আর্ন্তজাতিক নারী দিবসে দাবীঃ শ্রমিকের স্বাস্থ্য সেবার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে


সুলতানা বেগম গার্মেন্ট শ্রমিক নেত্রী, মুক্তিসংগ্রাম গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন

আর্ন্তজাতিক নারী দিবসে শুধু নারীরা আন্দোলন করবে তা কেন হবে। ছেলে মেয়ে উভয়ে একত্রে কাজ করতে হবে তাই অনেক ভাই এখানে এসেছেন। সংবিধানে নারীর অধিকারের কথা আছে তা হলে আমরা অধিকার পাই না কেন? পোশাক শ্রমিকরা সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করেন। এরপর রাত ১০টা পর্যন্ত ওভারটাইম করেন। তাদের স্বাস্থ্যের কথা কেউ চিন্তা করেন না। নীতিনির্ধারকরা সংসদে বসে গার্মেন্ট শ্রমিকের কথা ভাবে না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে করতে চোখে অন্ধকার দেখে । তাদের অসুস্থতার কোন ছুটি নেই। কিছু কিছু গার্মেন্টে তুলা, স্যাভলোন, পারাসিটামল (নাপা) ও সেলাইন আছে এ ছাড়া কিছু নেই। কোন কোন গার্মেন্টে এসবও নেই। মাথা ব্যথা করলে পারাসিটামল খাওয়ায়ে শোয়ায়ে রাখে। আসলে কেন তার মাথা ব্যথা সেটাতো সেখানে ডাক্তার নেই যে দেখবে। ৫,৩০০ টাকা বেতনে চাকরি করে সেই শ্রমিক কেমন করে তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে? ডাক্তারের কাছে ৫০০ টাকা ফি দিয়ে চিকিৎসা নেয়ার ক্ষমতা তার নেই। শ্রমিক অসুস্থ হলে ফার্মেসী থেকে ওষুধ খায়, কবিরাজের কাছে যায়। এতে তাদের অসুস্থতা আরো বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন গার্মেন্টে কাজ করলে কোমড়ের হাড় ক্ষয় হয়, কিডনি নষ্ট হয়, চোখে কম দেখে, যক্ষা হয়, গ্যাস্ট্রিক হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৬ মাস ম্যাটারনিটি লিভ আছে। অন্য কোন সেক্টর মেটারনিটি লিভ পায় না। আমাদের দেশে বিভিন্ন বিভাগে প্রধান নারীরা রয়েছেন কিন্তু তা থাকা সত্বেও নারীরা কোন সুযোগ সুবিধা পায় না। নারীকে যেন মানুষ হিসেবে দেখা হয়। বছরের ৩৬৫ দিনই হবে মানবতার দিন। নারী দিবসে এটাই আমাদের অংগীকার হবে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যে নিশ্চয়তা দিতে হবে।

শামীমা নাসরীন, সভাপতি, স্বাধীন বাংলা গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন

স্বাস্থ্য আন্দোলন নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন। চিকিৎসা এখন বাণিজ্যিকীকরণ হয়ে গেছে। শ্রমিকরা সরকারি হাসপাতালে যেতে পারে না। সরকারি হাসপাতালে ধনীর জন্য সেবা আছে শ্রমিকের জন্য কোন সেবা নেই। শ্রমিকের জন্য হাসপাতালে একটি ইউনিট রাখতে হবে। তাহলেই হয়তো শ্রমিকরা যে কোন সময় সেখানে গিয়ে সেবা নিতে পারবে।

সাহিদা আখতার, গার্মেন্ট দর্জি শ্রমিক কেন্দ্র। এইসব বক্তব্য দীর্ঘ দিন ধরেই শনছি। এইগুলি এখন পরিবর্তন হওয়া উচিত। পরিবারে নারীরা বেশি নির্যাতিত হয়। শ্রমিকের স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার দায়িত্ব মালিকের। গার্মেন্টে যে কাজের পরিবেশ এটা স্বাস্থ্য সম্মত না। স্বাস্থ্য ভাল থাকবে কি করে। যে চেয়ারে বসে কাজ করে সেটা স্বাস্থ্য সম্মত না।

আমাদের শ্রমিকের কাজের মান অনেক ভাল। শ্রমিকের স্বাস্থ্য সেবার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে।

সালেহা ইসলাম স্বাধীন বাংলা কর্মচারি ফেডারেশনঃ

নাসরীন নামে এক শ্রমিকে মাথা ব্যথা ছিল তাকে পারাসিটামল খাওয়ায়ে শোয়ায়ে রেখেছিল। পরে সে মারা যায় । মারা যাওয়ার পর তাকে ডাক্তারের কাছে নেয়া হয়। ডাক্তার বলে সে মারা গেছে অনেক আগে। শ্রমিকরা কাঁচা পানি খায় এ কারণে তাদের ডায়রিয়া, টাইফয়েড, আমাশয় নানা ধরনের রোগ হয়। শুধু গার্মেন্ট না প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নারীরা নানা ভাবে নির্যাতিত হয়।


৮ মার্চ ২০১৬ নারী দিবস


৮ মার্চ ২০১৬ নারী দিবস


৮ মার্চ ২০১৬ নারী দিবস


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।