অনাবৃষ্টির কারণে আমন ধান চাষে বিপর্যয় কৃষকের নাভিশ্বাস
গোলাম রাব্বী বাদল/উবিনীগ || Tuesday 27 September 2022 ||চলতি বছর (২০২২) বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টি প্রসঙ্গে জানার জন্য বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরে ফোনে যেগাযোগ করা হলে—বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান বলেন, এবারের বর্ষা মৌসুমে অর্থাৎ (জুন-আগষ্ট) ভরা বর্ষাকালে সারা দেশে গড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৮% বৃষ্টিপাত কম হয়েছে।
বাংলাদেশে ৪১ বছরের মধ্যে বর্ষা মৌসুমে সবচেয়ে বেশী খরা ও তাপদাহ
আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান বলেন, গত ৪১ বছরের মধ্যে এই বছর (২০২২) জুলাই মাসে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশে এ বছরে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে অর্ধেোকরও কম। ১৯৮০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত গত ৪১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত তথা অকাল খরার রেকর্ড। এ সময়ে গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তপ্ত ছিল আবহাওয়া-প্রকৃতি। এই ভরা বর্ষা মৌসুমে জুলাই মাসে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ২১১ মিলিমিটার। কিন্তু মওসুমের এ সময় স্বভাবিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪৯৬ মি.মি। গড়ে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে ২৮৫ মিলিমিটার। চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে (জুন-আগষ্ট) অনাবৃষ্টি পরিস্থিতিতে বিভাগ অনুসারে বৃষ্টিপাত প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন—স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় ঢাকা বিভাগে ৬০.৫ শতাংশ কম, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৭.৮ শতাংশ কম, খুলনা বিভাগে ৬৪.৬ শতাংশ কম, বরিশাল বিভাগে ৬৪.৭ শতাংশ কম, রাজশাহী বিভাগে ৬১.৮ শতাংশ কম, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫২.৪ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবার এই বর্ষা মৌসুমেই (জুন-আগষ্ট) সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা ছিল বেশী। তিনি আরো বলেন,আমরা ব্যতিক্রম আবহাওয়া প্যাটার্নের মুখোমুখি হতে চলেছি।
খরা ও বন্যার কবলে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও কৃষি সম্প্রসারণ আধিদপ্তরের তথ্য মতে—জুন-আগষ্ট, ২০২২ মাসে বাংলাদেশের একদিকে অস্বাভাবিক খরা এবং অন্য দিকে বন্যার ফলে কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। সারা বাংলাদেশে এ বছরজুলাই মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৮% বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। তবে জুন মাসে পূর্ব অঞ্চলের তিন বিভাগে (সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুরের পূর্বের জেলা কুড়িগ্রাম,গাইবান্ধা) ৫৬-৬৮% অধিক বৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেখানে বন্যা হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্য সব অঞ্চলে ৩০-৪৮ % বৃষ্টি কম হয়েছে। ফলে সেসব অঞ্চলে খরা দেখা দিয়েছে। খরায় আউশ ধান ও পাট উৎপাদন ব্যহত হয়েছে।আমন ধানের বীজ তলা শুকিয়ে গেছে।
