বিশ্বব্যাপি ডেঙ্গুর প্রকোপ
এম. এ. সোবহান || Wednesday 14 August 2019 ||বিশ্বব্যাপি ডেঙ্গু আজ একটি আতঙ্কের নাম।কয়েক দশক আগেও মাত্র নয়টি দেশে বিচ্ছিন্ন ভাবে ডেঙ্গুর বিস্তার ছিল। কিন্তু আজ বৈশ্বিক জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ডেঙ্গু আক্রমণের আশঙ্কায় আছে। প্রধানত ট্রপিক্যাল এবং সাব-ট্রপিক্যাল অঞ্চলের মানুষ ডেঙ্গ আক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন। দ্রুত নগরায়নের ফলে ডেঙ্গর প্রকোপ বাড়ছে।
ডেঙ্গুর লক্ষণ:
প্রচন্ড পেট ব্যথা। ঘন ঘন প্রশ্বাস। উচ্চ মাত্রার জ্বর বার বার বমি। অস্থিরতা। শরীরে অবসতা। লিভার বেড়ে যাওয়া।
দিনে দিনে বিশ্বব্যাপি ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জনিত রোগ। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ভয়ের বিষয় হলো এই যে, আজ পর্যন্ত এর কোন ভ্যাকসিন বা ওষুধ আবিস্কার হয়নি।
ডেঙ্গুর সতর্কতা:
সাধারণ ভাবে ডেঙ্গুকে মেরুদন্ডের জ্বর বলা হয়। এ জ্বরে আক্রান্ত প্রায় ৮০% ক্ষেত্রে মৃদু লক্ষণ প্রকাশ পায়। শতকরা ৫ ভাগ ক্ষেত্রে স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায়। মাত্র একভাগ ক্ষেত্রে মারাত্মক লক্ষণ দেখা যায়। মারাত্মক ক্ষেত্রে দ্রুত প্লাটিলেট কমে যায়। রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে। রক্তচাপ দ্রুত কমে যায়। শরীরের তাপমাত্রাও কমে যায়। সেই সঙ্গে আরো কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন:
১. প্রচন্ড পেট ব্যথা
২. ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস
৩. উচ্চ মত্রায় জ্বর
৪. প্রচন্ড বমি
৫. অস্থিরতা
৬. অবসাদ
৭. লিভার বেড়ে যায়
ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার:
ডেঙ্গু জ্বরের এখনও কোন ভ্যাকসিন বা ওষুধ আবিস্কার হয়নি। তবে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কারণ অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীরে পানি শূণ্যতা দেখা দেয়। এ অবস্থায় প্রচুর পরিমাণে পানি এবং অন্যান্য তরল খাবার গ্রহণ করতে হয়। বার বার পানি পান করতে হয়। প্রচুর পরিমাণ পানি বা তরল খাবার গ্রহণের ফলে মাথা ব্যথা কমে যায়। ডেঙ্গু ভাইরাস আক্রমণের ফলে শরীর বিষাক্ত হয়। পানি এবং তরল খাবার গ্রহণের ফলে প্র¯্রাবের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে শরীর থেকে বিষাক্ত বর্জ দ্রুত বেড়িয়ে যায়
রোগমুক্তির পথ প্রশস্ত হয়। পানির সাথে আরো কিছু ভেষজ যেমন, পেঁপে পাতা, তুলসি পাতা, নীম পাতা, বাসক পাতা, গুলঞ্চ লতা, লেবু, কমলা, মালটা পান করলে দ্রুত আরোগ্য লাভ হতে পারে। উল্লেখিত পাতা/লতা/ফলের রস টেবিল চামচের দুই চামচ দিনে তিন বার সেবন করতে হবে। সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
সাধারণ ভাবে ডেঙ্গু কোন মারাত্মক রোগ নয়। তবে অসাবধানতার কারণে ডেঙ্গু মারাত্মক হতে পারে। রোগের লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত প্লাটিলেট মাত্রা চেক করতে হবে।
প্রতিকার:
এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু ভাইরাস বিস্তার হয়। রোগের বিস্তার ঘটে। মশার কামড় থেকে রক্ষার জন্য
১. ফুলশার্ট, ফুলপ্যান্ট এবং সাড়া শরীর ঢেকে পোশাক পড়তে হবে।
২. মশা তাড়ানো লোশন শরীরে ও কাপড়ে ব্যবহার করতে হবে।
৩. ঘরে বাইরে এডিস মশার বংশ বিস্তারের উৎস বন্ধ করতে হবে।
৪. মশা প্রবন এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে।
সর্বোপরি, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, সুস্বাস্থ ও সুখী জীবন নিশ্চিত করে সমৃদ্ধ জাতি গঠনে অঙ্গিকার বাস্তবায়ন করতে হবে।