মনসান্তোর বিরুদ্ধে কৃষকের প্রতিবাদ ২০১৭
বাংলাদেশের কৃষক বিটিবেগুন চায় না
২০ মে ২০১৭। আজ দুনিয়াজুড়ে মনসান্তোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ বা March Against Monsanto 2017 অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশেও এই প্রতিবাদ হচ্ছে। টাঙ্গাইল ও পাবনার গ্রাম পর্যায়ে নয়াকৃষি আন্দোলনের উদ্যোগে নারী পুরুষ মিলিয়ে প্রায় ৫০০ কৃষক সকাল ১০টায় প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। টাঙ্গাইলে সিলিমপুর বাজারে ১৩টি গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক এবং পাবনার টংবয়রা গ্রামে ৫টি গ্রামের কৃষক একত্রিত হন। টাঙ্গাইলে কৃষক আক্কাস আলী মনসান্তোর কার্যকলাপ নিয়ে গান পরিবেশ করেন। মনসান্তোর কার্যকলাপের মধ্যে জবরদস্তি বিটিবেগুন চাষ ও বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে কৃষকরা বিশেষ ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বিটি বেগুন নিয়ে মাঠপর্যায়ের গবেষণা লজ্জাজনক ভাবে ব্যর্থ হবার পরেও সফল বলে প্রপাগান্ডা চালানো, কৃষকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া, কৃষকের আর্থিক ক্ষতি হলেও এই বীজ দেয়া অব্যাহত রাখা ইত্যাদি কুকর্মের বিরুদ্ধে কৃষকরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
টংবয়রা গ্রামের একজন কৃষক দুইবছর আগে বিটি বেগুন চাষ করেছিলেন, কিন্তু তিনি আর এই বেগুন চাষ করেন নাই, কারন এর ফলন যেমন ভাল নয়, অন্যদিকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য বিটিবেগুন ক্ষতিকর। জবরদস্তি সরকারের সহায়তায় সারা দেশে বিটিবেগুনের বীজ দেওয়া হচ্ছে অথচ এর ক্ষতির দিকগুলো নিয়া চিন্তা করছে না। কৃষকরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেন, মনসান্তোর মতো বহুজাতিক কোম্পানি ক্ষুদ্র কৃষকের অধিকার হরণ করছে এবং তাদের বীজ রক্ষার অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করছে।
তারা শ্লোগান তোলেন মনসান্তোর বীজ চাই না, বিটি বেগুন চাই না, দেশীয় বীজ রক্ষা করো।
টাঙ্গাইলে সিলিমপুর বাজারে ১৩টি গ্রামের নয়াকৃষির কৃষক মনসান্তোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কৃষক ও ভোক্তাদের মনসান্তোর কুকর্মের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করা এবং বিশ্বব্যাপী মনসান্তোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সংহতি জানানো।
নয়াকৃষির কৃষকরা প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর চাষাবাদ করেন এবং কোন প্রকার বিষ ব্যবহার করেন না। তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন দেশীয় বীজের ওপর কোন প্রকার হস্তক্ষেপ তারা সহ্য করবেন না। তাঁরা দৃঢ়তার সাথে তাদের বীজ রক্ষার আন্দোলনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। কৃষকের অধিকার হরণ, মাটি ও পরিবেশ নষ্ট করা এবং মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করা গণহত্যার মতোই অপরাধ। তাই মনসান্তো কোম্পানির বিচার দাবী করেন কৃষকেরা।