বাংলাদেশে এ যাবৎকাল খরিফ মৌসুমে ধানের ৪৫% এবং শাক-সবজির ৪০% উৎপাদন হয়। যা এ বছর ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।যার প্রভাবে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
বন্যার ফলে সম্পূর্ণ সিলেট বিভাগ, ময়মনসিংহ এবং রংপুর ভিাগের ১১টি জেলায় আমন ধান ফসল নষ্ট হয়েছে।আমন ধান বৃষ্টি নির্ভর ফসল তবে এ বছর খরার কারণে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা এবং রংপুর বিভাগের আংশিক এলাকার কৃষকরা সেচ দিয়ে আমন ধান চাষ করতে হয়েছে। সেজন্য হেক্টর প্রতি ৬০০০-৮০০০ টাকা সেচ বাবদ বাড়তি খরচ করতে হয়েছে।
সারা দেশে এই বৈরী আবহাওয়ায় আমন মৌসুমে (জুন-আগষ্ট) অনাবৃষ্টি পরিস্থিতিতে সরাসরি কৃষকদের আমন ধানের বীজতলা ও আমন ধানের অবস্থা সম্পর্কে জানার জন্য তিনটি জেলা-পাবনা, নাটোর এবং টাঙ্গাইল জেলার মোট ১৭টি গ্রামের, ৪৩ জন কৃষকের সঙ্গে সরাসরি মোবাইল ফোনে কথা কথা বলা হয়েছে। পাবনা জেলার তিনটি গ্রামের, ৫ জন, নাটোর জেলার তিনটি গ্রামের ১২ জন এবং টাঙ্গাইল জেলার ১১টি গ্রামের, ২৬জন নয়াকৃষির কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা হয়। তারা চলতি বছর ভরা বর্ষা মৌসুমে অস্বাভাবিক খরা এবং অনাবৃষ্টি জনিত কারণে আমন ধানের বীজতলা এবং আমন ধান প্রসঙ্গে বলেন—
পাবনা জেলা
বর্তমানে আমন ধানের বীজ তলা এবং আমন ধানের প্রসঙ্গে পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার টংবয়রা, পাড়াসিধাই ও হাতীগাড়া গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক-শহিদুল ইসলাম, রাশেদা বেগম, রিজিয়া বেগম, আব্দুল মজিদ, জিয়াউল হক বলেন, বর্ষা মৌসুমের শুরুতে আমরা বীজতলা করেছিলাম। তখন মাটিতে রস ছিল চারাও ভাল হয়েছিল। তারপর আর বৃষ্টি নাই তো নাই। সে সঙ্গে রোদের প্রচন্ড তাপ। তখন দিনে রাতে সমানে গরম। কিছুদিন পর চারাগুলো সব মারা যায়। তখন বৃষ্টি না হবার কারণে আমন ধান করা সম্ভব হয় নাই।
আবার শ্রাবণ মাসের শেষ দিন হঠাৎ করে অল্প পরিমাণে বৃষ্টি হয়। তখন আমরা বড় বড় খালের পারে পানি সেচ দিয়ে আবার বীজতলায় তৈরী করে চারা ফেলি। চরাগুলো খুব ভাল না হলেও মোটামুটি হয়েছে আবার কিছু মারা গেছে। খরার কারণে চারাগুলো গিট হয়ে যায়। লাগালেও সহজে গাছ বড় হয়না। সেই চারাগুলো ভাদ্র মাসের ১০ তারিখে জমিতে পাকরী আমন ধানের চারা রোপন করি। ধান রোপন করে গিয়ে চারা কম পরে। তখন ২০০০ টাকা দিয়ে চারা কিনে জমিতে রোপন করি। আমন ধান রোপনের জন্য পানি কোথায় পেলেন, জানতে চাওয়া হলে বলেন, খাল থেকে শ্রমিক দিয়ে পানি সেচ করে আমন ধান লাগানো হয়েছে। নতুন করে আমন ধান লাগানোর জন্য শুধু সেচের জন্য শ্রমিক খরচ ৩০০০/টাকা লেগেছে। বর্তমানে আমন ধানের অবস্থা জানতে চাওয়া হলে জানান-কিছুদিন পূর্বে ভেবেছিলাম, অনাবৃষ্টির কারণে এগুলো বুঝি টিকবে না। কিন্তু এখন মোটামুটি বৃষ্টি হচ্ছে ফলে নতুন করে লাগানো আমন ধানের অবস্থা এখন ভাল। তবে সব কৃষকরা এবারে বৃষ্টি না হবার কারণে আমন ধান করতে পারে নাই। আমাদের পানি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে জন্য পুনরায় আমন ধান রোপন করা সম্ভব হয়েছে।
একই সময়ে আধুনিক জাতের আমন ধানের চাষীরাও একই সমস্যায় পরেন। আধুনিক আমন ধান চাষীরা এ বছর-ব্রিধান-৭১, ব্রিধান-৭৫, ব্রিধান-৩৯, ব্রিধান-৮৭,বিনা ধান-৭ এর বীজতলা তৈরী করেছেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি নেই। প্রখর রোদে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে আমন ধানের চারা ভরা বর্ষা মৌসুমেও রোপর করতে পারছেন না। সাধারণত বীজতলায় তৈরী হওয়া চারা ২৫-৩০ দিনের মধ্যে জমিতে রোপন করা হয়। কিন্তু দেড় মাসেরও বেশী পেরিয়ে গেছে তারপরও চারা রোপন করতে পারছেন না কৃষক। (https://www.pabnareport24.com/ পাবনায় রোপা আমন ধান নিয়ে কৃষকরা বিপাকে)।
এলাকায় সেচ দিয়েই অবশেষে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ করছেন। বেশিরভাগ কৃষকেরই সেচের পানি দিয়ে আমন আবাদ শুরু করেই বাজারে জ্বালানি তেল, সার, জমি চাষ ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ঈশ্বরদী এলাকার কৃষকরা।
ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি এলাকার কৃষক আনসার আলী নিজের জমি চাষাবাদের পাশাপাশি তিনি স্থানীয় কৃষকদের জমিও তার ট্রাক্টর দিয়ে চুক্তিতে চাষ করে দিতেন। তবে এবার হঠাৎ করেই তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে তিনি বিপদে পড়েছেন। তিনি বলেন,আমাদের চাষাবাদের অবস্থা খুব খারাপ, বিশেষ করে এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জমি তেমন একটা চাষের উপযোগী হয়নি। এর পর নতুন করে তেলের দাম লিটারে বেড়েছে ৩৪ টাকা। মৌসুম শুরুর দিকেই অনেক কৃষকের সঙ্গে চুক্তি করেছি প্রতি একর জমি চার হাজার টাকায় চাষ করে দেবো। কিন্তু এখন তেলের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে এই টাকায় চাষ দেওয়া সম্ভব নয়। এখন জমি চাষাবাদ বাদ দিয়ে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
(https://www.alokitobangladesh.com/country-news/133580/ বাড়ছে আমন উৎপাদন ব্যয়, হিমশিম খাচ্ছে।
নাটোর জেলা
নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক-হাছিনা বেগম, শুকচান, রীণা বেগম এবং শুকুর আলী বলেন-বীজতলায় আমন ধানের চারা খরায় শুকিয়ে যাবার কারণে আমন মৌসুমের শুরুতে সব রকম চেষ্টা করেও শুধু বৃষ্টির পানি না পাবার কারণে আমন ধান করতে পারি নাই। পরে আবার বীজতলায় চারা তৈরী করে ভাদ্র মাসের ১৫ তারিখে কার্তিকশাইল, ধলদীঘা, পাকরী ও ভরিলটা ধানের চারা রোপর করেছি। ধান রোপন করেছি স্যালো মেশিন দিয়ে বিল থেকে পানি সেচ দিয়ে। এছাড়া আমাদের কোন পথ ছিল না। প্রথম দিকে নতুন রোপন করা চারা ধান গাছগুলো খুব ভাল ছিল না। এখন ৩ দিন হলো মোটামুটি বৃষ্টি হচ্ছে ফলে চারা ধান গাছগুলো বেশ ভাল হয়েছে।
কৃষক হাছিনা বেগম বলেন “আমি বিলে নীচু জমিতে ধলদীঘা ধান বুনে লাগিয়েছি। ধান গাছগুলো খরায় না মরে কোন রকমে বেঁচেছিল। তেমন বড় হয় নাই। এখন কয়েকদিন বৃষ্টি হচ্ছে -ধানগাছগুলো যেন ঝাপিয়ে উঠছে”। তবে গ্রামে এখন অনেক কৃষক শুধু চারা আভাবে সেচ দিয়েও লাগাতে পারছে না। এলাকায় চারা বিক্রি কেউ করছে না। অন্য দিকে কৃষকরা বেশী পরিমাণে চারা তৈরি করতে পারেনি। ফলে কুষকরা আমন ধানের চারার অভাবে পড়ে ।
নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার দাসগ্রাম ও রাজেন্দ্রপুর গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক সুরাতন বেগম, জবেদা বেগম, সূর্য বেগম আছিয়া খাতুন, মধু মিয়া, রুবেল হোসেন, মহাতাব উদ্দীন ও তোরাব আলী বলেন-আমরা শুধু নয়াকৃষির কৃষকরা নয়, গ্রামের কোন কৃষকই বীজতলায় চারা তৈরী করার পরও কেহই বৃষ্টির পানির অভাবে আমন ধান রোপন করতে পারে নাই। বীজতলাতেই সব চারা শুকিয়ে মরে যায়। এখন আবার কৃষকরা নতুন করে চারা করে নতুন করে সেচ দিয়ে রোপন করতেছে। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই চরার রোপন করেছে। বিশেষ করে এবারে সেচ ছাড়া কারও উপায় নেই যে আমন ধান করে। যাদের নীচুতে জমি তারা দেশীয় সেচ ব্যবস্থায় সেচ দিয়ে তাদের ধানগুলো কোন রকমে টিকিয়ে রেখেছে। এখন অবশ্য ৩/৪ দিন থেকে মোটামুটি বৃষ্টি হচ্ছে এই বৃষ্টির পানিতে আমন ধানের ছোট গাছগুলো ভালো হয়েছে। বাড়ন্তও ভাল।
প্রতি বছর নিচু জমিতে সাধারণত যে আমন ধানের যে জাতগুলো করা হয়ে আসছে সে সব হচ্ছে— হিদি, ধলদিঘা, কালাপাত, ভরিলটা, আজলদিঘা, কার্তিক শাইল, পাকড়ী। চলতি বছর তার মধ্য থেকে দুটি ধান হিদি ও পাকড়ী চারা করে, সেচের মাধ্যমে লাগানো হয়েছে। এলাকায় আমন ধানের এ জাত দুটি তুলনামূলক ভাবে একটু উচু জমিতেও হয়, পানি কম হলেও ফলন হয়। অন্যান্য আমন ধানের জাতগুলো ধান নিচু জমিতে বৈশাখ মাসে ছিট বুনা হয়েছিল। সেখানে সেচ দেওয়ার খুব একটা ব্যবস্থা নেই। কৃষকরা বৃষ্টি পানি অপেক্ষায় ছিল। বর্ষা মৌসুমে খরাতে পানির অভাবে মাঠের নিচু জমি ফেটে গিয়েছিল। তবে ধান গাছ দূর্বল হয়ে বেঁচে ছিল। শ্রাবন মাস থেকে মাঝে মধ্যে একটু বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে পানি না জমলেও ধান গাছ তাজা হয়েছিল। এখন দুই চার দিন বৃষ্টি হওয়ার কারণে গাছ গুলো ভাল হয়েছে। তবে মাঠের মাঝারী নিচু জমিগুলো প্রারই পতিত পড়ে আছে। কৃষকরা আশায় আছে মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলে ধান হয়ে যাবে। কমপক্ষে যেন তারা বীজ পাবে।
কৃষক সুরাতন বেগম বলেন,“আমি বিলে নীচু জমিতে বৈশাখ মাসে ৩ বিঘা পাটের জমিতে হিদি, পাকড়ী ধান ছিটিয়ে বুনেছি। পাট কেটে নিয়েছি। এতোদিন বৃষ্টি ছিলনা তখন ধানের গাছগুলো কেমন যেন ছিল। এখন ৩/৪ দিন থেকে বৃষ্টি হবার ফলে ধান গাছগুলো বড় হয়েছে এবং তবে সতেজ হয়েছে।
নাটোরের বড়াইগ্রামে ভরা বর্ষাতেও চলছে তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টি। এ রকম অবস্থায় শুধু নয়াকৃষির কৃষকরাই নয়, আধুনিক জাতের আমন ধান চাষীরাও প্রতি বছর আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির পানিতে আমন ধান রোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষক। কিন্তু এবার দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে পানির অভাবে কৃষকরা ধানের বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। কেউ কেউ সেচ দিয়ে বীজতলা তৈরি করলেও খরায় সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সময়মতো বৃষ্টির পানি না পেলে এসব জমির ধানের চারা মরে যাওয়ার আশঙ্কায় হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। এ কারণে অধিকাংশ চাষিরা অর্থ খরচ করে জমির আগাছা পরিষ্কার করাসহ ধানের পরিচর্যা করা থেকে বিরত থাকছেন। সদর ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের কৃষক আবু রায়হান মণ্ডল বলেন, মোট ৬ বিঘা জমিতে বোনা আমনের চাষ করেছি। কিন্তু গত দেড় মাস ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। এতে বেশিরভাগ জমি ফেটে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পুরো জমি থেকে ১০ কেজি ধানও পাব না। আধুনিক আমন ধান চাষীরা ব্রিধান-৭১, ব্রিধান-৭৫, ব্রিধান-৩৯ ব্রিধান-৪৯, ব্রিধান-৮৭, এর চারা করেছিলেন (https://www.jugantor.com/todays-paper/bangla-face/ বড়াইগ্রামে খরায় আমন চাষ ব্যহত)
টাঙ্গাইল জেলা
টাঙ্গাইল জেলার মুশুরিয়া গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক ওসমান গনি, লাওহাটি গ্রামের তারিকুল ইসলাম বলেন, গ্রমের সকল কৃষকরাই আমন ধানের বীজতলায় চারা তৈরী করে কিন্তু বৃষ্টির পানির না থাকা এবং প্রচন্ড খরায় বীজতলাতেই চারাগুলো শুকিয়ে মারা যায়। এখন কৃষকরা আবার সেচ দিয়ে বীজতলায় চারা তৈরী করে আমন ধান রোপন করছেন। যারা সেচের খরচ জোগাতে পারছেন না সেসব কৃষকের জমি এখন পতিত রয়েছে। সেসব কৃষকরা আগামি রবি মৌসুমের ফসল আবাদ করার প্রস্তুতি নেয়ার চিন্তা করছে। নয়াকৃষির কৃষক ওসমান গনি বলেন-তিনি তার নিজের জমিতে বৈশাখ মাসে পাটের সাথে দীঘা ধান ছিটিয়ে বুনে দেন। তিনি পাট কেটে নিয়েছেন। এখন জমিতে দীঘা ধানের গাছ রয়েছে। আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহে একদিন ভাল বৃষ্টি হয়,তখন গাছগুলো ভাল ছিল। এরপর থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বৃষ্টি নাই। দু’দিন হলো বৃষ্টি হয়েছে চারাগাছগুলো এখন বেশ ভাল হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলার নান্দুরিয়া গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক আব্দুল আলীম, জুলেখা বেগম, শারমিন আক্তার বলেন, পানি না থাকার কারণে যেটুকু আমন ধানের বীজতলায় চারা তৈরী করা হয়েছিল-সেসব অস্বভাবিক খরা এবং প্রচন্ড রোদের তাপে আর অনাবৃষ্টিতে শুকিয়ে মরে গেছে। নান্দুরিয়া গ্রামের কৃষকরা আর নতুন করে আমন ধান রোপনের চিন্তা করছে না। এ গ্রামের সকল কৃষকের জমি এখন পতিত রয়েছে। জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এলাকায় অনেক কৃষক সেচ দিয়ে হলেও আমন ধান করছে, কিন্তু আপনারা করছেন না কেন? জবাবে বলেন, নান্দুরিয়া গ্রামের মাটি বেলে প্রধান। একে তো দীর্ঘদিন বৃষ্টি নাই, মাটি রক্ষ, তার উপর বেলে মাটি হবার কারণে সেচ দিলেও জমিতে পানি থাকবে না। স্বাভাবিক বর্ষা হলে এ অবস্থার সৃষ্টি হোত না। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হতো ফলে তাতেই আমন ধান হয়ে যেতো। কিন্তু এখন আর সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হবার করণে কৃষকরা হতাশার মধ্যে রয়েছে। তাহলে আপনাদের পারিবারিক খরচাপাতি কেমন করে চালাবেন। জবাবে বলেন, আমরা বোরো ধান পেয়েছি সে ধান গ্রামের সকল কৃষকের ঘরে রয়েছে। এছাড়া এখন নান্দুরিয়া গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক এবং অন্যান্য কৃষকরা সামনে রবি মৌসুমে সরিষা, ডাল, আলু এবং সবজি আবাদ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
টাঙ্গাইল জেলার গড়াসীন গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক লতিফ মিয়া, লিয়াকত আলী, আরফান আলী,গজিয়াবাড়ি গ্রামের ছালিমা বেগম, হাছিনা খাতুন ও মো.নূরুজ্জামান,বলেন, আমরা যারা চৈত্র-বৈশাখ মাসে নীচু জমিতে পাটজাগ, ভাওয়ালিয়া দীঘা,সাদা দীঘাসহ অন্যান্য স্থানীয় জাতের ধান ছিটিয়ে বুনেছি তাদের ধান গাছগুলো ভাল রয়েছে। জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো পুরো মৌসুম জুড়ে বৃষ্টি ছিলোনা তাহলে কেমন করে আপনাদের বোনা ধান ভালো ছিল? জবাবে বলেন, আমাদের জমিগুলো নীচু এলাকায়, সেখানে অনেক ছোট বড় খাল রয়েছে, সেসব খালে পানি ছিল, সেই খাল থেকে পানি সেচ দিয়ে ধান গাছগুলো ভাল রেখেছি। এখন বৃষ্টি হচ্ছে তাতে সেসব ধান গাছগুলো আরো ভাল হয়েছে।
যারা চারা তৈরী করে আমন ধান রোপনের উদ্যোগ নিয়েছিল তাদের সবার চারা প্রচন্ড খরা আর তিব্র রোদের তাপে বীজতলাতেই শুকিয়ে মরা যায়। তবে যেখানে ডিপটিউবওয়েল রয়েছে সেখানে অবস্থাপন্ন কৃষকরা সেচ দিয়ে আমন ধান করছে। সব কৃষরারা তো পানি সেচের খরচ বহন করতে পারছে না, এখন ডিজেলের এর দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন পানি সেচের খরচও বেড়ে গেছে। আগে যেখানে প্রতি বিঘায় ১০০০-২০০০/টাকা খরচ পড়তো এখন সেখানে প্রতি বিঘা ৩০০০-৪০০০/টাকা খরচ পড়ছে।
টাঙ্গাইল জেলার বাবুপুর গ্রামের নয়াকৃষির আজহারুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন, পারুল বেগম, সুরাইয়া খাতুন, চীনাখোলা গ্রামের শাহনাজ বেগম, জাহানারা খাতুন এবং হুমায়ন বলেন, এ বছরের মতো অস্বাভাবিক খরা এবং দীর্ঘ দিন অনাবৃষ্টি আমরা দেখি নাই। বর্ষা মৌসুমে আমরা বৃষ্টির পানিতেই আমন ধান আবাদ করতাম। কিন্তু এবারে শুধু আমাদের নয় কারোই সেটা সম্ভব হয় নাই। আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টি হলে গ্রামের সকল কৃষকই আমন ধানের বীজতালায় চারা তৈরীর জন্য বীজ ফেলে। চারাও হয়। কিন্তু তারপর থেকে বৃষ্টি নেই তো নেই। অস্বাভাবিক খরা তার সাথে প্রচন্ড রোদের তাপ। চারাগুলো বীজতলাতেই শুকিয়ে মরে গেল। বৃষ্টি যে একেবারে হয়নি তেমন নয়, এমন বৃষ্টি হয়েছে যে বৃষ্টিতে মাটিই ভিজে না। আমাদের জমিগুলো উঁচুতে ডিপটিউবওয়েও রয়েছে। ডিপটিউবওয়েলের সেচের পানিতে অনেকে আমন ধান করছে। কিন্তু ডিপটিউবওয়েলের সেচের খরচ এতো বেড়ে গেছে সেটা জোগান দিয়ে আমন ধান করতে হলে পথে বসতে হবে। এই সময়ে বাড়ির আশ পাশে বাড়ি থেকে পানি সেচ দিয়ে বেগুন, মরিচ, ভেন্ডি, ডাটা আবাদ করেছি। এখন আমরা সামনে রবি মৌসুমের ফসল আগুর ফসল করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
