প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আসন্ন ২০১৬-১৭ বাজেটে সকল তামাক পণ্যের উপর উচ্চহারে করারোপের দাবি
মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী অবিলম্বে তামাকের বিদ্যমান জটিল শুল্ক-কাঠামোর পরিবর্তে কার্যকর তামাক শুল্কনীতি প্রণয়ন এবং আসন্ন বাজেটে সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের খুচরা মূল্যের উপর সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ ট্যাক্স আরোপের দাবিতে তামাকবিরোধী নারী জোটের আয়োজনে মঙ্গলবার ১২ এপ্রিল, ২০১৬ তারিখে বেলা ১১ টা থেকে ১২ টা পযর্ন্ত ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ২৪টি জেলায় জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি স্বারকলিপি প্রদান করেন তামাক বিরোধী সংগঠনসমূহ। বাগেরহাট, যশোর, বরিশাল, সাতক্ষীরা, টাংগাইল, রাজবাড়ি, বরগুনা, মাগুড়া, নড়াইল, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, নারায়নগঞ্জ,মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ
বাংলাদেশে ৪৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করেন, যার মধ্যে ২৩ শতাংশ (২ কোটি ১৯ লাখ) ধূমপানের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার করেন। আর ২৭ দশমিক ২ শতাংশ (২ কোটি ৫৯ লাখ) ব্যবহার করেন ধোঁয়াবিহীন তামাক। বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের প্রায় ৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরী তামাকপণ্য ব্যবহার করে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ মানুষ অকালে মৃত্যু বরণ করে। তামাকখাত থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পায় তামাক ব্যবহারের কারণে অসুস্থ রোগীর চিকিৎসায় সরকারকে স্বাস্থ্যখাতে তার দ্বিগুন ব্যয় করতে হয়। এভাবে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে দেশ। সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন’ শীর্ষক সাউথ এশিয়ান স্পিকারস সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তামাকের উপর বর্তমান শুল্ক-কাঠামো সহজ করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
মানববন্ধনের দাবী:
১. অবিলম্বে তামাকের বিদ্যমান শুল্ক-কাঠামোর পরিবর্তে কার্যকর তামাক র্শুকনীতি প্রণয়ন করতে হবে। মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কার্যকর শুল্কারোপের মাধ্যমে প্রতিবছর তামাকপন্য্যের দাম বাড়াতে হবে যাতে তামাকপন্য ক্রমশ: ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়।
২. সিগারেটের মূল্যস্তরভিত্তিক কর-প্রথা বাতিল করে প্যাকেট প্রতি খুচরা মূল্যের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ পরিমান স্পেসিফিক এক্সাইজ ট্যাক্স নির্ধারণ করতে হবে।
৩. বিড়ির ট্যারিফ ভ্যালু তুলে দিয়ে প্যাকেট প্রতি খুচরা মূল্যের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ পরিমান স্পেসিফিক এক্সাইজ ট্যাক্স নির্ধারণ করতে হবে।
৪. জর্দা গুরের ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ পরিমান স্পেসিফিক এক্সাইজ ট্যাক্স নির্ধারণ করতে হবে।
৫. তামাকের ওপর আরোপিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ১ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ২ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে।