সরিষা
Monday 30 November -0001অন্যান্য স্থানীয় নাম: সরিষা শাক (রাজবাড়ী), হাইসা শাক (টাংগাইল, মানিকঞ্জ) , হোরগা শাক (পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম) হউরা শাক (কুমিল্লা) সইস্যে রংপুর
বৈজ্ঞানিক নাম : Brassica campestris পরিবার : Brassicaceaeপ্রধান ব্যবহার :
অন্যান্য ব্যবহার :
আরো পড়ুন
উবিনীগ মাঠ গবেষণার তথ্য
মাথা ব্যথা করলে সরিষা বাটা দিয়ে গরম ভাত খেলে ব্যথা কমে যায়।
সরিষা (Mustard) Cruciferae গোত্রের দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ। এর বীজ থেকে সরিষার তেল তৈরি হয়। এর শাকও বাংলাদেশে জনপ্রিয়।
সরিষা একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এই প্রজাতির উৎপত্তিস্থল এশিয়ায়। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে সরিষা শীতকালীন শস্য (রবিশস্য) হিসাবে চাষ হয়। সরিষা গাছ সচরাচর এক মিটার উঁচু হয়, তবে রাই সরিষার (B. campestris) গাছ প্রায় ২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। মাঠে এর হলুদ ফুল খুবই আকর্ষণীয়। সরিষা মাঠে মৌমাছির চাষও বাংলাদেষে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
বাংলাদেশে Brassica napus (সরিষা) ও B. nigra (কালো সরিষা) চাষ হয়।
বাংলাদেশে ৩ ধরনের সরিষার আবাদ হয়ে থাকে। মাঘী সরিষা, রাই সরিষা ও ধলি সরিষা। সরকারী কৃষি গবেষণার মাঘী সরিষাকে উচ্চ ফলনশীল জাতে রূপান্তরিত করার ফলে আদি মাঘী সরিষার জাত পাওয়া এখন বেশ দুঃসাধ্য। মাঘী সরিষার বর্তমান নামকরণ করা হয়েছে টোরি-৭, ধলি সরিষার নামকরণ করা হয়েছে এসএস-৭৫, সফল, বারি-৯, ১১, ১৪ ও বারি ১৫। রাই সরিষা রাই নামেই রয়ে গেছে।
টোরি-৭ বিচ্ছিন্ন জাত থেকে বাছাই করে বারি নির্বাচন করেছে। এ গাছের উচ্চতা ৬- - ৭৫ সেমি। গাছ খাটো। ফুলের বোঁটা লম্বা থাকে বলে কুঁড়ির ওপর দিকে পাঁপড়ি ফুটে থাকে। ফল বা সিলিকুয়া একটু মোটা।
ফল দুই কক্ষ বিশিষ্ট। বীজ গোলাকার ও পিঙ্গল বর্ণের। হাজার বীজের ওজন ২.৬ - ২.৭ গ্রাম।বীজে তেলের পরিমান ৩৮ - ৮১%। জাতট রোগবালাই সইতে পারে।
মাঘী সরিষা নভেম্বর মাসের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে আবাদ করতে হয়। ৭৬ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে মাঘী সরিষা পেকে যায়। ধলি এবং রাই সরিষা নভেম্বরের ১০ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে বুনতে হয়। ৯০ থেকে ৯৫ দিনের মধ্যে ধলি সরিষা ঘরে তোলা যায়। রাই সরিষা পরিপক্ব হতে সময় একটু বেশি লাগে। ১১০ থেকে ১২০ দিনের আগে এ জাতের সরিষা পাকে না। তবে মাঘী সরিষা প্রায় বিনা চাষেই আবাদ করা যায়।
বিভিন্ন জাতের সরিষার বীজে৪০-৪৪% তেল থাকে। সরিষার খৈলে প্রায় ৪০% আমিষ থাকে।তাই খৈল গরু ও মহিষের জন্য খুব পুষ্টিকর খাদ্য। খৈল নয়াকৃষিতে জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে সরিষার চাষ করা হয় সাধারণত বীজ থেকে তেল উৎপাদনের জন্য, যা প্রধানত রান্নার কাজে ব্যবহূত হয়। আচার, চাটনি তৈরিতে এর ব্যবহার হয়। এছাড়া শরীরে, বিশেষ করে ছোট শিশুদের গায়ে মাখার জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়। কলকব্জার ক্ষয় নিবারণের জন্য এটির ব্যবহার আছে। সরিষার কচি পাতা ও ডগা শাক হিসেবে এবং সরিষাবাটা ইলিশ মাছের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। এছাড়া সরিষা ক্ষেত থেকে মৌমাছির আহরিত মধু অত্যন্ত সুস্বাদু। এর শুকনো গাছ ও পাতা জ্বালানি এবং খৈল গবাদি পশুর খাদ্য ও সার হিসেবে ব্যবহূত হয়।