স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা, পুষ্টি খাত উন্নয়ন কর্মসূচী ২০১১–২০১৬


গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০১১ সালের এপ্রিল মাসের ৫ (পাঁচ) বছর মেয়াদী “স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা, পুষ্টি খাত উন্নয়ন কর্মসূচী” (Health, Population, Nutrition Sector Development Program - HPNSDP) প্রণয়ন করেন। এ কর্মসূচী ১ জুলাই, ২০১১ সালে শুরু হয়। প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৩০ জুন শেষ হবে।

এইচ পি এন এস ডি পি (HPNSDP) এর মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২২, ১৭৬.৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৮, ৬০৩.৫০ কোটি টাকা এবং বিশ্ব ব্যাংকের নেতৃত্বে দাতা সংস্থাগুলো ১৩, ৫৭৩.১৬ কোটি টাকা প্রদান করছে। স্বাস্থ্য খাতে স্বাধীনতার পরে আজ পর্যন্ত এটাই হচ্ছে সবচে বড় (মহা) পরিকল্পনা।

ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের অর্থপ্রদানকারী দাতাগোষ্ঠী কার্যক্রমের মধ্যমেয়াদী (Mid-term) পর্যালোচনা সম্পন্ন করেছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা উইং (Planning Wing) নিজস্বভাবে এ কর্মসূচীর বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করেছে।

দাতাগোষ্ঠীর পক্ষে দুই সদস্য বিশিষ্ট স্বাধীন একটি মূল্যায়ণ দল (Independent Review Team) ২০১৪ সালের ১৫ আগষ্ট থেকে ২ অক্টোবর মধ্যবর্তী মূল্যায়ণের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেন। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে উচ্চ পর্যায়ের একটি সংলাপের মধ্যে মূল্যায়ণে প্রাপ্ত তথ্য উপস্থাপন করেন। চুড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ৯ অক্টোবর ২০১৪ সালে।

মধ্যবর্তী এ মূল্যায়নে এইচ পি এন এস ডি পি (HPNSDP) এর ৯টি প্রধান বিষয়ের ওপর গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ প্রদান করা হয়। এগুলো হলো: খাতওয়ারী ব্যাপক পদক্ষেপ (Sector-Wide Approach -SWAp), স্বাস্থ্য সেবা (Health Service), স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন (Health Sector Finaning), স্বাস্থ্য খাতে জনবল (Human Resource for Hedalth), অর্থ-ব্যবস্থাপনা এবং অডিট (Financial Management & Audit), সংগ্রহ (Procuremt), নারী স্বাস্থ্যে সমতা অর্জনের দাবী এবং দায়বদ্ধতা (Gender Equity, Voice & Accontability – GEVA), নগর স্বাস্থ্য (Urban Health) এবং বর্জ ব্যবস্থাপনা (Waste Management)।

উপরোক্ত ৯টি বিষয়ের ওপর মূল্যায়ণ দল মোট ৩৫টি পরামর্শ প্রদান করে। মোট ৩৫টি পরামর্শের মধ্য থেকে বিশেষ কয়েকটি নিম্নে তুলে ধরা হলো:

  • পরামর্শগুলোর মধ্যে খাতওয়ারী ব্যাপক পদক্ষেপ (SWAp) কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও দাতাদের মধ্যে নীতিনির্ধারণী ও মূল্যায়ন সংলাপ অনুষ্ঠানের ওপর জোড় দেয়া হয়। একই সঙ্গে পরবর্তীকালে অভিন্ন কার্যক্রম (SWAp) গ্রহণের ক্ষেত্রে সাম্ভাব্যতা যাচাই ও বাস্তবতাকে বিবেচনা করে ঐক্যমতে পৌঁছার আহবান জানানো হয়েছে।

এখানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বাস্তবমুখী সহযোগী হিসাবে ভূমিকা রাখার জন্য পদক্ষেপ নিতেও বলা হয়েছে।

মূল্যায়ণদল আরও বলেছে, ভবিষ্যতে এধরণের কর্মসূচী গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক সেটআপ মূল্যায়ন হওয়া আবশ্যক।

  • স্বাস্থ্য সেবা (Health Service), খাতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য, নারী, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য (MNCH) এবং পুষ্টিকে উল্লেখ করে বলা হচ্ছে যে, এ কার্যক্রমগুলোকে অবশ্যই জোড়দার করতে হবে।

