আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের খসড়া বাজেট ঘোষিত হয়েছে গত ১ জুন তারিখে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি বলে আমরা অনেকে চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু, অর্থমন্ত্রী হিসেবে বাজেট ঘোষণা তিনি নিজেই তো দিয়েছেন। এবার বাজেটের পর যেসব প্রতিক্রিয়া এসেছে, তার মধ্যে বেশি করারোপের ওপরই হয়েছে; কিংবা বলা যায় ম্যাক্রো-ইকোনোমিক বিষয়ে অর্থনীতিবিদরা মাথা ঘামিয়েছেন। সেটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
আমি কৃষি খাতের বাজেট নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম না, কারণ কৃষি বাজেট থেকে ক্রমশ কৃষক হারিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষণ বিগত কয়েকটি বাজেট থেকেই পাচ্ছিলাম। এবার কৃষি, খাদ্য এবং মৎস ও প্রাণিসম্পদ খাতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৫,৩৭৪ কোট (আরো পড়ুন )
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচের পানি সরবরাহের বিষয়টি বোঝা খুব জরুরি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই সেচ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। অভিযোগ রয়েছে যে বিএমডিএর গভীর নলকূপের অপারেটররা কৃষকদের জিম্মি করে বোরো ধান চাষের জন্য বিঘাপ্রতি দেড় থেকে তিন হাজার টাকা নিচ্ছেন। কৃষকদের টাকা দিতে বাধ্য করা হয়, অন্যথায় পানি দেয়া হয় না।
এখন বোরো ধানের সময়। হাওর ও নিচু অঞ্চল ছাড়া সারা দেশে বোরো ধান সেচের পানি ছাড়া উৎপাদন করা যায় না, এই কথা কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট না হলেও কম-বেশি সবাই জানেন। এই সময় গ্রামে গভীর নলকূপে পানি তোলার শব্দ খুব কানে বাজে। আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে যারা চাষ করে তাদের জমিতে সেচের পানি দেয়া হয়। ধানের দুটি মৌসুম থেকে ত (আরো পড়ুন )
যদিও দিল্লিতে তিনটি রাজ্যের কৃষকরা এসেছেন, তার মানে এই নয় যে ভারতের অন্য রাজ্যের কৃষকরা এই তিনটি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন না। আসলে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে সারা ভারতবর্ষে। দিল্লিতে সকলের পক্ষে আসা সম্ভব নয়। দিন যতই যাচ্ছে এবং সরকারের অনমনীয় আচরণের কারণে কৃষকদের প্রতি সমর্থনও বাড়ছে। বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলও কৃষকদের দাবি সমর্থন করছে।
ঈশ্বরদী উপজেলার পাড়াসিধাই গ্রামে নয়াকৃষি কৃষক সালেহার বাড়িতে অনুষ্ঠিত কৃষকদের সভায় এবারের শিমের চাষ কেমন হয়েছে আলোচনা করা হয়। কৃষক যে কোন একটি ফসলের মৌসুমকে কেন্দ্র করে নিয়মিত বসেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে পর্যালোচনা করেন। একে অপরকে পরামর্শ দেন, সে অনুযায়ি সমাধানের চেষ্টা করেন। পাড়াসিধাই গ্রাম মূলত সব্জি চাষের গ্রাম। এই মৌসুমে তাদের প্রধান ফসল শিম। বাণিজ্যিক ভাবেই চাষ হয়। মাঠের পর মাঠ শুধু সীম দেখা যায়। আগের বারে বর্ষা না হবার কারণে প্রায় এক বছর ধরে এলাকা থেকে আমন ধানের আবাদ প্রায় উঠে গেছে। কৃষকরা বাধ্য হয়ে দুটো পয়সার জন্য অটো এবং রূপভান শিমের আবাদ শুরু করছিলেন। ক’ বছর ধরে ভালই লাভ হচ্ছিল। নিজেদের হাতে বীজ রেখে শিমের আবাদ কর (আরো পড়ুন )
টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় বন্যার কারণে অধিকাংশ কৃষকের ধান তলিয়ে গেছে। শুধু স্থানীয় জাতের আমন ধান নয় উফসী বিআর-১১, বিনা-৭, বিআর-৪৯ ধানও নষ্ট হয়ে গেছে। তবুও কৃষক হাল ছাড়েন নি। যেসব কৃষক পরবর্তীতে চারা সংগ্রহ করতে পেরেছেন তারা পুনরায় আমন ধানের চারা জমিতে রোপন করেছেন। কিন্তু এই কাজ ও সহজ ছিল না। কয়েকজন কৃষকের কথা এখানে তুলে ধরা হচ্ছে:
কসবা-আটিয়া গ্রামের কৃষক ছালাম মিয়া বলেন, প্রথম বার চাষ করা ধান নষ্ট হওয়ার পর আমি চিন্তায় পড়ে যাই, পরের বছর আবাদ করার জন্য বীজ পাব কোথায়। এরপর আমার গ্রামের কয়েকজনের সাথে আলোচনা করে জানতে পারি এলেঙ্গা ধানের চারা বিক্রি হয়। আমি ২৪ ডিসিমাল জায়গার জন্য ২০০ নাজিরশাইল ধানের চারা ১ হাজার টাকায় এলেঙ্গা হাট থে (আরো পড়ুন )
ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ, হাইব্রিড বা ‘উচ্চ-ফলনশীল বীজ’, সার-বিষ ব্যবহার ও ডিপ টিউবওয়েল দিয়ে মাটির তলার পানি তোলা – সব মিলিয়ে পুরা প্যাকেজের নামই আধুনিক কৃষি। গত শতাব্দির ষাটের দশকে এ দেশে আধুনিক কৃষির প্রবর্তন করেছিলেন তৎকালিন পাকিস্তানের শাসক ফিল্ড মার্শাল আয়ুব খান। ঘটেছিল বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কমিউনিস্টদের বিপ্লবী ভূমিসংস্কার অর্থাৎ সামন্ততান্ত্রিক ও আধা-সামন্ততান্ত্রিক ভূমি বন্দোবস্ত উৎখাত না করে কৃষির সংস্কার। লাল বিপ্লবের বিপরীতে এই কৃষির নাম তাই ঘটা করে দেয়া হয়েছিল গ্রীন রেভ্যুলুশান বা সবুজ বিপ্লব।
‘আধুনিক’ নাম দেবার পেছনে উদ্দেশ্য ও প্রধান প্রপাগান্ডা ছিল আমাদের কৃষক ও কৃষি (আরো পড়ুন )
ফোর-সেল এ্যনালাইসিস: রিচনেস-ইভেননেস অব বাইওডাইভারসিটি (Four Cell Analysis: Richness and Evenness of biodiversity), যে কোন একটি এলাকায় প্রাণবৈচিত্র্যের অবস্থা নিরুপণের অংশগ্রহণমূলক গবেষণা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে গত ১৬ জুন, ২০১৯ তারিখে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার মামুদপুর ও তার আশেপাশের গ্রামের কয়েকজন কৃষককে নিয়ে আলোচনা করা হয়।
কৃষক সভার স্থান: রিদয়পুর বিদ্যাঘরের “বীজসম্পদ” কেন্দ্রের সামনে
অংশগ্রহকারী কৃষক :
১। কৃষক সুরাইয়া বেগম, গ্রাম বাবুপুর, ২। আলী হোসেন, গ্রাম বাবুপুর, ৩। ওসমান গনি, গ্রাম মুশুরিয়া ৪। আমেনা বেগম, গ্রাম মামুদপুর এবং ৫। রীনা বেগম, গ্রাম মামুদপুর
নবীরন বেগম ফাজিলহাটি থেকে এসেছেন, তিনি মূলত (আরো পড়ুন )
রোমেসা বেগম নয়াকৃষির একজন কৃষক। টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বাবুপুর গ্রামে তার বাড়ি। তিনি চৈত্র মাসে ময়নাগিরি ধানের জালা ফেলে থাকেন। এই ধানে মুড়ি ভাল হয়।
রোমেসা বেগম নিজে এই ধানের বীজ রেখেছেন। তিনি ধান শুধু ফসলের জন্য চাষ করেন না, ধানের বীছন বা ‘বেচন’ও করেন। বীছন বা জালাকে টাঙ্গাইলে ‘বেচন’ বলে। আমরা রোমেসার ভাষাই এখানে ব্যবহার করছি। ভাষার পার্থক্যের মধ্যে দিয়ে ভূগোল ও প্রাণের বৈচিত্রও ধরা পড়ে। স্থানীয় ভাষা একই সঙ্গে লোকায়ত জ্ঞানের আধার।
রোমেসার বেচন করাই প্রধান কাজ। তিনি মনে করেন, বেচন করার জন্য যে ধরনের উঁচু জমি বা টান জমি দরকার তা সব কৃষকের নাই। তাই সবাই বেচন করতে পারে না। বেচন না করতে পারলে কৃষকে (আরো পড়ুন )
