আন্তর্জাতিক সেবিকা (নার্স) দিবস
|| Tuesday 12 May 2020 ||১২ মে, আন্তর্জাতিক সেবিকা (নার্স) দিবস। স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে নার্সদের ভুমিকা অনস্বীকার্য। সারা দুনিয়ায় নার্সরা চিকিৎসকদের পাশাপাশি রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এবং মানুষকে সুস্থ করে তুলছেন। কোভিড-১৯ এর ভয়ানক অবস্থায় এই নার্সরাই হাসপাতাল গুলোতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এই দিনে বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠন সরকারের প্রতি কিছু দাবি তুলে ধরেছেন। যা বাংলাদেশের নার্সদের জন্যেও প্রযোজ্য। বাংলাদেশে মোট ৫৬,৭৩৩ জন রেজিস্টার্ড নার্স এবং মিডোয়াইফ আছেন। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালে নিজস্ব প্রশিক্ষণে গড়ে তোলা নার্স আছেন। কিন্তু প্রয়োজন আরও অনেক বেশি। প্রতি ১০,০০০ মানুষের জন্যে মাত্র ৩.০৬ জন নার্স রয়েছেন যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায়ও অনেক কম। একমাত্র যুদ্ধ বিধ্বস্থ আফগানিস্তাএর নার্স-জনসংখ্যার অনুপাত হচ্ছে ৩.০২, পাকিস্তানে ৫, মায়ানমারে ৯.৭৯, ভুটানের ১৫.০৯, নেপালে ২৬.৮৫, শ্রীলংকায় ২১.১৫ এবং ভারতে ২১.০৭।
কিছু মৌলিক নীতির স্বীকৃতিদানের দাবী:
১) এমন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাতে সকলের সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
২) রোগ, অসুস্থতাকে পুঁজি করে মুনাফা অর্জনের যে অধঃপতিত প্রক্রিয়া গড়ে উঠেছে, তার ইতি টানতে হবে।
৩) স্বাস্থ্যসেবাকে পণ্য আকারে উপস্থাপনের ফলে তার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে শুধুমাত্র অর্থপ্রদানে সক্ষম মানুষদের জন্য। এর আশু পরিবর্তন হওয়া জরুরী।
৪) বানিজ্য এমনভাবে হতে হবে যেন তা দেশসমূহকে মানসম্মত জনস্বাস্থ্য সেবা বর্ধনে সহায়তা করে, সীমিতকরণে নয়।
আমাদের দাবী:
১) জনস্বাস্থ্যকে ঢেলে সাজানোর জন্য সরকারকে নার্স এবং তাদের সংগঠনসমূহের সাথে কাজ করতে হবে।
২) মেধাস্বত্ত্ব সংক্রান্ত জটিলতার অবসান, বানিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি ও আইনসমূহের ক্ষেত্রে যে সকল বিধিবিধান সময়মত ও সাধ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী যেমন: জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ও চিকিৎসাকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, রোগনির্ণয়ে ব্যবহৃত যন্ত্র ও ভ্যাকসিন, ইত্যাদির সহজলভ্যতা বিঘ্নিত করে, তার অপসারণসহ যেকোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে।
৩) কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সকল দেশের গবেষণা, তথ্য-উপাত্ত, প্রযুক্তি, ওষুধ ও ভ্যাকসিন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য সকলের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া সংক্রান্ত কোস্টারিকা সরকার যে প্রস্তাব দিয়েছে তা সকলদেশের সরকারকে সমর্থন করতে হবে।
৪) বিশ্বব্যাংককে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত আর্থিক সহায়তা বেসরকারী স্বাস্থ্য শিল্পে দেয়া বন্ধ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থা (ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স অর্গানাইজেশন) সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্বের ভ্রান্ত কাঠামো অনুসরণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা খাতের যে বেসরকারিকরণ করে আসছে, তা বন্ধ করতে হবে।
৫) জনসেবায় সরকারী অর্থ বরাদ্দ কমানো এবং সরকারী খাতে মজুরী কমানোর জন্য আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থার (আইএমএফ) সরকারকে নির্দেশনা দান বন্ধ করতে হবে।
৬) সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের দাবীতে সকল ইউনিয়ন ও নাগরিক সমাজের সংগঠনসমূহ কে জনমত সংগঠিত করতে হবে।
সৌজন্যে: PSI (Public Service International)। পিএসআই ১৫৪ দেশে ৩ কোটি শ্রমিকের ৭০০ টি ট্রেড ইউনিয়নকে প্রতিনিধিত্ব করে