ফরহাদ মজহার যখন কথা বলেন তখন তারা মনোযোগ দিয়ে শোনেন।

তারপর একে একে তিনটি গোষ্ট গান সবাই মিলে করে, বিশেষ করে নবপ্রানের শিক্ষার্থিরা। সেই সময় মঞ্চে থাকেন সাধু গুরুরা, গুরু মা সহ আরো অনেকে। পর পর তিনটি গান, লয়ে গো ধন গোষ্টের কানন, গোষ্টে আর যাবো না মা গো, বলরে বলাই তোদের ধরণ সকলে মিলে গাওয়ার পর সাধু গুরুরা গান করেন। এই সময়টা খুব একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।