জামদানি ও জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশান


‘জামদানি’ একই সঙ্গে ব্যবসাও বটে। বিশ্বব্যাপী বাজার সম্প্রসারণ ও ব্যবসার প্রতিযোগিতার মুখে বুদ্ধি ও শিল্পপ্রতিভা থেকে জাত আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আবিষ্কারের অর্থনৈতিক মূল্য আছে। তাই এর ওপর মালিকানা স্বত্ব দাবির প্রশ্ন উঠেছে। এই মালিকানা বা ব্যাক্তিগত সম্পত্তির বিশেষ ধরণকে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি (Intellectual Property Rights) বা মেধাস্বত্ব বলা হয়।

‘জামদানি’ কোথাকার, কাদের, তার মালিক কারা ইত্যাদি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তর্ক চলছিল অনেক দিন। মনে হচ্ছে সম্প্রতি মেধাস্বত্ব নিয়ে এই কাড়াকাড়ির অবসান ঘটেছে। আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ববিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল প্রোপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (আইপিও) নিয়ম মেনে জামদানি বাংলাদেশের বলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ধাপগুলো শেষ করেছে। জামদানিকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন—জিআই)পণ্য হিসেবে ঘোষণার পর্যায়গুলো সমাপ্ত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) এই জিআই স্বত্ব দেওয়া হয়েছে।

জামদানির উৎপত্তি ও বিকাশ বাংলাদেশে, এই দেশই তার আদিভূমি। তারই পাকাপাকি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া গেল। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে এর আগে ‘উপাধ্যায় জামদানি’ নামের একটি শাড়ির নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। ‘জামদানি’ নামযুক্ত করে ভারতের নিবন্ধন বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলো। তবে শুধু ‘জামদানি’ নামে নিবন্ধন চেয়ে কেউ দাবি করেনি।

আইপিও (IPO) থেকে বাংলাদেশের জিআই পণ্য নিবন্ধন দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত সংস্থা পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরকে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী কোনো পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশকের (জিআই) জন্য নিবন্ধন নিতে হয়।

‘প্রবর্তনা’ জামদানির স্বীকৃতি আদায়ের এই উদ্যোগের সাথে দীর্ঘদিন সক্রিয়ভাবে নানান দিক থেকে কাজ করেছে, তাই এই স্বীকৃতিকে প্রবর্তনা স্বাগত জানাচ্ছে।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।