নুনিয়া
Thursday 08 December 2016অন্যান্য স্থানীয় নাম: নুনিয়া শাক, নুনে, নুনখড়িয়া, বুলখুরিয়া
বৈজ্ঞানিক নাম : Portulaca oleracea পরিবার : Portulacaceaeপ্রধান ব্যবহার :খাদ্য এবং ওষুধি
অন্যান্য ব্যবহার :শাক হিশেবে খাদ্য, দেহের পুস্টি বাড়াতে এবং ওষুধি ব্যবহার
আরো পড়ুন
নুনিয়া শাক একটি অনাবাদি উদ্ভিদ। একে নুনে শাকও বলা হয়। আর আরেকটি প্রচলিত নাম নুনেখড়িয়া। তবে নুনে শাকের পাতা নুনিয়ার চেয়ে একটু ছোট হয়।
নুনিয়া বা নুনে জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে আখের ক্ষেত এবং অন্যান্য মিশ্র ফসলের জমিতে হয়। নয়াকৃষি পদ্ধতির চাষে অনাবাদী শাক হিশাবে প্রচুর পাওয়া যায়। তবে আধুনিক কৃষিতে সার আর কীটনাশোক ব্যবহারের কারনে নিরাপদ শাক পাওয়া কঠিন। তারপরও কৃষকের বাড়ীর আশেপাশে কিম্বা জৈব পদ্ধতিতে চাষ করা হলে সেই জমিতে যথেষ্ট পাওয়া যায়।
নুনিয়া শাকের পাতা তেল তেল এবং রসালো। পাতা গাঢ় সবুজ রংয়ের। ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত হয়। কাণ্ড মসৃণ, লাল বা লালচে। মাটিতে বিস্তৃত কান্ড ও ডালপালা পর্যান্বিত। পাতা গিটে গিটে এবং ডগায় সাজানো। হলুদ রংয়ের ফুল ৬ মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বছরের যে কোন সময় ফুল ফোটে, তবে বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করে। পাতাগুচ্ছের মাঝখানে একটি করে ফুল ফুটে। সূর্যের আলো ফুটে ওঠার কয়েক ঘন্টা পর কয়েক ঘন্টা পরে ফুল ফোটে। ফল পাকার পরে ফেটে বীজ ঝরে পড়ে। লম্বা শিকড় মাটির গভীরে প্রবেশ করে। খরাসহিষ্ণু, কারন খরার সময় টিকে থাকে।
নুনিয়া শাক খুবই পুস্টি সমৃদ্ধ শাক। এর পাতায় রয়েছে কার্বোঅক্সালিক এসিড ও অক্সালিক এসিড, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, থাইয়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যারোটিনসহ নানান প্রয়েোজনীয় উপাদান। তাছাড়া শাকে যথেষ্ট পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড আছে, যা হৃদপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিগ্রামে ০.০১ মিলিগ্রাম ইকোচ্যাপেনটানিক এসিডও রয়েছে। পুস্টি উপাদানের বিবেচনায় নুনে শাক একটি উন্নতমানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন সমৃদ্ধ শাক। এতে রয়েছে-ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ই, এবং ভিটামিন-সি। খনিজ পদার্থের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনিসিয়াম, পটাশিয়াম এবং আয়রন। ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনিসিয়াম শরীরের হাড়কে মজবুত করে। পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ঠ অবদান রাখে।
নুনিয়া শাক প্লীহা, বৃক্কাশয় ও হৃদরোগে উপকারী। এছাড়া ডায়াবেটিস ও হাঁপানি রোগীর পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। উবিনীগের মাথ গবেষনায় দেখা গেছে চোখ উঠলে চোখে ময়লা জমার কারনে যে খোঁচা খোঁচা ভাব হয় তা সারাবার জন্য নুনে শাকের রস ৩/৪ ফোঁটা রস দেবার চল আছে। দিলে সমস্যা দূর হয়ে যায়।
এই শাক অন্যান্য শাকের সাথে মিশিয়ে ভাজি করা হয়। স্বাদ একটু লোনতা এবং টক ধরনের। এই শাকে প্রচুর পুষ্টিগুন রয়েছে। এশিয়া, ইউরোপ, মেক্সিকো এবং মধ্যপ্রাচ্যে শাক এবং সালাদ হিসেবে এই শাকের ব্যহারের উল্রেখ রযেছে। এ শাক বাঙলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্র: উবিনীগ মাঠ গবেষণা তথ্য ও ইন্টারনেট।