বড়াইগ্রাম উপজেলার (নাটোর) এর রাজেন্দ্রপুর গ্রামের নিহার বানু একজন নয়াকৃষির কৃষক। তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আউশ ধান কালো বকরী চাষ করছেন। এই ধান খরা সহনশীল হিসাবে পরিচিত। যত খরা হোক না কেন ধানের গাদ মাটিতে মিশে গেলেও আবার হালকা হালকা একটু বৃষ্টি পেলে গাছ তাজা হয়ে যায়। তাই শুধু নিহার বানু নয়, তার গ্রাম এবং তার জানামতে আশে পাশের গ্রামে শতকরা ৫০-৬০% কৃষক এই ধান চাষ করে।
নিহার বানুর যখন বিয়ে হয়, স্বামীর অবস্থা তেমন ভাল ছিল না। তিনি কালো বকরী ধান চাষ করার জন্য তার বাবার কাছ থেকে ৫ কেজি বীজ এনে ১২ কাঠা জমিতে চাষ করেন। বাবার বাড়িও নাটোরের একই বিলে। এরপর থেকে তিনি এই ধান চাষ করে আসছেন। কোন সময় বাদ দেন না। এই ধানের বীজ কৃষকের ঘরে ঘরে আছে। এই ধান ভ (আরো পড়ুন )
বিদূষী খনা
গ্রামেগঞ্জে খনার বচন সকলের অত্যন্ত পরিচিত। এখনও কৃষির সাথে সম্পৃক্ত খনার বচন গ্রামে জনপ্রিয়। অভিজ্ঞ কৃষক ও গ্রামের গুরুজনেরা কথায় কথায় ব্যবহার করেন। অন্যদের জ্ঞানদান করেন। আসলে খনা তাঁর কালজয়ী বচনে কৃষিতত্ত্বজ্ঞান সমাজের সম্মুখে বেদবাণীর মতো উপস্থাপিত করেছেন। খনার বচনের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে আধুনিক যুগের কৃষিতত্ত্বও খনার বচনের চেয়ে ধিক অবদান রাখতে পারেনি।
খনা যে প্রাচীন বাংলাদেশের একজন বিদূষী খ্যাতনাম্নী জ্যোতিষী ছিলেন, সে সম্পর্কে সন্দেহের আর কোন অবকাশ নেই। খনা সম্পর্কে বাংলা ও উড়িয়া ভাষায় কিংবদন্তী আছে। গল্প দুটি প্রায় একরকম তবে মূল জায়গায় মত-পার্থক্য আছে। (আরো পড়ুন )
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ৫ জুন দশম জাতীয় সংসদে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন। এ বাজেটে অন্যসব খাতের মতো কৃষি খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৯ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৭.৬ শতাংশ। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এতে সন্তুষ্ট। বাজেটের পর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থমন্ত্রীর পাশের আসনে বেশ সন্তুষ্ট মনেই বসেছিলেন এবং বলেছেন তিনি যা চেয়েছেন তাই পেয়েছেন, যা স্বাস্থ্য ও শিক্ষামন্ত্রীরা পাননি।
আমরা যারা কৃষকের সঙ্গে কাজ করি তারা বাজেট বক্তৃতা বিস্তারিত পড়ে হতাশ হয়েছি, কারণ এ বাজেট আসলে কৃষকের জন্য নয়, বিজ্ঞানীদের জন্য। তাতে আপত্তি থাকার কথা নয়, কারণ কৃষিতে বিজ্ঞানীদের অংশগ্রহণ কৃষকের অনুকূলে হতে পারে। কিন্তু বাজেটে (আরো পড়ুন )
মাঘ মাস চলছে, এখন কৃষির ভরা মৌসুম। একদিকে কৃষকের ঘরে নতুন ধান, অন্যদিকে রবি ফসলে মাঠ রঙ্গীন হয়ে আছে। এই সময় সব ধরণের সবজি, মসলা, তেল ও ধানের ফসল মাঠটাকে নানা রঙ্গে ভরিয়ে তোলে। দেখতে সত্যিই সুন্দর, চোখ জুড়ে যায়। কৃষক আনন্দে থাকে, ঘরে নতুন ধানের চালের নানা পিঠা-গুড় দিয়ে আপ্যায়ন চলছে। শুধু গ্রামে নয়, শহরেও আজকাল পিঠার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। এই সব মিলে বাংলাদেশ আসলেই একটা সুন্দর ও সুজলা-সুফলা দেশ।
এই সবই এদেশের ক্ষুদ্র কৃষকদের অবদান। তারাই দেশের নানা স্থানে স্থানীয় বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে ফসল উৎপাদন করে চলেছেন দিনের পর দিন। তাদের কারণেই ভাতের ধান উৎপাদনের পাশাপাশি পিঠার ধান (যেমন মুক্তাহার, কালরাজ), মুড়ির ধান (ঘিগজ), খৈয়ের ধান (ঝিংগাপোড়া), চিড় (আরো পড়ুন )