টাঙ্গাইল জেলার মৌশাকাঁঠালিয়া গ্রামের নয়াকৃষির রূপসী বেগম, আটিয়া গ্রামের মো. আরজু মিয়া, সালিমা খাতুন, জাঙ্গালিয়া গ্রামের সালমা বেগম, মামুদপুর গ্রামের নূরজাহান বেগম, বানেচ উদ্দিন ও রিনা বেগম, এবং হিংগানগর গ্রামের আমিনূর রহমান বলেন, এবছর মাত্রাতিরিক্ত খরা হয়েছে। যে টাঙ্গাইলে আকাশে মেঘ দেখা দিলেই বৃষ্টি হয় সেখানে এ বছরবর্ষা মৌসুমে অস্বভাবিক খরা। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলে এতো তাপ থাকতো না। এই খরার মধ্যেও মাঝে মাঝে মধ্যে এমন বৃষ্টি হয়েছে যে, মাটিই ভিজে নাই। মৌশাকাঁঠালিয়া গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক রূপসী বেগম বলেন, গত বছর ঢলের পানিতে সএলাকার সব জমি পানায় ভরে যায়, সব ধান ডুবে যায়। আর এ বছর এমন অস্বাভাবিক খরায় মানুষ ধান লাগাতেই পারে নাই। যারা রোপা আমন করে তাদের চারা ধান গাছ বীজতলাতেই শুকিয়ে মরে য়ায়। আমি আমার নীচু জমিতে বৈশাখ মাসে চামারা, দীঘা, লাল বাওয়ইলা ধানের বীজ ছিটিয়ে বুনেছি। মাঝে মধ্যে খাল থেকে পানি সেচ দিয়ে কোন রকমে টিকে রাখছি। এগুলো সবই বেশী পানির ধান, তেমন একটা বাড়ে নাই। এখন ক’দিন হলো বৃষ্টি হচ্ছে আমার ধান গাছগুলোর চেহারা ফিরছে। যারা রোপা ধান করতে পারে নাই, তারা এখন ডিপের পানি সেচ দিয়ে, পাট জাগ, সাদা ঢেপা এবং নম্বরি ধান লাগাচ্ছে।
আটিয়া গ্রামের মো. আরজু মিয়া, সালিমা খাতুন, জাঙ্গালিয়া গ্রামের সালমা বেগম বলেন, আমরা খুবই কষ্টে আছি। আমন ধানই আমাদের প্রধান ফসল সেটা এবছর অস্বাভাবিক খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে করা সম্ভব হয় নাই। এখন অন্যান্য কৃষকের মতো আমারও অল্প পরিমাণ জমিতে ডিপটিওবওয়েলে পানি সেচ পাটজাগ ধান করতেছি। এবছর ডিজেল তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সেচ খরচও বেড়ে গেছে। এবছর প্রতি বিঘা (৩৩শতক) সেচ দিতে ৪০০০/ টাকা লাগছে। এটা আমাদের জন্য কষ্ট কিন্তু বাঁচতে হবে প্রথম। পাশাপাশি রবি মৌসুমে ডাল, সরিষা, সবজি আবাদের প্রস্তুতির কাজও এগিয়ে নিচ্ছি।
মামুদপুর গ্রামের নূরজাহান বেগম, বানেচ উদ্দিন, রিনা বেগম বলেন, মামুদপুর নিচু এলাকা। এ গ্রামের কৃষকরা চামাড়া,লাল ঢেপা, সাদা ঢেপা, ঝুল ধান বৈশাখ মাসে ছিটিয়ে বুনে দিয়েছি। প্রচন্ড খরা এবং অনাবৃষ্টিতে ধান গাছ খারাপের দিকে যাচ্ছিল তখন খালের পানি সেচ দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে।এখন ৩/৪ দিন হলো বৃষ্টির পানি পাওয়ায় ধান গাছগুলো বেশ ভাল হয়েছে। মামুদপুর গ্রামের পাশেই নদী। যাদের নীচুতে জমি নাই কিন্তু নদীর পাশেই জমি রয়েছে,তারা এখন স্যালো মেশিন দিয়ে নদী থেকে পানি সেচ দিয়ে রোপা আমন করছে। যারা স্যালো মেশিন দিয়ে রোপা আমন করছে সেসব বেশীর ভাগই নম্বরি ধান।
হিংগানগর গ্রামের আমিনূর রহমান বলেন, এবছরের মতো খরা এবং গরম আমি দেখি নাই। আমরা প্রতি বছরই আমন ধান বর্ষার পানিতে করি। কিন্তু এ বছর এমন অবস্থা যে ধানের চারা বীজতলাতেই মারা যায়। আমার বেশীর ভাগ জমিই ডিপের স্কীমের মধ্যে পরেছে। আমন মৌসুমে ডিপ বন্ধ থাকে। শুধু বোরো মৌসুমে চলে। এবারে প্রচন্ড খরা হওয়া সত্ত্বেও আমন ধান লাগানোর জন্য ডিপ চলে নাই বন্ধ ছিলো। কারণ, হঠাৎ করে ডিজেল তেলের দাম বেড়ে গেছে। কৃষকরা সেচের বেশী দাম দিতে রাজী ছিলো না। ফলে ডিপ বন্ধ ছিল। শ্রাবণ মাসের শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা বাধ্য হয়েই ডিপের সেচে মূল্য বিঘা প্রতি বেশি দিতে রাজি হওয়ায়। ডিপ চালু হয়। সে সুবাদে আমিও নতুন করে রোপা আমন চামারা ও পাটজাগ ধানের আবাদ করেছি। গাছগুলো ভালই হয়েছে। এখন ৩/৪দিন হলো মোটামুটি বৃষ্টি হচ্ছে। এরকম বৃষ্টি হলে আশাকরা যায় ডিপের সেচেরে পানি লাগবে না। তখন আমাদের কিছুটা সাশ্রয় হবে।
