তেলাকুচা
Friday 03 July 2015অন্যান্য স্থানীয় নাম: তেলামু পাতা (কুড়িগ্রাম)
বৈজ্ঞানিক নাম : Coccinea cordifolia / Coccinia cordifolia (L.) Cogn পরিবার : Cucurbitaceaeপ্রধান ব্যবহার :Medicine
অন্যান্য ব্যবহার :সবজি
আরো পড়ুন
উবিনীগ মাঠ গবেষণার তথ্য
তেলাকুচা একটি লতা গাছ। পাতা ও লতা গাঢ় সবুজ, নরম ও কাণ্ডবিশিষ্ট। বহু বছর বাঁচে। লতার কাণ্ড থেকে আকশি বের হয় আর তার সাহায্যে অন্য গাছকে জড়িয়ে উপরে উঠে। পঞ্চভূজ আকারের পাতা গজায়।
হাঁপানি হলে তেলাকুচার মূল ছেঁচে রস করে একটু মধু দিয়ে গরম করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
তেলাকুচা, বসতবাড়ির আশেপাশে, রাস্তার পাশে, বন-জঙ্গলে জন্মায় এবং বংশবিস্তার করে। শীতকাল ছাড়া সব মৌসুমেই তেলাকুচার ফুল ও ফল হয়ে থাকে। ফল ধরার ৪ মাস পর পাকে এবং পাকলে টকটকে লাল হয়।
তবে তেলাকুচা চাষ করা যায়। রোপন করতে চাইলে সাধারণত বাংলা চৈত্র-বৈশাখ মাসে তেলাকুচা রোপন করতে হয়। শিকড়সহ লতা এনে রোপণ করলে অতি সহজেই তেলাকুচা গাছ জন্মে। এর বীজ থেকেও চারা তৈরি করা যায়। দুই থেকে আড়াই ফুট দুরত্বে বাণিজ্যিক চাষাবাদ করা যায়। বেলে বা দোঁআশ মাটিতে ভালো চাষ হয়। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে বৃষ্টি হলে তেলাকুচার বীজ বপন করতে হয়। বীজ তলার মাটি আগে ঝুরঝুরে করে নিতে হয়। বীজ বপনের ১০-১৫ দিনের মধ্যে চারা গজিয়ে থাকে।
জন্ডিস হলে তেলাকুচার মূলের রস ২/৩ চামচ সকালে নিয়মিত খেলে জন্ডিস সেরে যায়।
পুরাতন মূল শুকিয়ে যায় না বলে গ্রীস্মকালে মৌসুমী বৃষ্টি হলে নতুন করে পাতা গজায় এবং কয়েক বছর ধরে পুরানো মূল থেকেই গাছ হয়ে থাকে।
তেলাকুচা ফলে আছে 'মাস্ট সেল স্টেবিলাইজিং', 'এনাফাইলেকটিক-রোধী' এবং 'এন্টিহিস্টামিন' জাতীয় উপাদান। কবিরাজী চিকিৎসায় তেলাকুচা বেশ কিছু রোগে ব্যবহৃত হয়, যেমন- কুষ্ঠ, জ্বর, ডায়াবেটিস, শোথ (edema), হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিস। এর ফল, পাতা ও কচি ডগা খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সর্দিজনিত জ্বরে তেলাকুচা পাতা ও মূল এক সঙ্গে থেতো করে ২/৩ চামচ রস একটু গরম করে সকাল ও বিকেলে ২ দিন খেলে জ্বর সেরে যায়।
আমাশয় হলে তেলাকুচার পাতা ও মূল একত্রে ছেঁচে রস করে ৪/৫ চামচ সকালে বিকেলে খেলে আমাশা সেরে যায়।
তেলাকুচা পাতার রস করে তার সাথে আখের গুড় মিশিয়ে প্রতিদিন এক গ্লাস করে খেলে গ্যাষ্রিউপকের উপকার পাত্তয়া যায়।
কম বয়সে চোখে কম দেখলে সেই সময় এই তেলাকুচা পাতার শাক রান্না বা ভাজি করে কয়েক সপ্তাহ খেলে চোখে ভাল দেখবে।