স্বাস্থ্য সেবা খাতে গুরুত্বপূর্ণ একটি পরামর্শ হলো, সংক্রমক এবং অসংক্রমক রোগ (Commucoble & Non-Commucable Disease) উভয় ক্ষেতেই স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের মধ্যে আচরণগত যে পরিবর্তন আবশ্যক তার ওপর মন্ত্রণালয়কে কৌশলপত্র তৈরী করতে হবে।

  • স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়টি (Health Sector Finaning) জরুরী। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অর্থ-মন্ত্রণালয়ের সাথে এ বিষয়ে নেগোশিয়েট করতে হবে।
  • মধ্যবর্তী মূল্যায়ণে স্বাস্থ্য জনবলের বিষয়টি (Human Resource for Hedalth) গুরুত্বসহকারে দেয়া হয়েছে। এখানে বলা হচ্ছে স্বাস্থ্য খাতে দক্ষজনবল গড়ে তোলা আবশ্যক যাদের তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং কম্পিউটার ভিত্তিক তথ্য সংরক্ষণে জ্ঞান থাকবে।

পাশাপাশি মূল্যায়ণদল মনে করেছে যে, বর্তমানে পরিবার পরিকল্পনায় এবং নারী ও শিশু স্বাস্থ্যের (MNCH) পরামর্শ প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য কর্মীদের গৃহ পরিদর্শনের যে ব্যবস্থা তা পরিবর্তন করে সেবা কেন্দ্রে আসলে সেবা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করাটা বেশী জরুরী।

  • নারীস্বাস্থ্যে সমতা অর্জনের দাবী এবং দায়বদ্ধতার বিষয়টি (Gender Equity, Voice & Accontability – GEVA) অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, এ বিষয়ে পরিকল্পনা ও কৌশলগত পদক্ষেপের দলিলগুলো চূড়ান্ত করা আবশ্যক।

প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর প্রশিক্ষণটা খুবই জরুরী। প্রশিক্ষণটা হতে হবে তরুন-তরুণীদের জন্য বন্ধুসুলভ ব্যবস্থাপনার আওতায়। একই সঙ্গে এ প্রশিক্ষণে বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং ব্যক্তিখাতে নিয়োজিত সেবা প্রদানকারীদেরও সংযুক্ত করা উচিৎ।

সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর নির্ধারণ করে তার উপযুক্ত প্রমাণ দাখিলের বিষয়টির ওপর সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোড় দিয়েছে।

মধ্যবর্তী মূল্যায়নে প্রদত্ত পরামর্শ থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে, এইচ পি এন এস ডি পি (HPNSDP) প্রণয়নকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় যে প্রেক্ষিত এবং অঙ্গীকার প্রদান করে ছিল তা অনেকাংশেই অপূর্ণ রয়ে গেছে। একই সঙ্গে এ মহাপরিকল্পনায় কয়েকটি খাতকে অগ্রাধিকার প্রদান করে বিশেষ কিছু অঙ্গীকার করা হয়েছিল।

নিম্নে এইচ পি এন এস ডি পি (HPNSDP) কার্যক্রমে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত কয়েকটি বিশেষ খাতকে তুলে ধরা হচ্ছে, যেখানে ঐ সময়কার (২০১১ ইং) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কিছু অঙ্গীকারও যুক্ত আছে।

অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতগুলোর মধ্যে নারী, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য ও কিশোরীদের স্বাস্থ্য সেবা অন্যতম। সহস্রাদ্ধ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Millennium Development Goal) অনুযায়ী বাংলাদেশ ইতোমধ্যে শিশু ও মাতৃ মৃত্যু প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বর্তমান শতাব্দীর গোড়াতে প্রতি হাজার (১০০০) জীবিত শিশু জন্মগ্রহণে ১৫১টি শিশু মারা যেত। গত ১৫ বছরের প্রচেষ্টায় শিশু মৃত্যুর এ সংখ্যা ৫৩ তে নেমে এসেছে।

এইচ পি এন এস ডি পি (HPNSDP) কর্মসূচীতে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর কারণগুলোকে খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে মাতৃ মৃত্যুর প্রথম দুটো কারণ এখনও যথাক্রমে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং একলামশিয়া (খিচুনী রোগ)।

একই কর্মসূচীতে রক্তশূন্যতা নারীদের জন্য একটি মারাত্মক ঝুঁকি বলে উল্লেখ্য করা হয়েছে। বিষয়টি অতি সত্যি। বস্তুতঃ আমাদের দেশে গভবর্তী মায়েদের ৩৯% রক্তশূন্যতায় ভুগছেন। একইসঙ্গে সাধারণ নারীদের মধ্যে থেকে ৪৬% নারীরা রক্ত শূন্যতায় ভুগছেন।

গর্ভকালীন সময়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দাই এবং স্বাস্থ্য কর্মীর পরামর্শ গ্রহণকারী মায়েদের সংখ্যা সম্প্রতি বেড়েছে। ২০০৪ সালে এদের হার ছিল ২১% (শতাংশ)। তবে ২০১০ এর পরিসংখ্যানে ৫২% দাঁড়িয়েছে। কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে ন্যূনতম ৪ বার চেকআপের যে নিয়ম তা এখনও ২৩.৪ ভাগ মাত্র।

অন্যদিকে শহর এলাকায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দাই নার্স এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন ৪৮ ভাগ গর্ভবতী নারী এবং গ্রামাঞ্চলে মাত্র ২৪ শতাংশ।

শিশু মৃত্যুর হার গণনা করা হয় প্রতি ১০, ০০০ কে একক ধরে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী (BDH 2007) প্রতি ১০০০০ শিশুর মধ্যে ৭০টি শিশু ১ বছর বয়সের মধ্যে মারা যায়। পাশাপাশি ১-৫ বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে ৫৭ জন শিশু মারা যায়। কারণ কি? এখনও পর্যন্ত শিশু মৃত্যুর প্রধান দুটো কারণ (১) বুক ও শ্বাস যন্ত্রে ইনফেকশান (AIR ২১%) এবং ডায়োরিয়া (৫%)। এ ছাড়া পুষ্টিহীনতা শিশুর জন্য একটি বড় অন্তরায়। এর কারণে অন্ধত্ব, বেড়ে না ওঠা, খর্বাকৃতি হওয়া এমনকি প্রতিবন্ধী হওয়াটাও এর জন্যে দায়ী।

শিশুদের সমন্বিত স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্যে সরকার ১৯৯৮ সালে IMCI (Integrated Management of Childhood Illness) নামে একটি কার্যক্রম গ্রহণ করে। ২০১০ সাল পর্যন্ত ৩৪৩টি উপজেলায় এ কার্যক্রম সম্প্রসারিত ছিল।

শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ভিটামিন এ এবং সম্প্রসারিত টীকা দান কার্যক্রম সফল দুটো কর্মসূচী।

সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল যে, সেবাকে উন্নত এবং মানসম্পন্ন করতে নানা ধরণের উদ্যোগ নেয়া হবে। এর মধ্যে আছে স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য সেবার জনবল বাড়ানো, নিয়মিত মনিটরিং, প্রসবজনীত কারণে নারী এবং নবজাতকদের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা।

সরকারে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি ছিল

  • দেশব্যাপী মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য সেবার পরিধি সুনিশ্চিত করা এর মধ্যে বস্তিগুলোও থাকবে। একাজে এনজিওদেরও সম্পৃক্ত করা হবে।
  • স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন স্তরের প্রতিষ্ঠান যথা-মেডিকেল কলেজ, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং স্যাটেলাইট ক্লিনিকের জনবলের দক্ষতা এমনভাবে বাড়ান হবে যাতে করে রক্তক্ষরণ ও খিচুনীর (একলাম্শিয়ার) প্রকৃত চিকিৎসা তারা করতে পারেন।

কিশোরীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা

কিশোরীদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দক্ষতার উন্নয়ন সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ একটি কাজ।

২০০৭ সালের বাংলাদেশের স্বাস্থ্য জরিপে দেখা গেছে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে দু’জনেরই বিয়ে হয়েছে ১৮ বছরের পূর্বে। ফলে ওই দু’জনার মধ্যে আবার ১ জন ২০ বছর বয়স হবার আগেই মা হয়েছেন। একই জরিপে দেখা গেছে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েদের মধ্যে শতকরা ২৭ জন মা হয়েছেন এবং আরও ৬ জন গর্ভবতী হয়েছে। কিশোরী বয়সে গর্ভবতী হওয়া বা মা হওয়া আমাদের দেশের জন্য পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই একটি বিরাট সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জ। এ কারণেই মাতৃ মৃত্যু, শিশু মৃত্যু, প্রতিবন্ধী, পুষ্টিহীনতাসহ নানাবিধ জটিল রোগের সৃষ্টি হয়।

এ সমস্যাকে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জরুরীভাবে স্বীকার করে এবং এ ব্যবস্থা অবসানে কার্যকর উদ্যোগ নিতে প্রতিশ্রুতিশীল। কিভাবে ?

  • সরকার গ্রামপর্যায় পর্যন্ত শিশুদের অসুস্থতা প্রতিকারে সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ - (Integrated Management of Childhood Illness)
  • শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের জটিলাতা দূর করার উদ্যোগ। দুটো পদক্ষেপই দেশের যেসব এলাকাগুলোতে পৌঁচ্ছান কষ্টসাধ্য সেখানেও সেবা দানকারীরা পৌঁছাবেন বলে প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
  • কিশোরী মেয়েদের এবং মায়েদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে গতিশীল উদ্যেগ।
  • মা এবং কিশোরীদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিক এবং বন্ধুসুলভ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান।
  • কিশোরীদের বাবা, মা এবং অভিভাবকদের মধ্যে ইতিবাচক, সহনাভুতিশীল আচরণ গড়ে তুলতে সহায়তা করা।
  • একাজে নিয়োজিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যসহকারী, ফ্যামিলি ওয়েল ফেয়ার ভিজিটর, নার্সদের প্রয়োজন মাফিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।

পুষ্টি এবং নিরাপদ খাদ্য

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Prganization) কর্তৃক পুষ্টিমানের ন্যূনতম যে মান ধার্যকরা আছে বাংলাদেশ জাতীয়ভাবে তার নিম্নে অবস্থান করে। এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে শিশু-কিশোর এবং মায়েদের ওপর। দেশে বয়স অনুযায়ী যথাযথ উচ্চতায় না পৌঁচ্ছান, বয়স অনুযায়ী ওজন কম, অপুষ্টি শিশু, কিশোর- কিশোরীদের হরদমই দেখা যায়। ২০০৭ সালে পরিচালিত স্বাস্থ্য জরীপে বয়স অনুযায়ী ওজন কম এমন শিশু-কিশোরদের সংখ্যা ছিল শতকরা ৩৭.৪ ভাগ অর্থাৎ দেশের যত শিশু, কিশোর এবং কিশোরীরা আছে তাদের এক তৃতীয়াংশই বয়সের তুলনায় কম ওজন সম্পন্ন। অভিন্নভাবে বয়সের তুলনায় উচ্চতা বাড়েনি এবং একারণেই ওজন কম এমন শিশু, কিশোর-কিশোরদের সংখ্যা শতকর ১৭ ভাগ। এর দুটো সরাসরি কারণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ক) জন্মের পর থেকে ক্রমাগতভাবে ন্যূনতমভাবে ৬ মাস মায়ের দুধ না খাওয়ান এবং ৬-২৩ মাস পর্যন্ত পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় খাবার শিশুরা পায় না। একই জরীপে বলা হয়েছে মাত্র ৪২ ভাগ শিশু এ সময়ে প্রয়োজনীয় খাবার পর্যাপ্তভাবে পায়। এ কারণেই মা ও শিশু উভয়েই আয়রণের অভাবে রক্তশূন্যতার ভোগে। জরিপ অনুযায়ী ৫১ ভাগ মা এবং ৪৮ ভাগ শিশু রক্তশূন্যতার শিকার।

উপরোক্ত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রর্ণালয়। স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা, পুষ্টি উন্নয়ন কর্মসূচীতে (২০১১-২০১৬) পুষ্টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। উল্লেখ্য, পুষ্টি কার্যক্রমের সঙ্গে মা ও শিশুদের সেবা প্রদানের বিষয়টি এক সূত্রে বাধা হয়েছে।

এ কাজটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের অফিস থেকে জাতীয় পুষ্টি সার্ভিস’ পরিচালনা হবে। একজন লাইন ডিরেক্টর (LD) এ কাজটি জাতীয়ভাবে সমন্বয় করেন। এ সংক্রান্ত সরকারী পরিকল্পনায় বলা হয়েছে যে, উপজেলা পর্যায়ে এ কাজ পরিচালনার জন্য একজন চিকিৎসককে দায়িত্ব প্রদান করা হবে। তিনি ওই উপজেলার যাবতীয় কাজের সমন্বয় করবেন:

  • মাইক্রো নিওট্রিমেন্ট সরবরাহ: এ কাজে শিশু ও মায়েদের বিকাশে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পরমর্শ এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন সমৃদ্ধ ওষুধ সরবরাহ করা হবে। যেমন- ভিটামিন এ ক্যাপসুল।
  • একই সঙ্গে যে উপজেলায় পুষ্টিহীন শিশু, কিশোর, কিশোরীদের বিশেষ সেবা প্রদানের ব্যবস্থা আছে তা পরিচালনা করা
  • চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি।
  • প্রশিক্ষণের ম্যানুয়েল তৈরী। উল্লেখ্য এ কার্যক্রমের আওতায় জেলা হাসপাতালের সেবা প্রদানের ক্ষমতা বাড়ান হবে।
  • মারাত্মকভাবে অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সেবা প্রদান। উপজেলা হাসপাতালের জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক এ সেবা প্রদান নিশ্চিত করবেন।
  • স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পুষ্টি বিষয়ক কার্যক্রম আছে। ফলে, বিভিন্ন কার্যক্রমকে এ কর্মসূচীর আওতায় সমন্বয় করা হবে।

নারীদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা

জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রম (National Nutrition Service -NNS) পুষ্টি বিষয়ক কার্যক্রম থেকে সুফল পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করবে।

নিরাপদ খাদ্য: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষায় নিরাপদ খাদ্য ব্যতীত স্বাস্থ্যের এ মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে নিরাপদ খাদ্য একটি চেইনে বাধা বিষয়। যেখানে নানান ধরণের তৎপরতা, প্রতিশ্রুতি, দায়বদ্ধতা ও সচেতনতা জড়িয়ে আছে। এর একদিকে উৎপাদনকারী, অন্যদিকে ভোক্তা। ফলে সবারই পারস্পরিক দায়িত্ব এটাকে সফল করতে পারা।

জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রম (NNS) এ কাজের সমন্বয় করবে এবং বাংলাদেশ কনজুমারস এ্যাসোসিয়েশন (CAB) এর সংগঠন সহযোগী হিসেবে কাজ করবে।

প্রাথমিক স্বাস্থ্য

প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যায় ধারণা স্বীকৃত হয়েছে ১৯৭৮ সালে। আলমা আটায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য সম্মেলন, ১৯৭৮ এ বাংলাদেশ ছিল অংশগ্রহণকারী একটি দেশ। ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো সম্মেলনের ঘোষণায় স্বাক্ষর করে। এ ঘোষণার সারমর্ম ছিল স্বাস্থ্য থেকে বঞ্চিত জনগোষ্টি এবং কম সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্টিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আনা। ফলে, বাংলাদেশ ১৯৭৯-১৯৮০ অর্থ বছরে ৬টি উপজেলায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান একটি প্রকল্প আকারে শুরু হয়। এ কর্মসূচীর লক্ষ্য ছিল স্বাস্থ্য সেবাকে যথাসাধ্য মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া। স্বাস্থ্য সেবা মূল্য দিয়ে কিনতে হবে এ ধারণাটাও সে সময়ই চালু হয়। তবে মূল্যটা যেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে।

ওই সময় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ৮টি উপাদান ছিল। যথাক্রমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, নিরাপদ পানি ও পয়নিষ্কাঃশন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, টীকা দান কার্যক্রম, ঘাতক ব্যাধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, সাধারণ রোগ ও সংক্রমণ চিকিৎসা এবং অপরিহার্য ওষুধ (Essential Drugs)।

পরবর্তীতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য ধারণাকে পূর্ণবিন্যাস করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বড় পরিসরে পরিবার পরিকল্পনা, এইচআইভি, এইডস্ (HIV AIDS) যুক্ত হয়েছে। আরও যুক্ত হয়েছে সংক্রামক ও অসংক্রামক ব্যাধি (Commnucable & Non-Communicable disease)।

উপজেলা স্বাস্থ্য সেবা (Upazila Health Service)

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় দেখলে উপজেলা হলো স্বাস্থ্য প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ধাপ। এটা একই সাথে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা এবং বিশেষ সেবার উপজেলা পর্যায়ে সমন্বয় করে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবী করছে যে, উপজেলা ভিত্তিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাজেট তৈরী, ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম তদারকীর যাবতীয় কাজ করতে সক্ষম।

জনসংখ্যার দিক থেকে একটি উপজেলা হাসপাতাল গড়ে ২৭০,০০০ (দুই লক্ষ সত্তর হাজার) মানুষকে সেবা প্রদান করে থাকে। উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তিন স্তর বিশিষ্ট। প্রথম স্তরে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, দ্বিতীয় স্তরে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র (কোথাও বেড আছে, কোথাও নেই) এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র (৩১-৫০ বেড)।

দূর্গম এলাকায় বসবাসরত এবং সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠী

বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪৫টি সম্প্রদায়ের আদিবাসী এবং সুবিধা বঞ্চিত মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন দূর্গম অঞ্চলে বসবাস করেন। এদের মধ্যে ৪২ শতাংশ পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা যথাক্রমে বান্দরবান, খাগড়াছড়ি এবং রাঙ্গামাটি অঞ্চলে আছেন। অন্যরা আছেন উত্তরবঙ্গে এবং উপকূলের বিভিন্ন জায়গায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় স্বীকার করছে যে, তারা অত্যন্ত দূর্গম এলাকা থাকেন এবং ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি ধারন করেন বলে সরকারী স্বাস্থ্য কর্মীরা সেখানে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্য প্রদানে অতটা আগ্রহী নন। কিন্তু তাদের শিক্ষা কম, পুষ্টিগত ঘাটতি অতিশয় বেশী। ফলে, স্বাস্থ্য সেবা তাদের জন্যে অপরিহার্য।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২০১১ - ২০১৬ সালে স্বাস্থ্য পরিকল্পনার প্রতিশ্রুতি ছিল যে, তারা সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য জেলা বোর্ডের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত এ বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা বাড়াবে। এ কাজে তারা বেসরকারী, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেবে।

প্রতিবন্ধী

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশের প্রতিবন্ধী মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে উদ্ধিগ্ন। মন্ত্রণালয় স্পষ্টত মনে করে, প্রতিবন্ধীতা দারিদ্রসহ অন্য কয়েকটি বিষয়ের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী জড়িত। যেমন, পুষ্টিহীনতা, কম ওজন নিয়ে জন্মানো। আয়োডিন ঘাটতি, ভিটামিন এ ঘাটতি, দক্ষ সেবা দানকারী সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়া। এক্ষেত্রে পরিতাপের বিষয় হলো প্রতিবন্ধীদের মধ্যে মেয়েরাই চরম দূর্ভোগের শিকার হয়। প্রতিবন্ধিতার খেসারত তাদেরই বেশী দিতে হয়। যেমন: অনাকাংখিত গর্ভধারণ, বাল্যবিবাহ, হয়রানি সহ অন্য অনেক সামাজিক সমস্যা।

পাশাপাশি সকল প্রতিবন্ধিই মনস্তাত্বিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হন।

তবে পরিকল্পনায় এদের সম্পর্কে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কোন উদ্যোগের কথা বলা হয় নি।

বয়স্কদের স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য সেবায় ৬০ বছর বা তার উর্ধ্বে যারা তাদেরই বয়স্ক চিকিৎসার আওতায় ধরা হয়। সংখ্যায় তারা শতকরা ৮ ভাগ। তবে বাংলাদেশে গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ায় এদের সংখ্যা ক্রমশই বাড়বে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনায় এদের চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানো, আর্থ-সামাজিক উন্নতির কথা বলা আছে। একই সঙ্গে বয়স্করা যাতে স্বাস্থ্য সেবার সকল পর্যায় যথাযথ সেবা পান এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে সামাজিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে একটি কর্মসূচী চালু করেছে। এ কর্মসূচীর আওতায় হাসপাতাল স্থাপনের কথা বলা আছে। এ কর্মসূচীর ইংরেজী নাম Hospital Social Service Program - HSSP । এটা সরকারী এবং বেসরকারী উভয় সেক্টরেই আছে। এখানে বয়স্কদের স্বাস্থ্যগত চাহিদা মোতাবেক সেবা প্রদান করা হয়।

ভৌগলিকভাবে অবহেলিত জনগণ

২০১১-২০১৬ সালের স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি পরিকল্পনায় চরাঞ্চল, হাওড় এবং উপকূলবর্তী যে বিশাল জনগোষ্ঠী বসবাস করেন তাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের উদ্যোগ তরান্বিত করার অঙ্গীকার আছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এ জনগোষ্ঠী সাধারণ সেবা থেকে বঞ্চিত। তারা প্রত্যন্ত এবং দুর্গম এলাকায় থাকে বলে তাদের পক্ষে প্রয়োজনের সময়ও সেবা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার সম্ভবনা খুঁজে বের করবে। একই সঙ্গে বেসরকারী সংস্থা, ব্যক্তিখাত এবং ব্যক্তিগত সামাজিক উদ্যোগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।

পেশাগত কারণে অবহেলিত এবং সামাজিকভাবে নগণ্য মানুষদের স্বাস্থ্য সেবা

পেশাগত কারণে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর লোকেরা সাধারণ স্বাস্থ্য সেবা পায় না। যেমন: হরিজন সম্প্রদায় (পরিচ্ছন্ন কর্মী), কেওড়া সম্প্রদায় (শুকর প্রতিপালনকারী)।

এ ধরণের সম্প্রদায়ের লোকেরা পেশাগত কারণে নিজেদের যেমন গুটিয়ে রাখেন, অন্যদিকে স্বাস্থ্য কর্মীরাও তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে ইচ্ছা পোষণ করেন না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করে, সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উভয় পক্ষকেই জাগিয়ে তুলতে হবে। সেবা গ্রহীতা প্রয়োজনে যেন সেবাদানকারীর কাছে আসেন। এ কাজের মধ্যে দিয়ে সমতা সৃষ্টিই মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য।

এ কাজে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচী:

  • যে জনগোষ্ঠীগুলো দূর্গম এলাকায় বসবাস করে এবং অবহেলিত তাদের ম্যাপিং করা:
  • সমাজ সেবা মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য বোর্ড এবং বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সাথে সমন্বয় বৃদ্ধির মাধ্যমে কাজ করার পরিকল্পনা;
  • স্থানীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি উদ্যোগ, ক্লাবগুলোকে এ কাজে উদ্বুদ্ধকরণ
  • সরকারী স্বাস্থ্য সেবার জনবল কম থাকার কারণে বিভিন্ন সুবিধা স্থানীয় সংগঠনগুলোর মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেয়া।

বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবা

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইতিমধ্যে জেলা পর্যায়ের সকল হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা (রোগী ধারণ সংখ্যা) বাড়ানো হয়েছে। প্রত্যেকটি জেলা সদর হাসমপাতাল ১০০ বেড থেকে ১৫০/২০০ বা ২৫০ বেডে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো এবং বিশেষায়িত হাসপাতাল, যেমন: হৃদরোল ইন্সষ্টিটিউট ডায়বেটিক হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, পিজি হাসপাতালে বেড সংখ্যা ২৫০ খেতে ১৭০০ পর্যন্ত উর্ত্তীন্ন হয়েছে।

মেডিকেল কলেজসমূহে

জেলা সদর হাসপাতালসহ সকল বিশেষ হাসপাতালগুলোতে জনবল এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে যেন রোগীরা প্রয়োজনের বাইরে ঢাকামুখী না হন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে যে, প্রধান প্রধান রোগগুলোর জন্য চিকিৎসা প্রটোকল তৈরী করা হবে যেখানে ক্লিনিক্যাল যথাযথ ইন্ডিকেটর থাকবে।

সরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় রেফারেল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা সবারই জানা আছে যে, জরুরীভাবে আনতে কোন রোগী ছাড়া, মেডিকেল কলেজ এবং বিশেষ হাসপাতালগুলো রেফারেল রোগীদেরই গ্রহণ করবে।

রেফারেল সম্পর্কটা মেডিকেল কলেজ, বিশেষ হাসপাতাল এবং জেলা হাসপাতালগুলোর মধ্যে জোড়দার করা হবে।

একইসঙ্গে রেফারেল কতটা কার্যকরভাবে পরিচালিত তা মূল্যায়ণ করার জন্য শক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।