যা’হউক আমরা অনেক আর্থিক ও শারিরীক কষ্ট করে নতুন করে যে আমন ধান রোপন করলাম। সেটা শেষ পর্যন্ত ঘরে না আসা পর্যন্ত কৃষকদের স্বস্থি নেই। কারণ টাঙ্গাইল নীচু এলাকা এ বছর বাদে প্রতি বছরই বন্যা হয়েছে। এখন বন্যা হবার সম্ভাবনা যে নাই সেটা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
টাঙ্গাইলে আধুনিক ধান চাষীও ভরা বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে জমিতে রোপা আমন লাগাতে পারছেন না তারা। তারসঙ্গে সার ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। আধুনিক জাতের ধান চাষে খরচ বাড়ায় টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় রোপা আমন চাষ নিয়ে দুচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। দেলদুয়ার উপজেলার- লাউহাটি, পাথরাইল, এলাসিন, গড়াসিন, গজারিয়া ডুবাইল কৃষকরা অনাবৃষ্টির কারণে রোপা আমন ধান চাষ করতে পারছেন না। অপরদিকে বর্ষার ভরা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হচ্ছে। সেখানেও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যুতের লোডশেডিং কৃষকদের আরও দুশ্চিন্তায় পড়তে হচ্ছে। রোপা আমন আবাদে অতিরিক্ত খরচ হিসেবে যোগ হচ্ছে সেচ খরচ। এ রকম অবস্থায় অনেক কৃষক বলেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে ধানের দাম না বাড়লে আমাদের চাষাবাদ ছেড়ে দিতে হবে। (https://www.deltatimes24.com/details.php?id=95148)।
প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ—
কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাদের বক্তব্য থেকে জানা যায়ঃ
১। চলতি বছর ২০২২ সনে ভরা বর্ষা মৌসুমে অস্বাভাবিক খরা এবং অনাবৃষ্টির কারণে আমন ধানের বীজ তলায় চারা গাছ প্রচন্ড রোদের তাপে শুকিয়ে মারা যায়।
২। যে সকল নয়াকৃষির কৃষক বৈশাখ মাসে স্থানীয় জাতের আমন ধানের বীজ ছিটিয়ে বুনেছেন এবং কষ্ট করে রক্ষা করেছেন-তারা এই বিরূপ প্রাকৃতিক আবহাওয়ার মধ্যেও আমন ধানের আশা করছেন।
৩। অনেক রোপা আমন ধান চাষী তাদের ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও জীবন-জীবিকা টিকিয়ে রাখার তাগিদে ডিপটিউবওয়েলের সেচের পানি নিতে বাধ্য হয়েছেন।
৪। সে সকল নয়াকৃষির কৃষক এবং অন্য কৃষক ডিপটিউবওয়েলের সেচের পানির খরচ বহন করতে পারেন নাই তাদের অনেকের জমি পতিত রয়েছে।
৫। অনেক রোপা আমন ধান চাষী খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে রোপা আমন ধান চাষ করতে না পারায়, তারা বিকল্প ফসল হিসাবে নিজ বাড়ীর আশ-পাশের জমিতে বাড়ী থেকে চাপ কলের পানি সেচ দিয়ে সবজী চাষ করেছেন।
৬। এখনও গ্রামে স্থানীয় জাতের আমন ধানের বীজের সংকট রয়েছে। বিশেষ করে যারা নম্বরি ধান বা হাইব্রিড ধান আবাদ করেন তারা আবহাওয়া জলবায়ুর খোজ-খবর রাখেন না তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশী।